বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী শামা ওবায়েদ ইসলাম জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন। তবে তিনি সেখানে ঠিকমতো প্রচারণা ও পোস্টার লাগাতে পারছেননা বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার আসনে ধানের শীষের পোস্টার লাগানোর পর পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা তা ছিঁড়ে ফেলছেন। এমনকি এক্ষেত্রে পুলিশ নিজেই সহযোগিতা করছে। তারাও পোস্টার ছিঁড়ছে। ইতিমধ্যে দুই থানার ওসি ভোটের আগেই স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছেন। এদিকে নগরকান্দা ও সালথা থানার ওসির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত শনিবার নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে চিঠি দিয়েছেন শামা ওবায়েদ। তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় ধানের শীষের পোস্টার লাগাতে পারছেন না এবং পুলিশি বাধার কারণে গণসংযোগ করতে পারছে না। কোথাও কোথাও পোস্টার লাগানো হলে সেগুলো পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিঁড়ে ফেলছে। তাকে প্রচারণা না চালানোর জন্য হুমকি দেয়া হচ্ছে। ফলে তিনি ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ করতে পারছেন না। তবে তার নির্বাচনী এলাকায় সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট হলে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষ মার্কা নিয়ে বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
গত শনিবার নগরকান্দা ও সালথা থানার ওসিকে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে তিনি বলেছেন, দুই থানার কিছু কর্মকর্তা বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে হয়রানি করছে। তারা বিনা কারণে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পর পেন্ডিং মামলা চালান দিচ্ছে। চিঠিতে তিনি নগরকান্দা থানার ওসি (তদন্ত) মিরাজ হোসেন, এসআই মো: কবির হোসেন, এ এএসআই আরিফ হোসেন, এসআই মো: সানোয়ার হোসেন, এ এসআই আবু সালেহ, কনস্টেবল মো: হুমায়ুন কবিররের নাম উল্লেখ করেন। চিঠিতে শামা ওবায়েদ বলেন, উক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে বিনা কারণে তল্লাশি চালায় এবং ধানের শীষের সমর্থকদের হুমকি দিয়ে আসছে। যারা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করবে জেলে পাঠানো হবে। এ সকল পুলিশ কর্মকর্তাদের নগরকান্দা ও সালথা থানায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় ফরিদপুর-২ আসনে সুষ্ঠু নির্বাচনের সার্থে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি করা প্রয়োজন।
বিএনপির এই প্রার্থী জানান, নগরকান্দা থানার ওসি মিজানুর রহমান বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হয়রানি করছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে পরামর্শ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। যাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচনের মাঠে থাকতে না পারে। এমনকি ধানের শীষের পক্ষে কেউ কাজ করলে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর জন্য হুমকি দিচ্ছেন ওসি। এলক্ষ্যে বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশির নামে তান্ডব চালাচ্ছে। তিনি সাধারণ ভোটারদেরকে নৌকার পক্ষে কাজ করলে কোনো সমস্যা হবেনা মর্মে আশ্বস্ত করছেন। সুতরাং এই ওসিকে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাকে বদলির জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছেন তিনি।
সোমবার ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথার মিনেরগ্রাম, জুঙ্গুরদি বাসস্ট্যান্ড, লস্করদিয়া, মাঝিকান্দি এলাকায় সাধারণ মানুষ আলাপকালে জানান, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ হলে ধানের শীষের সাথে নৌকা মার্কার প্রার্থীর কঠিন প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে। কিন্তু অনেক সাধারণ মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে চাননা। তারা খুবই সাবধানে কথাবার্তা বলছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নীরব থাকার চেষ্টা করেন কোনো ঝামেলা এড়ানোর জন্য। এসব জায়গার বেশিরভাগ এলাকায় ধানের শীষের পোস্টার খুব একটা চোখে পড়েনি। তবে নৌকার পোস্টার উল্লেখ করার মতো। নগরকান্দা ও সালথা থানার ওসির বিরুদ্ধে শামা ওবায়েদের অভিযোগ- পুলিশ নিজেরাই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছেন এবং বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে এলাকায় না থাকার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। ফলে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় থাকতে পারছেন না। তবে দুই থানার ওসির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।