Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউএনও লাঞ্ছিত, মাঠ প্রশাসনে ক্ষোভ

প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : পরশুরামের উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লাঞ্ছিত ও আহত করার ঘটনায় সারাদেশের মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি জেলা প্রশাসনে বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের ব্যানারে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা বৈঠক করে ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকে ইউএনও নাজেহালের ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি ও বিচার দাবি করা হয়। এতে বলা হয়, সন্ত্রাসীরা কোন দলের সম্পদ হতে পারে না। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নাজেহাল পুরো প্রশাসনের ওপরই আঘাত। এটা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না।
জানা গেছে, গতকাল ছুটির দিনে বিভিন্ন জেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থাকায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ব্যস্ত ছিলেন। তা সত্ত্বেও মাঠ প্রশাসনের সবার আলোচনায় ছিল পরশুরামের ইউএনওকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি। একে অন্যের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন তারা। কয়েকজন জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপর আঘাতকারীদের কোন দল নেই। ওরা সন্ত্রাসী। সরকারের অর্জনগুলো ওরা এ ধরনের কর্মকা-ে নস্যাৎ করতে চায়। এরা দলের জন্য বোঝা। আমরা এসব হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। কয়েকটি জেলার মাঠ প্রশাসনে যোগাযোগ করে জানা যায়, সহকর্মীর লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়। তাদের বক্তব্য হচ্ছে-প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নাজেহাল অবশ্যই গর্হিত কাজ। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মনোবল দুর্বল করে দেয়ার চেষ্টা হিসেবে এমনটা হয়ে থাকতে পারে বলে তাদের আশংকা।
এদিকে ইউএনও নাজেহালের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন ফেনীর ডিসি মো. আমিন উল আহসান। প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ (গত শুক্রবার) সকাল নয়টা ৫০ মিনিটে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শাজাহান খানের পরশুরাম উপজেলাধীন বিলোনিয়া স্থলবন্দর পরিদর্শন কর্মসূচির পূর্ব মুহূর্তে পরশুরামের উপজেলা নির্বাহী অফিসার এইচএম রকিব হায়দারের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার মজুমদার প্রকাশ তপন মজুমদার দুর্ব্যবহার করেন। মন্ত্রীর আগমন সময় আসন্ন হওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তপন মজুমদারকে পাশ কাটিয়ে দ্রুত অনুষ্ঠানস্থলে যান। তখন তপনের নির্দেশে কিছু ব্যক্তি তাকে (ইউএনও) দেশীয় অস্ত্রসহ ঘেরাও করে এবং গালিগালাজ করতে থাকে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তখন নিরাপত্তার জন্য গাড়িতে গিয়ে বসেন। তখন তপন মজুমদার কিছু সন্ত্রাসীসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে গাড়ি থেকে নামিয়ে জামার কলার টেনে ধরে এবং কিলঘুষি মেরে মারাত্মক আহত করে। অজ্ঞান অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দ্রুত পশুররাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ডাক্তাররা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে রেফার করলে তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে পরশুরাম থানায় আইন-শৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন ২০০২-এর ৪/৫ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। এরই মধ্যে তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ