লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা : লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে আনন্দ বেকারিতে ১৩ বছরের এক শিশু শ্রমিক আলাউদ্দিনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ওই বেকারির মালিক ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে।
নিহত শিশু শ্রমিক আলাউদ্দিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় বেকারির মালিক আল আমিন ও নাছির উদ্দিনসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ, নিহতের বাবা আবুল কালাম ও ভাই সজিব হোসেন জানায়, সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের মাগুরী গ্রামের হত দরিদ্র আবুল কালামের ছেলে আলাউদ্দিন। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আলাউদ্দিন ছিল সবার ছোট। অভাব অনটনের সংসার ছিল আবুল কালামের। সংসার চালাতে গত ছয় মাস আগে চন্দ্রগঞ্জের রামকৃঞ্চপুর এলাকা আনন্দ বেকারিতে তিন হাজার টাকা বেতনে কাজ নেয় আলাউদ্দিন। এরপর থেকে ওই কারখানায় কাজ করছিল সে। তার সঙ্গে ভোলা জেলার চরফ্যাশনের ইব্রাহিম হোসেন প্রকাশ শাহজাহান, শামীম ও নিজাম উদ্দিনসহ আরো তিন শ্রমিক ওই বেকারিতে কাজ করত। অতিরিক্ত কাজ করার জন্য বেকারির মালিক সব সময় আলাউদ্দিনকে চাপ দিত।
অতিরিক্ত কাজ না করলে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন চালানো হতো বলে অভিযোগ করেন নিহতের পরিবার। বেকারির ওই তিন শ্রমিকের সঙ্গে আলাউদ্দিনের কাজ নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
এ নিয়ে রোববার রাতে ওই তিন শ্রমিকের সঙ্গে আলাউদ্দিনের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে আলাউদ্দিনকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গলায় রশি লাগিয়ে চাদের রডের সঙ্গে আটকিয়ে রেখে বেকারির বাহিরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায় ওই তিন শ্রমিক। আজ সোমবার সকালে বেকারি বন্ধ থাকায় স্থানীয়দের সন্দেহ হয়।
বেকারির ভেতরে আলাউদ্দিনের লাশের অর্ধেক মাটি ও চাদের রডের সঙ্গে রশি দিয়ে আটকানো দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এদিকে চন্দ্রগঞ্জ এলাকা থেকে বেকারির মালিক নাছির উদ্দিন ও আল আমিনসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত নাছির উদ্দিন সদর উপজেলার চরচামিতা গ্রামের মফিজুর রহমানের ছেলে ওই একই উপজেলার মজুপুর গ্রামের মোশারেফ হোসেনের ছেলে আল আমিন।
চন্দ্রগঞ্জ থানার এসআই মো. কাউছার চৌধুরীর জানান, নিহত শিশু শ্রমিক আলাউদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে আলাউদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।