পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধীরে ধীরে বাংলাদেশ ইসলামী রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মাদরাসা শিক্ষকদের একক ও অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন। তিনি বলেন, কিছু ধর্মব্যবসায়ীর জন্য ইসলামী দল বা এই ধারার বদনাম হলেও বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে একটি ইসলামী রাষ্ট্রের দিকে, ধারার দিকে যাচ্ছে। গতকাল (শনিবার) রাজধানীর মহাখালীস্থ গাউসুল আযম কমপ্লেক্সে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র। ২৫ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ২৩ কোটি মুসলমান। সেখানে আগামী নির্বাচনে বৃহৎ একটি ইসলামী দলের নেতা ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। তাকে সাথে রাখার কারণে বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিজয়ের সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় ২০-২৫ ভাগ বেড়ে গেছে। একইভাবে মালয়েশিয়ায় মাহাথির, তুরস্কে এরদোগান, পাকিস্তানে ইমরান খান সকলেই ক্ষমতায় আছেন ইসলামী সমাজ ও ইসলামী সমাজের নেতাদের সাথে যোগাযোগ রেখেই। সর্বত্রই আলেমরা সরাসরি ক্ষমতায় না গেলেও ইসলামী সমাজের সাথে যারা জড়িত তারা যাকে সমর্থন দিচ্ছে তিনিই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসছেন। ইসলামী সমাজ ও নেতাদের পরামর্শ ছাড়া তারা কিছু করতে পারছে না। বাংলাদেশেও শাসকরা সেটা করতে পারবে না। ধীরে ধীরে বাংলাদেশ সেদিকেই যাচ্ছে।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কোন রাজনীতির সাথে নেই, কোন রাজনৈতিক দলের সাথে নেই উল্লেখ করে জমিয়াত সভাপতি বলেন, জমিয়াত শুধু মাদরাসা শিক্ষা, ইসলামী তাহজিব, তমাদ্দুন, আলেম-ওলামার মর্যাদার জন্য কাজ করছে। জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কোনো রাজনীতি না করেই বাংলাদেশের মাদরাসা শিক্ষা, শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য বিগত ১০ বছরে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। ১০ বছর আগে মাদরাসা শিক্ষকদের যে সম্মান ছিল তার থেকে এখন অনেক বেড়ে গেছে। অথচ এই সময়ে দেশের আলেম সমাজের মর্যাদা নষ্ট, ভূ-লুণ্ঠিত করার জন্য জঙ্গী তকমা দেয়ার জন্য নানারকম ষড়যন্ত্র হয়েছে। অনেকে ভূক্তভোগী হয়েছেন, কিন্তু জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের কোন আলেম, কোন দরবার অপমানিত হয়নি। তাদের মর্যাদা স্বগৌরবেই আছে। এটা জমিয়াতের সাফল্য।
জমিয়াতকে কারো কাছে নয়, জমিয়তের কাছে সকলকে আসতে হবে জানিয়ে এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনকে কারো কাছে যেতে হবে না। সকলকেই জমিয়াতের কাছে আসতে হবে। কারণ এই সংগঠনের সাথে রয়েছেন দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ। যারা নিজেদের অবস্থানে একেকজন শুধু আলেমই নন, সমাজের আধ্যাত্মিক নেতাও। তাদের লাখ লাখ ভক্ত ও অনুসারি রয়েছেন। নিজেরা যদি কোন ভুল না করি তাহলে সকলকেই আমাদের কাছে আসতে হবে।
মাদরাসা শিক্ষায় গত ১০ বছরে নানামুখী কাজের জন্য প্রধনমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত হোক বা না হোক, প্রধানমন্ত্রী থাকেন আর নাই থাকেন, তিনি মাদরাসা শিক্ষার জন্য যেসব কাজ করেছেন এসব কাজের কথা আলেম সমাজ, মাদরাসা শিক্ষকরা সব সময় বলবে। তার ভাল কাজগুলোকে সব সময় কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করবে। এ ব্যাপারে আমাদের কোন হীনমন্যতা নেই।
নির্বাচনের সময় সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে জমিয়াত সভাপতি বলেন, আলেমদের নিরপেক্ষ থাকতে হবে। সম্মান ধরে রাখতে হবে। কারো কথায় বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। নির্বাচন নিয়ে এখনো পর্যন্ত সংশয় আছে। নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে, এই অবস্থায় নির্বাচন হতেও পারে, নাও হতে পারে। হোক বা না হোক, বর্তমান সরকার ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্ষমতায় আছে। নতুন সরকার আসলেও সেই সরকার শপথ না নেয়া পর্যন্ত, ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এই সরকারই ক্ষমতায় থাকবে। ১০ ডিসেম্বর থেকে মাঠের পরিস্থিতি এখনকার মতো থাকবে না। পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হবে। পরিকল্পনার যে নির্বাচন সেই নির্বাচন প্রতিমুহূর্তে দুর্বল হয়ে যাবে। পরিকল্পিত কোন নির্বাচন হওয়া কঠিন হয়ে যাবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেলে রক্তপাত, সঙ্ঘাতের আশঙ্কা থেকেই যায়।
জমিয়াতের সকলকে নির্বাচনকালীন সময়ে সতর্ক এবং নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষকদের জন্য নির্বাচন কমিশন নীতিমালা জারি করেছে। সেই নীতিমালা সকলকে মেনে চলতে হবে। সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে, জমিয়াতের কাউকে যেন কেউ বিভ্রান্ত করতে না পারে।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজীর পরিচালনায় প্রতিনিধি সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি কবি মাওলানা রুহুল আমিন খান, সহ-সভাপতি ড. মাওলানা মুহাম্মদ কফিলুদ্দীন সরকার, ড. সৈয়দ মুহাম্মদ শরাফত আলী, যুগ্ম মহাসচিব ড. এ কে এম মাহবুবুর রহমান, আবুল কালাম মনোওয়ার আলী, আ খ ম আবু বকর সিদ্দীক, আ ন ম হাদীউজ্জামানসহ কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর এবং সারাদেশ থেকে আসা জমিয়াতের দুই শতাধিক জমিয়াত নেতৃতৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।