Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মরিয়া হয়ে বাঁচার পথ খুঁজছিল পাকসেনারা

হোসেন মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

আজ ১০ ডিসেম্বর। ’৭১-এর এ দিনে দেশের অধিকাংশ এলাকা শত্রুমুক্ত করে বাংলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী বীরদর্পে ঢাকার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। হানাদার পাক সেনারা প্রায় প্রতিটি রণাঙ্গনে পরাজিত হতে হতে মনোবল হারিয়ে মরিয়া হয়ে বাঁচার পথ খুঁজতে থাকে। এদিন ঢাকা রেডিও ট্রান্সমিশন স্টেশনের ওপর সরাসরি বিমান আক্রমণ চালানো হলে সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। বিমানবাহী ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ বিক্রান্তের বিমানগুলো চট্টগ্রামে সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর ছাড়াও পাক হানাদারদের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুগুলোতে বিরতিহীনভাবে আক্রমণ চালাতে থাকে। আজকের এই দিনে হিলিতে প্রচন্ড রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। হিলির পার্শ্ববর্তী পাকিস্তানি সামরিক অবস্থান ভাদুরিয়াতে আক্রমণ চালানো হয়। এদিকে রংপুর ও সৈয়দপুর থেকে হানাদার বাহিনী পালিয়ে ফুলছড়িঘাট দিয়ে যমুনা নদী পার হয়ে ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করছে- এমন খবর পেয়ে যৌথবাহিনী গাইবান্ধা ও ফুলছড়িঘাট দখল করে অবস্থান নেয়। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী মিলে দিনাজপুর, রংপুর ও সৈয়দপুরে পাক হানাদারদের অবরোধ করে রাখে। এছাড়া মিত্রবাহিনী কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাস সংলগ্ন উঁচু ভ‚মিতে সুদৃঢ় অবস্থান নেয়। এরপর তারা হানাদারদের উপর আক্রমণ শুরু করে।
লে. জেনারেল নিয়াজি উপ-সামরিক আইন প্রশাসক মে. জেনারেল মোহাম্মদ আবদুর রহিমকে নতুন সৃষ্ট ৩৯ অ্যাডহক ডিভিশনের কমান্ডার করেন। রহিমকে ইয়াহিয়ার আমলের যোগ্যতম জেনারেল বলা হত। তিনি চাঁদপুরে তার হেডকোয়ার্টার স্থাপন করেন। কুমিল্লা অঞ্চলে পাক বাহিনীর বিপর্যয়ের কারণে চাঁদপুর থেকে স্থলপথে ঢাকা ফেরার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ১০ ডিসেম্বর রহিম একটি গানবোটের পাহারায় অন্যান্য নৌযানের বহর নিয়ে ভোরে সাড়ে ৪টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। সকাল হওয়ার পর তাদের উপর ভারতীয় বিমান আক্রমণ শুরু হয়। তিনি আহত হন। তার বহর ছিন্নভিন্ন হয়। তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় নেয়া হয়। এ হামলায় অন্যদের সাথে যে ৪ জন সেনা অফিসার নিহত হন তাদের মধ্যে ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতারে নেতৃত্বদানকারী কমান্ডো গ্রুপের প্রধান মেজর বেলালও ছিলেন।
এদিন আশুগঞ্জ শত্রুমুক্ত হওয়ার ফলে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট, সিলেট শহর ও এর বাইরের কিছু এলাকা এবং চট্টগ্রামের কিছু অংশ ছাড়া পুরো পূর্ব সেক্টর শত্রুমুক্ত হয়। যৌথবাহিনীর প্রচন্ড প্রতিরোধের মুখে হানাদার বাহিনী কুষ্টিয়া ছেড়ে পালাতে শুরু করে।
মুক্তিযুদ্ধকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের নির্দেশে বঙ্গোপসাগরে রওনা হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ৭ম নৌবহর মালাক্কা প্রণালীতে অবস্থান নেয়। এই দিনে পাক হানাদারমুক্ত হয় ময়মনসিংহ, মাদারীপুর ও নড়াইল। যৌথবাহিনী জামালপুর মুক্ত করার লক্ষ্যে শহরের কাছাকাছি অবস্থান নেয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুক্তিযোদ্ধা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ