পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পরিকল্পিত নীলনক্সার মাধ্যমে সরকারের দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য লোক দেখানো নির্বাচন আয়োজনে জেলা প্রশাসকরা ফন্দি-ফিকির করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ভয়ংকর গোপন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা প্রশাসক তথা রিটার্নিং অফিসাররা। ক্ষমতাসীনদের মাষ্টারপ্ল্যান অনুযায়ী প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রহসনমূলক নির্বাচনী ছক তৈরী করে এগিয়ে চলছে।
শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিদিন জেলা প্রশাসকরা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করছেন। ভোট ডাকাতি প্রস্তুতির শলাপরামর্শ করছেন। নির্বাচনে জাল-জোচ্চুরির সব প্রস্তুতি পাকা করছেন। সোমবার বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আমরা বিশ্বস্তসুত্রে জানতে পেরেছি, গতকাল রোববার সকল জেলার প্রশাসকরা স্ব স্ব এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ডেকে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে চারটি বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
১. ডিসিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলেছেন, আপনারা জানেন সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি বিজয়ী হয়ে যাবে, তাই এই সরকারকে আবারও ক্ষমতায় রাখতে হলে বুঝেশুনে কাজ করতে হবে। যেকোন মূল্যে এই সরকারকে ক্ষমতায় আনতে হবে। কাজেই এদিক ওদিক করার মতলব থাকলে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন।
২. মাঠে কাজ করবে পুলিশ ও র্যাব। আপনাদের দায়িত্ব হলো তাদের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করা এবং সহযোগিতা প্রদান।
৩. প্রিজাইডিং অফিসারদের নিরাপদে কন্ট্রোল রুমে আসার ব্যবস্থা করবেন।
৪. প্রিজাইডিং অফিসারদের ব্ল্যাঙ্ক সিগনেচার নিয়ে রাখবেন। সেটা সময়মতা কাজে লাগানো হবে। এই সরকারকে যে কোন প্রকারে হোক ক্ষমতায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, নির্দেশনায় বলা হয়, গভীর রাতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত পুলিশের সহযোগিতায় নৌকা প্রতীককে জয়ী করার জন্য ব্যালট পেপারে সিল মেরে ব্যালটবাক্স ভর্তি করে রাখতে হবে। সকাল হওয়ার পর ভোটগ্রহণের আগেই ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষের এজেন্টগণ তাদের দায়িত্ব পালনের উদ্দেশে স্ব স্ব কেন্দ্রে ঢুকতে গেলে সরকার দলীয় লোকজন তাদের ঢুকতে বাধা দিবে এবং কেন্দ্রে নিয়োজিত পুলিশ সহায়তা করবে।
বিএনপি নেতা বলেন, সাজানো প্রশাসন ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। জনপ্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং দলবাজ কর্মকর্তাদের নির্বাচনী মাঠ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এই অবৈধ সরকারকে কোন সহযোগিতা করবেন না। আপনারা এদেশের সন্তান। নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করুন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নিশ্চিত ভরাডুবির আশংকায় অস্থির ও বেসামাল হয়ে পড়েছে। তারা বিএনপি’র বিরুদ্ধে অনর্গল মিথ্যাচার ও প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। মিডিয়া সন্ত্রাসে নেমেছে। প্রতিবেশী একটি দেশকে নিজেদের পক্ষে টানতে, অনুকম্পা ও সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমাদের নেতাদের নামে আজগুবী ভিত্তিহীন কথা ছড়াচ্ছে। গতকাল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান ধানমন্ডীতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, পাকিস্তানি দূতাবাসে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাক্ষাৎ ও গোপন বৈঠক করেছেন। এই অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়ে পাকিস্তান হাইকমিশন গতকাল সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে। লিখিত বার্তায় তারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে তা ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছে। পাকিস্তানের কোনো কূটনীতিকের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক হয়নি।
মিথ্যা কুৎসা প্রচারণায় বিকারগ্রস্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। গোষ্ঠী স্বার্থে দেন-দরবার করার ঐতিহ্যই হচ্ছে আওয়ামী লীগের। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী সাহেবই তো ৭ দিন পাকিস্তানে কাটিয়ে আসলেন। এই ধরনের মিথ্যাচার থেকে আওয়ামী লীগ ও তাদের অর্থপুষ্ট দালাল মিডিয়া বিরত থাকবে বলে আমরা আশা করি। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও তাদের মদদপুষ্ট কিছু দালাল মিডিয়াকে বলবো-বিকৃত অপপ্রচার না চালিয়ে আওয়ামী লীগের গোপন দেন-দরবারগুলি প্রকাশ করলে জাতি উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, ভারতের অন্যতম বাংলা পত্রিকা দৈনিক যুগশঙ্খ গতকাল উলফার কমান্ডার ইন চিফ পরেশ বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়ার একটি সাক্ষাতকার ছেপেছে। সেখানে বলা হয়েছে, “এক যুগেরও বেশি সময় পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ক্লিনচিট দিলো ভারতের স্বাধীনতাকামী সংগঠন ‘ইউনাটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা)’। বিএনপি-জামায়াত আমলে উলফা নেতাদের আশ্রয় এবং সহযোগিতার যে অভিযোগ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ছিল তা মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত বলে উল্লেখ করেছেন উলফার কমান্ডার ইন চিফ পরেশ বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া।”
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান আলোচনাপন্থী উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা আছে যাদের আমাদের বিপ্লবের প্রতি সমর্থন ছিল ও আছে। কিন্তু তারেক জিয়ার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগযোগ বা সম্পর্ক ছিল না।
যুগশঙ্খ লিখেছে, উলফা-স্বাধীনের সেনাধ্যক্ষ পরেশ বড়ুয়া ও উলফার আলোচনাপন্থী নেতা অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের যোগাযোগ হয়েছিল। তাদের কাছে প্রশ্ন ছিল-খালেদাপুত্র তারেকের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ ছিল কি না ? এর উত্তরে পরেশ বড়ুয়া ও অনুপ চেটিয়া তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানান। পরেশ বড়ুয়া বলেন, ‘আমি কাউকে মিথ্যা কলঙ্ক দিতে পারবো না।
রিজভী জানান, পরেশ অসম ওরফে পরেশ বড়ুয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘হাওয়া ভবন কোথায় আমি জানতাম না। যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আর তারেক জিয়াকে কোনদিন দেখি নাই। তার সঙ্গে টেলিফোনে কখনও কথাও হয়নি। এই ব্যাপারে কোন প্রমাণ থাকলে আমি সেটাকে গ্রহণ করবো। মানুষ না দেখে না বুঝে অনেক কথা বলে। সেটা তো কাউন্ট করা যায় না।’
অথচ গত দশ বছর ধরে আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি ও তারেক রহমানকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যে কাল্পনিক ও বানোয়াট গালগল্পের ঢালাও প্রচার করে এসেছে সেটি যে ডাহা মিথ্যা অভিযোগ ছিল তা সুষ্পষ্টভাবে প্রমানিত হলো উক্ত প্রতিবেদনে। তারেক রহমানকে ভিলেন সাজাতে তার সাথে পরেশ বড়ুয়া ও অনুপ চেটিয়ার ঘনিষ্ঠতার যে মহাকাব্য বিগত এক দশক ধরে রচনা করা হয়েছে তার জন্য আওয়ামী লীগ প্রধানসহ নেতাদের দু:খ প্রকাশ করতে হবে।
বিটিভি (বাংলাদেশ টেলিভিশন) সরকারী সম্পদ নয়, এটা এখন আওয়ামী লীগের সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, অতি আওয়ামী লীগ হওয়ার কারণে অতিরিক্ত সচিব বর্তমানে বিটিভি’র মহাপরিচালক পদে আসীন আছেন হারুন অর রশিদ, যুগ্ম সচিব সুরথ কুমার সরকার ডিরেক্টর অব নিউজ পদে অধিষ্ঠিত আছেন, কিন্তু পদটি উপ-সচিবের ; যুগ্ম সচিব সাখাওয়াত হোসেন পরিচালক প্রশাসন পদে আসীন আছেন, এই পদটিও উপ-সচিবের। অত্যন্ত একনিষ্ঠ আওয়ামী লীগার নুর আনোয়ার হোসেন এবং মাহবুবা ফেরদৌস প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ পদে আসীন আছেন। এরা বিটিভি’র বর্তমান পদে আসীন থাকলে ভোটের ফলাফল পাল্টে দিয়ে একটা বড় মাপের মিডিয়া ক্যু ঘটাতে সক্ষম হবে। অবিলম্বে উল্লিখিত কর্মকর্তাবৃন্দকে বিটিভি ঢাকা কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করে অন্যত্র বদলী করতে হবে। এই সমস্ত কর্মকর্তাবৃন্দকে না সরালে একটা বড় ধরণের বিপর্যয় তারা ডেকে আনবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।