পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন আমরা নাকী দলকে, জোটকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছি না। এটা তার চিন্তা-ভাবনা। এতো দুশ্চিন্তা তার কেনো? এর আগে উনি বলেছেন যে, আমরা নাকী প্রার্থী খুঁজে পাবো না। আসলে তিন আসনে আমাদের দুইয়ের অধিক প্রার্থী। তাকে বলব, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিন, সকলকে সমান সুযোগ দিন। দেখেন কে কতটা আসন পায়। তারা (সরকার) জানেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ৩০টার বেশি আসন তাদের নেই। সেই কারণে তারা আজকে এই খেলাগুলো খেলছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশই নির্বাচন কমিশন অনুসরণ করছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর যে নির্দেশ, সরকারের যে নির্দেশ সেই নির্দেশই অনুসরণ করছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ভয় পাচ্ছেন বলেই এতো সব কিছু আয়োজন করছেন নির্বাচনটাকে পুরোপুরি করায়ত্ব করার জন্য। আজকে খুব স্বাভাবিকভাবে জনগণের কাছে প্রশ্ন এসে গেছে যে, নির্বাচন হবে কিনা? এই প্রহসনের নির্বাচন করে লাভ কী? যে কথাটা এসছে- আস্থা সেই আস্থা আগেও ছিলো না, এখনো নেই। গত দুই দিনে তিন জন মনোনয়ন প্রত্যাশী দলীয় প্রার্থী গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা অত্যন্ত পরিস্কার এই নির্বাচন কমিশন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে নেই। তারা সরকারের নীল নকশার বাস্তবায়ন করে চলেছে। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা স্পষ্টভাবেই বলতে চাই, গায়েবী মামলায় গ্রেপ্তার বন্ধ করুন, গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিন। অন্যথায় উদ্ভুত রাজনৈতিক পরিস্থিতির সকল দায়-দায়িত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই বহন করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনে যাবো। আগামীকাল অথবা পরশু গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দিয়ে আসব। আমরা বহু চিঠি নির্বাচন কমিশনে দিয়েছি। একটা চিঠিরও উত্তর আসেনি, কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কী হয়েছে? রদবদলের কথা বলেছি। নারায়নগঞ্জের এসপি যার স্ত্রী একজন এমপি ছিলেন। তাকে বদলি করে সেখানে দেয়া হয়েছে গাজীপুরের হারুন (হারুন অর রশীদ) সাহেব। অর্থাৎ জলন্ত কড়াই থেকে জলন্ত উনুনে পড়ছে- এই অবস্থা? এরকম পরিস্থিতিতে নির্বাচন আপনারা থাকবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে থাকার জন্যই তো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। নির্বাচন করতে এসছি এতো কষ্ট করে ৪/৫ দিন ধরে আমরা কাজ করলাম প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিলাম।
নির্বাচনে বিএনপি থাকা না থাকা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সন্দেহ প্রকাশ করেছেন- এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, তার প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে চাই না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মনে হয় যে, অবান্তর কথা-বার্তা। এগুলো বলার কোনো মানে হয় না। নির্বাচন কমিশনের মনোনয়নপত্র দাখিল করা ৬৯৬ জন দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কতটা মামলা রয়েছে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সকলের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। আমরা হলফনামা যখন আমি লিখতে গেছি ৪ পৃষ্ঠা গেছে আমার মামলা বিবরণে। আমরা বিরুদ্ধে ১‘শর বেশি মামলা। আমাদের স্থায়ী কমিটির এখানে যারা বসে আছেন তাদের সবার বিরুদ্ধে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, সারা দেশে প্রায় সব আসনে সরকার ও তার দলীয় প্রার্থীরা বড় বড় মিছিল নিয়ে গেছে এবং বক্তৃতা করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। আর আমাদের প্রার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অপহরণ করা হয়েছে, তাদেরকে গুম করা হয়েছে। আমাদের নরসিংদীর খায়রুল কবির খোকন, আরেকজন মাগুরার মনোয়ার হোসেন খান যারা প্রার্থী তাদেরকে আটক করা হয়েছে। ভোলার লালমোহনে আমাদের দলের নেতা হাফিজউদ্দিনের বাড়িতে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করেছে। আজকে পত্রিকায় দেখেছেন যে, আমাদের নেতা সাদেক হোসেন খোকা সাহেবের ছেলে যিনি ঢাকার একটি আসনের প্রার্থী তাকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পন করতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ নিম্ন আদালতকে পুরোপুরি করায়ত্ব করা হয়েছে এবং হাইকোর্ট থেকেও দেখা যাচ্ছে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু কিছু আদেশ আসছে যা কোনো মতেই একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের জন্য সহায়ক নয়। রবং তা বাঁধার সৃষ্টি করছে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনে কোনো উদ্যোগই গ্রহণ না করে রকারের নীল-নকসা বাস্তবায়নে কাজ করছে বলে অভিযোগও করেন তিনি। মনোনয়পত্র দাখিলের দিন থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের একটি তালিকাও তিনি তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার চলছেই, অব্যাহতভাবে আছে। এই অবস্থায় নির্বাচন কতটুকু সম্ভব, কীভাবে সম্ভব। নির্বাচন কমিশনের যে কথা যা কিছু করছে পুলিশ তা তার নির্দেশেই করছে। গতকাল উনি (সিইসি) বলেছেন যে, খুব খুশি। তার প্রতি আস্থা আছে বলেই সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করছে। আমরা বলছি, গ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে। গায়েবী মামলা বন্ধ করতে হবে। গায়েবী মামলার চার্জসিট দেয়া শুরু হয়েছে। এভাবে এই নির্বাচনের পরিণতি কী হবে এটা আমরা বুঝতে পারছি না।উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেও নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন বলে অভিযোগও করেন তিনি।
নোয়াখালী-৫ আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করার বিভিন্ন আলোকচিত্র দেখিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি ২০ তারিখে। কিন্তু ৮দিনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এই নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাদের গ্রহণযোগ্যতা বলতে এখন আর কিছু নাই। তারা মুখে ভালো ভালো বক্তৃতা করেন কিন্তু কাজ কর্মে কোনো রকমের সাহস বা তাদের যে ক্ষমতা সেটা তারা প্রয়োগ করতে পারেনি। সরকারের তল্পিবাহক হিসেবে কাজ করছে। এই কমিশনের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে বলে আমরা মনে করি না।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।