Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খালেদা জিয়ার জীবনকে উদ্ভাসিত করবে আপনাদের একটি ভোট

ইশতেহার ঘোষণায় মির্জা ফখরুল

| প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

প্রতিটি ভোটারের একেকটি ভোট বেগম খালেদা জিয়ার জীবনকে পুনরায় আলোয় উদ্ভাসিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে একটি পরিত্যাক্ত ভবনে নির্জন কারাবাস করছেন। তাঁর অপরাধ, তিনি জীবনে অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাার বিরুদ্ধে লড়াই এবং বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে সুন্দর করবার জন্য নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মানুষের মুক্তি, গণতান্ত্রিক অধিকার ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত করতে গিয়ে তিনি আজ বন্দী জীবনযাপন করছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই দেশে ফিরতে পারছেন না। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকল্পে মূল্যবান সমর্থন চান বিএনপি মহাসচিব। গতকাল (মঙ্গলবার) সকালে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ইশতেহার ঘোষণায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা নিজ ঘরে থাকতে পারছে না। তারাও নিজ ঘরে ফিরতে চান। পেতে চান পরিবারের সান্নিধ্য, একটি স্বস্তিময় রাত। আপনাদের সমর্থন ঘরছাড়া এই মানুষগুলোকে ঘরে ফিরবার সুযোগ করে দেবে। অবসান ঘটাবে জুলুম ও নির্যাতনের বিভীষিকাময় পরিস্থিতির। নির্বাচনে জয়লাভ করে ঐক্যের সরকার গঠন করলে ঐকমত্য, সকলের অন্তর্ভূক্তি এবং প্রতিহিংসাহীনতা এই মূলনীতির ভিত্তিতে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’ সংবিধানের এই নীতির ভিত্তিতে সরকার পরিচালনায় যাবতীয় পদক্ষেপের ভিত্তি হবে রাষ্ট্রের মালিকদের মালিকানা সুদৃঢ় করা। শুধুমাত্র নির্বাচনে জেতা দলের মানুষের নয়, এই মালিকানায় সকল দল, ব্যক্তি ও মতাদর্শে অন্তর্ভূক্ত হবে।
বর্তমান সরকার ভীতি ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা একটি জনপ্রতিনিধিত্বহীন সরকার গঠন করে। বিগত প্রায় ১০ বছরে দেশে কোনোরকম সুশাসন ও আইনের শাসন ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। মামলা-হামলা, গুম, খুন ও বিচারবহির্ভ‚ত হত্যাকাÐের মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে এক ভীতি ও ত্রাসের রাজত্ব। জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশে আঞ্চলিক ও শ্রেণি বৈষম্য ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। দারিদ্র্য হ্রাসের হার কমে গেছে। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, ব্যাংকগুলো লুট হয়ে যাচ্ছে। দেশে সৃষ্টি হয়েছে দুর্বৃত্তায়ন, দস্যুতাবৃত্তি ও লুণ্ঠনের অর্থনীতি।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন শুধু জয়-পরাজয় নয়, গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের অধিকার উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, একটি নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতিতে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ লড়াই শুধুমাত্র নির্বাচনে জয় পরাজয়ের লড়াই নয়। এ লড়াই অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। এ লড়াই ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটিয়ে মুক্তজীবনে এগিয়ে যাওয়ার লড়াই। জাতিকে এই সংকট থেকে মুক্ত করার লক্ষে গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে আমরা দেশের অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তুলেছি।
তিনি বলেন, বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দল ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় অগণতান্ত্রিক স্বৈরচারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছি। এই সংগ্রামের অংশ হিসাবে আমরা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮ এ অংশগ্রহণ করছি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি একটি উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই। দেশের উন্নয়নের জন্য বিএনপির কর্মসূচিগুলো বহুমুখী ও উন্নততর। বিএনপি জনগণের কাছে ¯পষ্টভাবে অঙ্গীকার করতে চায় ক্ষমতায় গেলে কারো ওপরই কোনো প্রকার প্রতিশোধ নেওয়া হবে না। একটি প্রতিহিংসামুক্ত এবং সহমর্মী বাংলাদেশ গড়ে তোলাই বিএনপির লক্ষ্য।
এসময় ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানের মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
এছাড়া পেশাজীবীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমদ, প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ, প্রফেসর আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, প্রফেসর আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, প্রফেসর সদরুল আমিন, প্রফেসর আখতার হোসেন খান, ফিরোজা হোসেন, দিলারা চৌধুরী, খলিলুর রহমান, আবদুল লতিফ মাসুম, আবদুল মান্নান মিয়া, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ প্রমূখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, রুহুল আলম চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রফেসর ড. তাজমেরী এস ইসলাম, প্রফেসর ড. সাহিদা রফিক, গোলাম আকবর খন্দকার, এ এস এম আবদুল হালিম, আবদুর রশীদ সরকার, আবদুল কাইয়ুম, আবদুল কুদ্দুস, সুকোমল বড়ুয়া, শাহজাদা মিয়া, এনামুল হক চৌধুরী, সিরাজউদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, সেলিম ভুঁইয়া, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, তাবিথ আউয়াল প্রমূখ।###

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ