পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবারও আলোচনায় মাহবুব তালুকদার
আবারও আলোচনায় এসেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে বিরোধীতাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে একাধিকবার ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে নির্বাচন কমিশনের সভা বর্জন করেছেন তিনি। এবার জাতীয় নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেইং ফিল্ড’ ইস্যুতে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন এই নির্বাচন কমিশনার। বিষয়টি নিয়ে এই কমিশনার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার বক্তব্য এবং পাল্টা বক্তব্যের ঘটনাও ঘটেছে।
এসব নিয়ে ভোটের মাঠেও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, নির্বাচনের আগমুহূর্তে এসে কমিশনের মধ্যে এই ধরনের পরষ্পরবিরোধী মন্তব্য মোটেও কাম্য নয়।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে কয়েকজন সাংবাদিকের লিখিত বক্তব্যের লিখিত জবাবে সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি মোটেই মনে করি না নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা এখন একটা অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে।’
একজন কমিশনারের এই মন্তব্যের বিষয়ে পরদিন রাঙামাটি সফরে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ওই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মাহবুব তালুকদারের বক্তব্যকে ব্যক্তিগত ও অসত্য আখ্যায়িত করে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। ছোটখাটো কিছু সংঘাত হয়ে থাকে। সেটা তেমন বড় কিছু নয়।’ পরে চট্টগ্রামে আরেকটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এ কথা বারবার বলা হয় কেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই? কোথায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নাই, কিসের ফিল্ড ঠিক নাই? সরকারি দল বা বিরোধী দল মিটিং-মিছিল আবার অনেক সময় শোডাউনও করছে। তাদের কি কেউ বাধা দিয়েছে? তাহলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা আসে কেন? কোথায় কিসের ফিল্ড নেই আমি বুঝি না।’
বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) রংপুরে আরেকজন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ তারা নিজেরাই বলে- আমরা ছোট দল। আমরা এই ছোট দলের সঙ্গে বড় দলের সমতল কীভাবে করে দেবো। তবে ভোটারদের জন্য মাঠ সমতল আছে।’
সিইসির বক্তব্যের জের ধরে বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) নিজ কার্যালয়ে আবারও সাংবাদিকদের ডেকে কথা বলেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সিইসির বক্তব্যের প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ১৮ ডিসেম্বর রাঙামাটিতে বলেছেন- নির্বাচনে লেভেল প্লিয়িং ফিল্ড নেই বলে আমি মিথ্যা কথা বলেছি। আমি তার বক্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কারণ একথা বলে তিনি একজন নির্বাচন কমিশনারের অস্তিত্বে আঘাত করেছেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, সিইসিসহ সব নির্বাচন কমিশনার সমান।’
এদিকে মাহবুব তালুকদারের বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নোয়াখালীতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন পাঁচ জনকে নিয়ে। সেই পাঁচ জনের মধ্যে চার জন বা তিন জন যদি একদিকে থাকেন তাহলে সেটাই হচ্ছে সিদ্ধান্ত। মেজরিটির সিদ্ধান্তই হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত। সেদিক থেকে একজন ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারেন। তাতেও আপত্তি নেই। সেটাও গণতন্ত্র। কিন্তু চার জন যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই হবে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত। সেদিক থেকে সিইসি সঠিক কথা বলেছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এটি উনাদের নিজেদের মধ্যকার কথাবার্তা। এটি নিয়ে মন্তব্য করার প্রয়োজন মনে করি না। তবে, নির্বাচনের আগমুহূর্তে এসে এই ধরনের ঘটনা কাম্য ছিল না। এমনিতে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সকলের মধ্যে একটি নেতিবাচক ধারণা হয়েছে। এরমধ্যে এই ঘটনায় তাদের সম্পর্কে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে।’
এ প্রসঙ্গে কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, কমিশনার মাহবুব তালুকদার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচারণার সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে প্রথমে আলোচনায় আসেন। এরপর তিনি সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিধান যুক্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনীর প্রস্তাবেও বিরোধীতা করে নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার পাশাপাশি বৈঠক বর্জন করেন। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থানও ব্যাখ্যা দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।