Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মুরাদনগরে ভোটের মাঠে ‘ভৌতিক’ মামলার খড়গ

কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিদিনই সংবাদের শিরোনাম হচ্ছে কুমিল্লার আলোচিত আসন মুরাদনগর। কুমিল্লা-৩ সংসদীয় এ আসনে ভোটের মাঠে চলছে প্রতিহিংসার রাজনীতি। আর তা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে থানা প্রশাসন ও আ.লীগ দলীয় লোকজনের দ্বারা। মুরাদনগরে ধানের শীষের প্রচারণায় যখন বিএনপি নেতাকর্মী সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ তখনই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ‘ভৌতিক’ মামলার খড়গ।
মুরাদনগর থানা ও একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী বাঙ্গরাবাজার থানায় ইতোমধ্যে চারটি মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী আসামি হয়েছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীদের। এ আসনের বিএনপি প্রার্থী কে এম মুজিবুল হক পুলিশের এ ধরনের আচরণকে অতি উৎসাহী এবং আ.লীগ প্রার্থী ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি মুরাদনগরে প্রতিহিংসার রাজনীতি বর্জন করে সুস্থধারার রাজনীতি চর্চার আহŸান জানিয়েছে বলেছেন ‘ভৌতিক’ মামলা দায়ের বন্ধ করতে হবে। মামলা দায়ের ও ধরপাকড়ের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে তোফায়েল শিকদার নামে প্রায় ৬৫ বছর বয়সী এক বিএনপি নেতাকে গ্রেফতারের ঘটনা। যা গোটা মুরাদনগরে পুলিশের ভ‚মিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। বয়োবৃদ্ধ এই লোকটি একসময় সামরিক বাহিনীর সদস্য ও পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যান ছিলেন। এলাকায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। আবার তার প্রতি সব শ্রেণিপেশার মানুষের শ্রদ্ধাবোধও রয়েছে। এই লোকটিকে গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে তার বাড়ি থেকে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকের লোকজন তুলে নিয়ে যায়। রাতে কোনো খবর না মিললেও ২০ ডিসেম্বর সকালে জানা যায়, তিনি থানায় আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হয় বিস্ফোরক আইনে। পুলিশের অভিযোগ, তোফায়েল শিকদারের কাছে ১০টি ককটেল পাওয়া গেছে। ওইদিন আদালতে নেয়া হলে জামিন নামঞ্জুর করে বয়োবৃদ্ধ তোফায়েল শিকদারকে পাঠানো হয় কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে। তোফায়েল শিকদারের মেয়ে সাইয়্যেদা বিনতে আলম বললেন, রাজনীতিতে পক্ষ-প্রতিপক্ষ, পছন্দ-অপছন্দ থাকবেই। কিন্তু প্রতিপক্ষ হলেই মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগের মামলায় আসামি হতে হবে বা প্রতিপক্ষের হামলা-মামলা, নির্যাতনের শিকার হবে- এটা কেমন রাজনীতি। মুরাদনগরে গত পাঁচ বছর ধরে যে প্রতিহিংসা ও মিথ্যাচারের রাজনীতির ধারা চালু হয়েছে তা নতুন প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এটা বন্ধ হওয়া উচিত।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোল্লা মুজিবুল হক বলেন, ভোটের মাঠের পরিবেশ নষ্ট করে দিচ্ছে আ.লীগের প্রার্থী ও তার লোকজন। নির্বাচনী প্রচারণায় যেখানে সবার সমান সুযোগ থাকার কথা, সেখানে আ.লীগ প্রার্থীর হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানা ও বাঙ্গরা থানার পুলিশও যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আ.লীগ প্রার্থীকে জয়ী করতে মুরাদনগরে পুলিশ যা করছে তা অমানবিকই শুধু নয়, রাজনীতির সকল শিষ্টাচার পরিপন্থী। এখানকার বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ভয় ও সাধারণ ভোটারের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই এসব করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ