Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশে সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল : নিউইয়র্ক টাইমস

প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত নির্মমতার জন্য দায়ীদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এখন সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। সোমবার প্রকাশিত পত্রিকাটির সম্পাদকীয়তে এ মন্তব্য করা হয়েছে। সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে বিরোধীদলের বর্জন ও সহিংসতার মধ্যে শেখ হাসিনা এবং তার দল নির্বাচনে জয়ী হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত নির্মমতার জন্য দায়ীদের বিচারে ২০১০ সালে যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয় তা সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। এতে টার্গেট করা হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের। সরকারের এই কর্মকাণ্ড এবং এর পাশাপাশি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন এবং গুমের ঘটনায় আইনের শাসনের ওপর বিশ্বাসে ক্ষয় ধরেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ইসলামপন্থী জঙ্গিরা ২০১৩ সাল থেকে ২০ জনের বেশি লোককে হত্যা করেছে, যাদের অনেককেই কুপিয়ে মারা হয়েছে। প্রথম যারা নিহত হন, তারা ছিলেন ইসলামী মৌলবাদের সমালোচক ব্লগার। এরপর দুজন বিদেশিকে, যাদের একজন ইতালীয় সাহায্য কর্মী এবং একজন জাপানি কৃষিবিদ ছিলেন, তাদের হত্যা করা হয় গত বছর। গত মাসে শুধু ৯ দিনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে ৫ জনকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার এবং তার ঘোর বিরোধী রাজনৈতিকদল বিএনপি ও জামায়াতকে এজন্য অংশত দায়ী করা হচ্ছে।
এদিকে, শেখ হাসিনার সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের ওপর দমনাভিযান চালায়। গত মাসে শেখ হাসিনা নাস্তিক ব্লগারদের নিন্দা জানিয়ে বলেন, আমাদের নবী (সা:) অথবা অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে কেউ কিছু লিখলে তা বরদাশত করা হবে না।
এ সবকিছুই জঙ্গিবাদকে উস্কে দিচ্ছে। সহিংসতা প্রতিরোধ নিয়ে কর্মরত একটি স্বাধীন সংগঠন দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ হুঁশিয়ার করে বলেছে, সরকারের বিভিন্ন কঠোর ব্যবস্থা মূলত সহিংস ও জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকেই লাভবান করছে। এসব গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে গত ৬ এপ্রিল আইনের ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদ হত্যার দায় স্বীকারকারী আল-কায়েদাসংশ্লিষ্ট আনসার আল-ইসলাম। গত ৩০ এপ্রিল নিখিল চন্দ্র জোয়ার্দার নামের এক হিন্দু দর্জিকে হত্যার দায়দায়িত্ব স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট। তার পরও শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেটের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিু বলেছেন, মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত এলজিবিটি কর্মী জুলহাজ মান্নানকে তার এক বন্ধুসহ হত্যা করা হয় গত ২৫ এপ্রিল। এতে বাংলাদেশের মানুষের সহনশীলতা, শান্তি ও বহুমাত্রিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। কেরি ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সবরকমের সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনার সরকারের উচিত এই সহায়তা গ্রহণ করা। মুক্তি বা অব্যাহতির পরিবেশ তৈরি করে খুব কম সংখ্যক হামলাকারীকেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। হামলার লক্ষ্যে পরিণত হতে পারেন এবং গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনে বিশ্বাসকারীদের সরকারের রক্ষা করা উচিত। এটা করতে ব্যর্থ হলে দেশে আইনের শাসনের এক বিরাট শূণ্যতা সৃষ্টি হবে। নিউইয়র্ক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ