Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিদায় মন্ত্রীদের বিদায়ী সুর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম | আপডেট : ১২:১০ এএম, ৮ জানুয়ারি, ২০১৯

একাদশ সংসদের মন্ত্রিসভা গঠিত হওয়ায় বিদায় নিতে হলো দশম সংসদের ৩৬ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে। একদিকে বিদায়ী মন্ত্রীদের বিদায় অনুষ্ঠান আর অন্যদিকে নতুন দায়িত্ব পাওয়া মন্ত্রীদের বরণের প্রস্তুতি। এ নিয়ে ব্যস্ত সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
যারা নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি তাদের বেশির ভাগই শেষ কর্মদিবস গতকাল সোমবার (৭ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেন। যদিও অনেকে এদিন নিজ দফতরে আসেননি। শেষ দিন কর্মস্থলে আসা মন্ত্রীরা নবগঠিত মন্ত্রিসভাকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি নতুনরা দায়িত্ব পালনে সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
বিদায়বেলায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান এবং খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। শেষ কার্যদিবসে নিজেদের দফতরে বিদায়ী মন্ত্রীরা অনেকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফুলেল শুভেচ্ছায় বিদায় জানিয়েছেন তাদের।
বিদায় অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ বলেন, এই সংসার আসা-যাওয়ার রঙ্গমঞ্চ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আমরা একটি পরিবারের মতো ছিলাম। নতুনদের জায়গা করে দিতে হবে। নতুনদের নিয়ে যে মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়েছে সেটা চমৎকার। আমরা তো এমপি হিসেবে সংসদে থাকবোই। এই সরকারের সফলতা কামনা করি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী উনার পছন্দমত যোগ্য, সৎ ও আদর্শবান ব্যক্তিদের নিয়েই কেবিনেট করেন। আমার মনে হয় তিনি সেজন্যই করেছেন ও ভালোই করেছেন।
বিদায়ী শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তার শেষ কর্মদিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দফতর, অধিদফতর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমার যে কৃতিত্ব তা আপনাদের সবার। আমি যা নই, তার চেয়ে বেশি দায়িত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কৃতিত্বের অধিকারী করেছেন। তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন বলেই আমার এই কৃতিত্ব। তবে এই কৃতিত্ব সবার। আমি আমার দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় কর্মকর্তাদের অবদান রাখার আহ্বান জানান তিনি।
নাহিদ বলেন, নতুন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি একজন অভিজ্ঞ বিচক্ষণ মানুষ। শিক্ষা পরিবারের যে অগ্রগতি তা তিনি এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আপনারা সবাই তাকে সহযোগিতা করবেন। গত ১০ বছরের সফলতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করবেন।
বিদায়ী খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের স্বাগত জানাই। নতুনদের জন্য জায়গা করে দিতে হয়, এটাই নিয়ম। নতুন যে মন্ত্রী দায়িত্বে আসছেন, তিনি তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন ও পুরাতনদের নিয়ে সময়োপযোগী মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কামরুল ইসলাম বলেন, বিগত পাঁচ বছর আমাকে যেভাবে সহায়তা করেছেন, নতুন মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারকেও আপনারা সেভাবে সহযোগিতা করবেন উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে।
বেলা বাড়লে সচিবালয়ে ঢোকেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান। ‘বিদায় নয়, মন্ত্রণালয়ে আমার আজ শেষ কার্যদিবস’ বলে মন্তব্য করেন বিদায়ী এই নৌপরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা খুব বাস্তবমুখী। তার এই অগ্রযাত্রায় সবাই সাহসী ভূমিকা পালন করবেন বলে আশা প্রকাশ করছি। বিদায়ী এই মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নতুনদের কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। কর্ম উদ্দীপনা নিয়ে আমাদের কাজ করে যেতে হবে।
বিদায়ী সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন মন্ত্রণালয়ের করিডোরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় তিনি ছিলেন বেশ বিমর্ষ। মেনন বলেন, ‘১৪ দলের সমন্বয়কের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে, কেন রাখা হলো না।’ মন্ত্রিসভার আকার শিগগিরই বড় করা হলে ১৪ দলের শরিকদের রাখা হবে নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মেনন বলেন, সেটা তো অপমান করা। তিনি সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিকেলের আগেই মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে যান।
অন্যদিকে বিদয়ী কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু শেষদিনে সচিবালয়ে আসেননি। বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাদের বিদায় সম্বর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি ছিল বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মন্ত্রিসভা

১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ