বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, এবারের নির্বাচনে
ধানের শীষের প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে নয়, মনে হচ্ছে
আমাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নামে যারা
আছেন তারা। আক্রমণের পর আক্রমণ যা খুশি তাই করা হচ্ছে। সরকার দলীয় এমপি,
মন্ত্রী ও প্রার্থীদের পুলিশ ঠিকই নিরাপত্তা দিচ্ছেন, প্রটোকল দিচ্ছেন আর
আমাদের প্রার্থীদের ধরছেন, পেটাচ্ছেন ও গ্রেফতার করছেন।
নিয়ে আসেন জাতীয়বাদী দল ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আসেন
বিএনপির যুগ্ম
মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান ও ভাইস
চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী অপেক্ষার পর চিঠি না নেয়ায় ফিরে যাবার কালে
সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আজকে আমরা বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল তথা
ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে এখানে এসেছি। সাবেক মন্ত্রী ও সরকারের সাবেক
উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তাসহ এখানে এসেছি।
২৫ মিনিট দাঁড় করিয়ে আমাদের ডেস্ক থেকে নেয়ার ব্যাপারে নিষেধ করা হলো।
আমরা এখানে প্রতিকার চেয়ে এসেছিলাম। আমাদের দেখা করতে দেয়া হয়নি। এর
মধ্যদিয়ে আজ এটা স্পষ্ট হলো যে, আমাদের সাথে কী ধরনের আচরণ করা হচ্ছে।
বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক গাজীপুরের প্রার্থী ফজলুল হক মিলন, কিছুক্ষণ
আগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রচারণা চলাকালে। উত্তরায় ঐক্যফ্রন্টের
পক্ষে একটি নির্বাচনী প্রচারণা সভা ছিল। যেখানে আ স ম আব্দুর রব ও
মাহমুদুর রহমান মান্না যাচ্ছিলেন। সেখানে মঞ্চ ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
নেতাকর্মীদের মারধর করা হয়েছে।
প্রচারণায় হামলা দেশের কম বেশি সবখানেই হচ্ছে উল্লেখ করে আলাল বলেন,
ঢাকা-১, নরসিংদী-২, ময়মনসিংহ-২, ময়মনসিংহ-৩, ময়মনসিংহ-১১, মাগুরা-১,
কুষ্টিয়া-৩, মাগুরা-১, মাগুরা-২, টাঙ্গাইল-৭, ফরিদপুর-২ ঢাকা-২,
সিরাজগঞ্জ-৩, সিরাজগঞ্জ-২, পটুয়াখালী-১, মৌলভীবাজার -৩, বি.বাড়িয়া-২ ও ৩,
নেত্রকোনা-৩, মানিকগঞ্জ-১ ও ৩, চাঁদপুর-৪, নওগাঁ-২ এবং রাজশাহী-৪ ও ৬
আসনে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী আমাদের
বিএনপি ও
ঐক্যফ্রন্টের নেতা কর্মীদের উপর হামলা করেছে। প্রার্থীদের বাধা দিচ্ছে,
নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা ও সভা পণ্ড করে দিয়েছে।
ঢাকায় আমাদের প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার
বিষয়টি সাংবাদিকরা দেখেছেন। আমাদের নির্বাচনী সভাগুলো পণ্ড করা হচ্ছে। আর
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দাঁড়িয়ে দেখছেন।
তিনি বলেন, অনেগুলো অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করা হয়েছে। একবার বন্ধের
আদেশ আরেকবার খোলার আদেশ, আবার বন্ধের আদেশ দেয়া হয়েছে। এইসব পোর্টালের
মধ্যে
বিএনপি’র
বিএনপিবাংলাদেশডটকম (bnpbangladesh.com) নামে ওয়েবসাইটও
বন্ধ করা হয়েছে। ওয়েবসাইটটি খুলে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলে
দেবার জন্য বলা হয়েছে।
আলাল বলেন, আমরা জোটবদ্ধ নির্বাচন করছি। জোটবদ্ধ নির্বাচন করার কারণে
আমাদের দলীয় নেত্রী গণপ্রতিনিধিত্ব ৭২ এর ২০ এর (১) ধারা অনুযায়ী জোটবদ্ধ
দল হিসেবে নিজেদের পোস্টারে দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহার করার কথা বলেছি।
যাতে করে
বিএনপি’র বাইরের দলগুলোর পোস্টারেও খালেদা জিয়ার ছবি ব্যবহার
করতে পারেন। কোনো সমস্যা না হয়।
আলাল বলেন, আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বন্ধের দাবি ফলদায়ক হচ্ছে
না। আমাদের পেটানোর জন্য সব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেই দেখছি। সংলাপেও এসব
বলা হয়েছে। কিন্তু তা দেখছি না। আমাদের দাবি ছিল ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা
দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা। প্রথমে বলা হলো ১৫ ডিসেম্বর, আবার বলা হলো
২৪ তারিখ। তা স্থির নয়। এখন বলা হচ্ছে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন
করা হবে। আমরা বার বার বলেছি ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে যেতে
পারেন। মাঠে থাকার ও ভোট করার যে গণতান্ত্রিক অধিকার তা সময় যতো গড়াচ্ছে
কঠিন হয়ে পড়ছে। এ জন্য সেনা মোতায়েন দরকার।