পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ ৯ ডিসেম্বর। একাত্তরের ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে দেশের মানুষের মনে বিজয়ের জন্য আশাবাদ জেগে ওঠে। দেশের অধিকাংশ স্থানে উড়তে থাকে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
পাকিস্তানি সৈন্যদের উদ্দেশে বাংলা, ইংরেজি ও উর্দুতে প্রচারপত্র নিক্ষেপ করা হয়। তাতে ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল মানেকশ’ হানাদার বাহিনীর অফিসারদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, হয় অস্ত্র সংবরণ কর না হয় মর। তিনি আরো বলেন, সময় থাকতে আত্মসমর্পণ করলে পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধবন্দির প্রচলিত বিধান অনুযায়ী ব্যবহার করা হবে। মানেকশ’র এ আহবান হানাদারদের মনোবল দুর্বল করে দেয়। অন্যদিকে এদিনে পাকিস্তান ইস্টার্ন কমান্ডের হেডকোয়ার্টার প্রথমবারের মতো পরিস্থিতি ভয়াবহ বলে স্বীকার করে। এদিন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ডা. এ এম মালিক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কাছে পাঠানো সাংকেতিক বার্তায় জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি ও রাজনৈতিক সমঝোতার কথা ভেবে দেখার অনুরোধ জানান। ইয়াহিয়া আবারো তা উপেক্ষা করেন। এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সন মার্কিন ৭ম নৌবহরকে বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা দিতে আদেশ দেন। এদিকে দিনাজপুরের কান্তনগর এলাকায় ৬ ডিসেম্বর থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে শুরু হওয়া রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ৯ ডিসেম্বর রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। পরে যৌথবাহিনী এখানে আর শক্তিক্ষয় না করে কান্তনগরকে পাশ কাটিয়ে দিনাজপুর শহরের দিকে অভিযান শুরু করে। হিলিতেও পাক-বাহিনীর সাথে যৌথ বাহিনির প্রচন্ড যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। অন্যদিকে কুষ্টিয়া ও খুলনা ছাড়া পশ্চিম সেক্টরের পুরোটাই শত্রুমুক্ত হয়। যৌথবাহিনী কামারখালিতে মধুমতি নদী অতিক্রমের প্রস্তুতি নেয়। যৌথ বাহিনির অপর একটি দল ঝিনাইদহ থেকে সকাল বেলা অভিযান শুরু করে বিকেল নাগাদ কুষ্টিয়া শহরে পৌঁছে যায়। এখানে পাক-বাহিনীর সাথে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরদিন হানাদাররা পালাতে শুরু করে। অন্যদিকে জামালপুর শহর মুক্ত করার লড়াই চলতে থাকে। যৌথবাহিনী ময়মনসিংহের দিকে অগ্রাভিযানে ফুলপুরে পৌঁছে যায়। এদিনে নেত্রকোনা শহর শত্রুমুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধার চারদিক থেকে শহর ঘিরে ফেলে। পাকবাহিনী শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় মোক্তারপড়া ব্রিজের সংলগ্ন কৃষিফার্মের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। এ সময় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হন। স্থলপথে ঢাকার দিকে এগিয়ে যাওয়া যৌথবাহিনীর দলটি রাতে মেঘনা নদীর পূর্বপাড়ে লালপুর দখল করে সেখান দিয়ে নদী অতিক্রম করে। এদিনে দাউদকান্দি শত্রুমুক্ত হয়। এর ফলে মূলত মেঘনার সম্পূর্ণ পূর্বাঞ্চল মুক্তিবাহিনীর দখলে আসে।
১৯৭১ সালের এদিনে গাইবান্ধা, কপিলমুনি, ত্রিশাল, নকলা, নেত্রকোনা, পাইকগাছা, কুমারখালি, শ্রীপুর, অভয়নগর, পূর্বধলা, চট্টগ্রামের নাজিরহাট, ঈশ্বররগঞ্জ (ময়মনসিংহ), মৌলভীবাজার, লাকসাম, চাঁদপুর, পলাশবাড়ি প্রভৃতি এলাকা শত্রুমুক্ত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।