রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
লক্ষীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনে আ.লীগের নেতৃত্বাধীন মহোজোটের শরিক যুক্তফ্রন্ট আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ঐক্যফ্রন্টের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী মর্যাদার লড়াইয়ে নেমেছেন। এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রথম সারির নেতা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আ স ম আবদুর রব ধানের শীষ প্রতীক আর যুক্তফ্রন্ট নেতা বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান নৌকা প্রতীকে। দুই ফ্রন্টের দুই নেতা দুই ধারায় লড়ছেন এ আসনে। ভিআইপি দুই প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় এমন চমক সবার চোখে চোখে। কে হবেন উপক‚লীয় অঞ্চল মেঘনার তীরের মানুষের অভিভাবক। ভোটের মাঠের হিসাব-নিকাশ ভিন্নরূপ নিতে পারে এমনটাই ধারণা করছে সুশীল সমাজ ও সচেতন নাগরিকরা। এদিকে কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে দুই দলের একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা না দিয়ে নিজ নিজ দলের চ‚ড়ান্ত প্রার্থীর পক্ষে ভোটের মাঠে রয়েছেন। তৃণমূলে বড় দুই দলের মধ্যে নানা গ্রুপিং-বিচ্ছেদ ভুলে এখন প্রকাশ্যে মাঠে তারা। তাই হেভিওয়েট এ দুই প্রার্থীকে নিয়ে চলছে নতুন হিসাব-নিকাশ। কে হবেন নদীভাঙ্গা এলাকার কান্ডারী। অন্য দিকে, এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা শরিফুল ইসলাম হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। মার্কা পাওয়ার পর থেকেই ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মাওলানা শরিফুল ইসলামের পক্ষে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে গোটা এলাকায় মোটরসাইকেল বহরসহ প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ আসনে তাদের ভোটব্যাংকও রয়েছে।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ আসনে যাছাই বাছাইয়ের পর আটজন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন। তারা হলেন- জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল জেএসডির সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী আ স ম আবদুর রব ও তার সহধর্মিণী তানিয়া রব, মহাজোটের শরিকদল বিকল্পধারা বাংলাদেশ মহাসচিব মেজর অব. আবদুল মান্নান, এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও চরকাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্যাহ ইউপি চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ না করায় প্রার্থিতা বাতিল হলে সেই দল থেকে রয়েছে মো. শরিফুল ইসলাম হাতপাখার প্রতীক নিয়ে, বিজেপির আবদুর রাজ্জাক, বাসদের মিলন মন্ডল, আ.লীগের বর্তমান এমপি আবদুল্যা আল মামুন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্যাহ আল মামুনের স্ত্রী মাহমুদা বেগমকেও রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বৈধ প্রার্থী ঘোষণা করেন। পরে দলের নির্দেশে বর্তমান এমপি আবদুল্লাহ আল মামুন তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এ আসনে আটজন প্রার্থী থাকলেও মূলত তিন প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণায় সরব মাঠে-ময়দানে। পোস্টার-মাইকিং-গণসংযোগ ও পথসভায় সরগরম নির্বাচনী মাঠ। প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার পর প্রার্থীরা গণসংযোগে নেমে পড়েন। নৌকা প্রতীক নিয়ে মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আ স ম আবদুর রব ও হাতপাখা প্রতীক নিয়ে শরিফুল ইসলাম মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। অন্যান্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা তেমন চোখে পড়ার মতো নয়। এ আসনে বিএনপির হেভিয়েট প্রার্থী সাবেক এমপি আশ্রাফ উদ্দিন নিজান মনোনয়ন দাখিল না করায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। আসনটি বিএনপির জন্য একটি সম্ভাবনাময় আসন। এ আসনে বেশ কয়েকবার বিএনপি থেকে আশ্রাফ উদ্দিন নিজান বিজয়ী হয়েছেন। অন্য দিকে, জেএসডির সাংগঠনিক কাঠামো হতাশাজনক দেখা গেলেও আ স ম আবদুর রবের ব্যক্তি ইমেজ কাজে লাগিয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে দলটির। আবার বিএনপি জামায়াতের ভোট যোগ হলে তিনিই হয়ে উঠবেন নৌকার মূল প্রতিদ্ব›দ্বী বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল।
ক্ষমতাসীন আ.লীগের কর্মী-সমর্থকরা আছেন আনন্দ-উৎফুল্ল। কারণ এবার এ আসনে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান মহাজোট থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে থাকায় ধানের শীষের মূল প্রতিদ্ব›দ্বী তিনিই।
অন্যদিকে আ স ম আবদুর রবের পক্ষে একাট্টা হয়েছে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তাদের আসা সুষ্ঠু ভোট হলে তাদের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।
এ আসনে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ১০ হাজার ৮৪২ জন, পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৭ হাজার ৫৭৭ জন, মহিলা ভোটার এক লাখ ৫৩ হাজার ২৬৫ জন। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে চান ভোটাররা, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষমুক্ত পরিবেশে তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চান। সর্বোপরি কে হচ্ছেন নদীভাঙা মানুষের কান্ডারী! তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।