Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিশালে দুশ্চিন্তায় কৃষক

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

আমন ধানের আশাব্যঞ্জক সাফল্যের পরে প্রায় সাড়ে ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে কৃষকরা। তবে শৈত্য প্রবাহ আর বিগত বর্ষায় স্বাভাবিকের তুলনায় কম বৃষ্টিপাতে সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। চলতি রবি মৌসুমে দেশে বোরো ধান থেকে প্রায় ২ কোটি টন চাল উৎপাদনের আশা করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে সারা দেশে বোরো আবাদে সার্বিক অগ্রগতি প্রায় ১৭ শতাংশ বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর-ডিএই’র সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রটির মতে, ইতোমধ্যে হাওর এলাকার প্রায় ৪৫শতাংশ জমিতে বোরো আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। তবে মূল হাওরের ৮০শতাংশ জমিতে বোরো আবাদ লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। উত্তরবঙ্গে বীজতলা তৈরী শেষ হলেও তীব্র শৈত্য প্রবাহে ‘কোল্ড ইনজুরী’র কবলে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। চলতি শীত মৌসুমে ইতোমধ্যে উত্তরবঙ্গের বিভিন্নস্থানে তাপমাত্রার পারদ ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসেও হ্রাস পেয়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে বরিশালে তাপমাত্রা সাড়ে ৬ ডিগ্রীতে হ্রাস পায়। আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘ মেয়াদী পূর্বাভাসে চলতি মাসেও দেশের বিভিন্নস্থানে একাধিকবার শৈত্য প্রবাহের কথা বলা হয়েছে।
বিগত খরিপ-১ মৌসুমে দেশে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে প্রায় ৫৯ লাখ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ সম্পন্ন হয়। চাল উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল ১ কোটি ৪১ লাখ টন। এদিকে বিগত কয়েকটি মৌসুমের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় চলতি রবি মৌসুমে দেশে ৪৮ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্য স্থির করেছে। যার মধ্যে হাইব্রিড সাড়ে ৮ লাখ হেক্টর। অতি স্পর্শকাতর এবং পরিপূর্ণ সার ও বালাই ব্যবস্থাপনা নির্ভর এ হাইব্রিড ধান থেকে হেক্টর প্রতি ফলন আশা করা হচ্ছে ৪ দশমিক ৭৫ টন হিসেবে ৪০ লাখ ৩৮ হাজার টন চাল।
এছাড়া উচ্চ ফলনশীল বা উফশী জাতের বোরো হেক্টর প্রতি ৩ দশমিক ৯২ টন হিসেবে ৩৯ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমি থেকে ১ কোটি ৫৫ লাখ ২৩ হাজার টন চাল ও সনাতন জাতের স্থানীয় বোরো হেক্টর প্রতি ১ দশমিক ৯৪ টন হিসেবে ৩২ হাজার হেক্টর জমি থেকে আরো ৬২ হাজার টন চাল প্রাপ্তির আশা করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এছাড়া চলতি রবি মৌসুমে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ দেখা না দিলে এবং গমের আবাদও লক্ষ্য অর্জিত হলে দেশে ৪ কোটি টন দানাদার খাদ্য ফসল উৎপাদন সম্ভব হতে পারে বলে মনে করছে ডিএই এবং কৃষি মন্ত্রণালয়।
তবে রবি মৌসুমে বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর তাগিদ দিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবিদরা। এ লক্ষ্যে মৌসুমের শুরুতেই সেচের পানির সবগুলো বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ছাড়াও সেচকাজে বিদ্যুৎ ও ডিজেল-এর সরবরাহ নিশ্চিত করারও কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছে মহলটি। বিগত বর্ষা মৌসুমে যেহেতু বৃষ্টিপাতের পরিমান কম ছিল তাই সেচের পানি সব বিকল্প উৎসগুলো আগেভাগেই চিহ্নিত করে সময়মত তা কাজে লাগাতে সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে। উপরন্তু উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পায় সে লক্ষ্যেও সরকারি নজরদারীসহ সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান-চাল ক্রয়ের তাগিদ দেয়া হয়েছে। এ উপমহাদেশে বাংলাদেশেই সেচ ব্যয় এখনো সবচেয়ে বেশী বলে ধানের উৎপাদন ব্যয়ও সাড়ে ৬শ টাকার ওপরে। কিন্তু ধানের দর যদি ৭শ’ টাকার ওপরে না হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের মতে, বাংলাদেশে ধানের মোট উৎপাদন ব্যয়ের ২৮শতাংশ সেচ ব্যয়। অথচ থাইল্যন্ডে তা ৮শতাংশ। আর ভারতের মরুপ্রবন পাঞ্জাবে ১৩শতাংশ-এর বেশি নয়। উপরন্তু গত দুই দশকে দফায় দফায় ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে দেশে সেচ ব্যয় আরো বেড়েছে বলে দাবি মাঠ পর্যায়ের কৃষিবিদদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ