Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুক্তিযুদ্ধে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমান্ড গঠিত হয়

হোসেন মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

আজ ৩ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এদিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নয় মাসের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল সীমান্তে ও দেশের অভ্যন্তরে আনাচে কানাচে। সর্বত্রই পাকিস্তানি বাহিনি মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃসাহসী আক্রমণের শিকার হয়ে পিছু হটছিল। তাদের হাতের মুঠো থেকে ক্রমেই বেরিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের দুরবস্থা বাড়ছিল। ক্রমেই বেশি সংখ্যক এলাকায় উড়ছিল বাংলাদেশের পতাকা। এদিকে মুক্তিযুদ্ধকে একটি চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা চলমান ছিল। তারই পরিণতিতে ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের জিওসি লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে গঠিত হয় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ড। ভারতের সশস্ত্র বাহিনি পরিচিত হয় মিত্রবাহিনি নামে। এর ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নতুন করে গতি সঞ্চারিত হয়। এদিনেই ঘটে ইতিহাসের আরেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বিপুল সাফল্য পাকিস্তানিদের টনক নড়িয়ে দিয়েছে। এ স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের সমর্থন প্রদান বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়ে সর্বশেষ উপায় হিসেবে তারা যুদ্ধের পথ বেছে নেয়। পরিণতি সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা না করেই তারা যুদ্ধে নামে। কোনো রকম উস্কানি ছাড়াই এদিন শেষ বিকেলে পাকিস্তানি জঙ্গি বিমানগুলো ভারতের পশ্চিম সীমান্তে অমৃতসর, আম্বালা ও উধমপুরমহ কয়েকটি বিমান ঘাঁটিতে বোমাবর্ষণ করে। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কলকাতায় এক জনসভায় ছিলেন। সে অবস্থায় তাকে খবর দেয়া হলে জনসভা ছেড়ে তিনি দ্রুত দিল্লি ফিরে যান। সে রাতেই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক ভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ইন্দিরা গান্ধী জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের যুদ্ধ ভারতের যুদ্ধে পরিণত হয়েছে।’ শুরু হয়ে ভারত-পাকিস্তান তৃতীয় যুদ্ধ। আর কোনো আনুষ্ঠানিক বাধা না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনির জেড ফোর্স, এস ফোর্স ও কে ফোর্সের সাথে সম্মিলিত বাহিনি হিসেবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনি বাংলাদেশকে মুক্ত করার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা প্রচন্ড লড়াই করে বাংলাদেশের বেশ কিছু এলাকা পাকিস্তানি বাহিনির দখল মুক্ত হয়েছিল। সীমান্তে যৌথ বাহিনির আক্রমণ অভিযানের প্রচন্ডতার পাশাপাশি অকুতোভয় গেরিলা যোদ্ধারা দেশের অভ্যন্তরে নানা স্থানে পাকিস্তানি বাহিনির উপর আক্রমণ জোরদার করেন। তার ফলে ক্রমাগত পিছু হটতে থাকে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনি। আর এ পরিস্থিতিতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে তাদের দোসররা।



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৪:৪১ পিএম says : 0
    এখানে অনেক কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। যেমন পাকিস্তানের কতজন সৈন্য এদেশে যুদ্ধ করতে এসেছেন এবং আত্নসমর্পনের সময় কতজন পাকিস্তানি সৈনিক ছিলেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুক্তিযুদ্ধ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ