Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

গণতন্ত্রের বাহন নির্বাচন পরিণত হচ্ছে প্রহসনে

সাংবাদিকদের নজরুল ইসলাম খান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

গণতন্ত্রের বাহন হচ্ছে নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকেই প্রহসনে পরিণত করা হচ্ছে। একদিকে পরিকল্পিতভাবে আদালত কর্তৃক প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করা হচ্ছে, অন্যদিকে বৈধ প্রার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর অত্যাচার নির্যাতন করে ভোটের মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার প্রচেষ্ঠা চালানো হচ্ছে বলে আবারো অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি

গতকাল শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আদালত কর্তৃক সাময়িক স্থগিত হওয়া বিএনপির প্রার্থীদের আসনে নির্বাচন স্থগিত অথবা প্রার্থিতা পরিবর্তনের সুযোগ চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এসময় তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রার্থী নেই বলেও সাফ জানিয়ে দেন। অভিযুক্ত প্রার্থীদের জামায়াত মনোনীত করেনি, বিএনপি মনোনীত করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষে নির্বাচন করছেন তারা। তাই তাদের জামায়াতের প্রার্থী বলার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালি, বিজনকান্তি সরকার, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া জামায়াত নেতাদের পদপদবি তাদের দলীয় ওয়েবসাইটে উল্লেখ আছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন বলেন, ওয়েবসাইটে পদ-পদবি থাকুক। কোনো ওয়েবসাইটে নাম কিভাবে আছে সেটা পরের ব্যাপার। আমরা আইনের মাধ্যমে দিতে পারি কিনা সেটা হলো বিষয়। জামায়াত কোনো নিবন্ধিত দল নয়। কারা কারা জামায়াত করে সেই তালিকাও আমাদের কাছে নেই। আমরা যাদের মনোনয়ন দিয়েছি, তারা আমাদের দলের প্রতীক ধানের শীষ পেয়েছে। এটা যদি অবৈধ হতো তাহলে নির্বাচন কমিশন আগেই বলতো- তাদের প্রার্থিতা অবৈধ। তাদের যদি প্রতীক দেয়া বে-আইনি হত, যখন প্রতীক বরাদ্দ করা হয় তখন নির্বাচন কমিশন কেন প্রতীক বরাদ্দ করলো। আওয়ামী লীগ সব সময় বলে নির্বাচন কমিশন যা করে তাই আমরা মেনে নিব, বাধা সৃষ্টি করব না। এখন কেন আওয়ামী লীগ ইসির কাজে পদে পদে বাধা সৃষ্টি করছে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আদালত ১২/১৪ জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে। এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব আসনের নির্বাচন স্থগিত রেখে আবার নির্বাচনের দাবি করছি। অথবা এসব আসনে আমাদের প্রার্থী পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া হোক। নির্বাচন কমিশন প্রার্থিতা বৈধতা দেয়ার কারণেই তাদের আমরা মনোনীত করেছি। কমিশন যদি সেই সময় অবৈধ ঘোষণা করতো আমরা অন্য প্রার্থী দিতাম। সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি, ধড়পাকড়, হামলা, মামলা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, একদিকে পরিকল্পিতভাবে আদালত কর্তৃক প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করা হচ্ছে, অন্যদিকে বৈধ প্রার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বরিশাল-৪ আসনের বিএনপির প্রার্থী শিরিন আক্তারকে গতকাল মারধর করে পা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। বরিশাল হাসপাতলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। সেখানে তাকে দেখতে যাওয়া ৮/১০ নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে। এছাড়া নরসিংদীর মনোহরদির আসনের বিএনপি প্রার্থী সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা করে। এতে অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশি উপস্থিতে সেখানে হামলা হলেও হামলাকারীদের গ্রেফতার না করে বরং বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে। নরসিংদীর-৩ আসনের মনজুর এলাহীর মিছিলেও আওয়ামী লীগ হামলা করেছে।

তিনি বলেন, বিএনপির নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী লুনা নির্বাচন করার আগে চাকরি ছেড়ে দিলেও তার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু একই নির্বাচনি এলাকায় একজন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পদত্যাগ না করার পরও মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা-১৭ এর গুলশান এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী অভিনেতা ফারুক (আকবর হোসেন পাঠান) ঋণখেলাপি হলেও তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ