Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস

দুপচাঁচিয়া পশ্চিম আলোহালী দাখিল মাদরাসা

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে মোঃ গোলাম ফারুক | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের পশ্চিম আলোহালী ইসলামিয়া আদর্শ বহুমুখী দাখিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ২০ বছরেও এমপিও ভুক্ত হয়নি সেই সাথে উন্নয়নের কোন ছোয়াও লাগেনি। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবে জরাজীর্ণ ভবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত ক্লাস করছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩ কিমি দক্ষিণে নির্ভিত পল্লী এলাকা পশ্চিম আলোহালী গ্রামে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত দুপচাঁচিয়া উপজেলার ধর্মীয় শিক্ষার বিদ্যাপীঠ আলোহালী ইসলামিয়া আদর্শ বহুমুখী দাখিল মাদরাসা। মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মরহুম আব্দুর রশিদসহ ধর্মপ্রিয় কিছু ব্যক্তির আন্তরিক প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালে ১ একর ১০ শতাংশ জমির উপর মাদরাসাটি স্থাপিত হয়। ২০০১ সালে মাদরাসাটি মঞ্জুরি হয়। এরপর থেকে শুরু হয় মাদরাসাটি খুড়িয়ে খুড়িয়ে পথচলা। মাদরাসাটি বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০০ জন। কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ১৪ জনসহ কর্মরত কর্মচারীর সংখ্যা ২ জন। সরকারি অনুদান ছাড়াই কেবল মাত্র ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবক আর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তুরিক প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে এই মাদরাসাটি প্রতি বছরই অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফলাফলের বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।

গত ৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সরেজমিনে মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদরের এই মাদরাসাটির অবস্থা করুন। পুরাতন টিন সেডের নির্মিত ১২ কক্ষ বিশিষ্ট ভবন জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। টিন সিডের এই ভবনের দেওয়ালে বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। অনেক শ্রেণীকক্ষে দরজা জানালা নেই। অনেক শ্রেণীকক্ষই উন্মক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ভবনের মেঝে কাচা স্যাঁত সেঁতে অবস্থা বিরাজ করছে। একটি মাত্র টয়লেট থাকলেও তা প্রায় ব্যবহারের অনুপযোগী। ফলে এক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিড়ম্বনার শেষ নেই। এছাড়াও মাদরাসাটি প্রবেশ পথ একমাত্র রাস্তার অবস্থাও করুন। মাদরাসাটির বর্তমান পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সাঈদ চিশ্্্্তি ‘দৈনিক ইনকিলাব’ কে জানান, এলাকায় ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে গ্রামের শিক্ষানুরাগী ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় কিছু ধর্মপ্রাণ ব্যক্তির আন্তরিক সহযোগীতায় মাদরাসাটি গড়ে উঠে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ২০ বছরেও এ মাদরাসায় উন্নয়নে কোনও ছোঁয়া লাগেনি, পাওয়া যায়নি সরকারী কোন অনুদান। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা ঝুঁকি নিয়েই জরাজীর্ণ ভবনে ক্লাস করছে। দাখিল মাদরাসায় সকল পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক। আক্ষেপ করে তিনি আরো বলেন, উপজেলার সদরের মাদরাসাটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলছে। অথচ, মাদরাসাটি উন্নয়নে সরকারের কোন দৃষ্টি নেই। মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল কাদের জানান, মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত করা সহ মাদরাসায় একটি দ্বিতল ভবন নির্মানের জন্য এলাকার সংসদ সদস্য সহ বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ ও আবেদন করেও কোন সুফল পাননি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় ধর্না ধরে বার বার ব্যর্থ হয়েছেন। জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনটি সংস্কারের সরকারি কোন অনুদান আসেনি। মাদরাসার নিজস্ব অর্থায়নে ১২ কক্ষ বিশিষ্ট ভবন অর্থের অভাবে তা সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। মাদরাসায় টয়লেট সহ টিউবওয়েলেরও অভাব। নেই সীমানা প্রাচীর। ফলে সন্ধ্যা হলেই গ্রামের এই মাদরাসাটি ভুতরে ঘরের রূপান্তরিত হয়। তিনি বলেন, জরুরী ভিত্তিতে শ্রেণীকক্ষ সংস্কার করা প্রয়োজন। সেই সাথে একটি হলরুম সহ মেয়েদের নামাজ ঘর সীমানা প্রাচীর জরুরী প্রয়োজন। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এ লক্ষ্যে স্কুল কলেজ সহ মাদরাসার শিক্ষার মান উন্নয়ন সহ উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। উপজেলা সদরের অবহেলিত এই মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত সহ সংস্কার ও উন্নয়নে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহন না করলে, এলাকায় সরকারি গৃহিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন্ ব্যাহত হবে বলে এলাকার শিক্ষানুরাগী ও সচেতন মহল অভিমত ব্যক্ত করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ