বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পরীক্ষা ছাড়াই চলছে রক্ত বেচাকেনা
কুমিল্লার বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনোস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজিতে চিকিৎসার নামে চলছে গলাকাটা বাণিজ্য। রোগীরা প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। সরকারি স্বাস্থ্যনীতির তোয়াক্কা না করে এসব প্রতিষ্ঠান চিকিৎসার নামে রোগীদের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। তাদের জেল-জরিমানা দিয়েও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।
৬০ টাকার ওষুধ ৫শ’ টাকায় বিক্রি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই রক্ত বিক্রি করছেন তারা। কুমিল্লার নামিদামি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিত্র একই। লাইসেন্সবিহীন কার্যক্রম পরিচালনা ও মানসম্মত সেবা না দেওয়ার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লা নগরের দুটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দু’টি হলো- কুমিল্লার টমছমব্রিজ ও কোটবাড়ি সড়কে অবস্থিত ইনসাফ স্পেশালাইজড হসপিটাল ও মাতৃছায়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কুমিল্লার সির্ভিল সার্জন মুজিবুর রহমান জানান, চিকিৎসার নামে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনোস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজিতে চলে শুধু টাকা আদায়ের গলাকাটা বাণিজ্য। রোগীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও সেবার নামে অপারেশন থিয়েটারে চলে অমানবিক বাণিজ্য। টাকা ছাড়া তারা কিছুই বোঝেন না। এছাড়া ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা থেকে কমিশন বাণিজ্য, রোগী ভর্তি, নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের ওষুধ প্রেসক্রাইব, অপারেশন নিশ্চিত করা, প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে লাইফ সাপোর্টে পাঠানো, কেবিনে রোগী ধরে রাখাসহ লাশ হস্তান্তর পর্যায়ের নানা ধাপে কমিশন লেনদেন হয়। আর রোগীকে দিতে হয় বড় অঙ্কের বাড়তি টাকা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কঠোর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এসব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো অবাধে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কুমিল্লাজুড়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যাথলজি ব্যবসার ছড়াছড়ি।
অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না। ডাক্তাররা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সরবরাহকৃত স্পিপে ট্রিক মার্ক দিয়ে দেন কোন কোন টেস্ট করাতে হবে। রোগী নিজের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেই টেস্ট করালে ডাক্তার সে রিপোর্ট গ্রহণ করেন না। ডাক্তার তার নির্ধারিত সেন্টার থেকে আবার একই টেস্ট করিয়ে আনতে চাপ দেন। কমিশন নিশ্চিত হওয়ার পরই কেবল চিকিৎসা মেলে। ডাক্তাররা এখন সামান্য জ্বর, ঠান্ডা, কাশির জন্যও ডজন ডজন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা লিখে দিচ্ছেন। প্রয়োজন না থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত করিয়ে ছাড়েন তারা। সুযোগ থাকলে অপারেশনের মুখোমুখি করিয়ে লাইফ সাপোর্টের পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হয় রোগীকে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডাক্তারের জন্য রয়েছে লোভনীয় কমিশন। সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী বাগিয়ে নিয়ে অভিজাত হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারলেই শতকরা ৫০ ভাগ ‘ভর্তি ফি’ সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পকেটে যায়। অপারেশন, ক্যান্সার রোগীদের কেমোথেরাপি, অর্থোপেডিক রোগীদের ফিজিওথেরাপি, কিডনি রোগীদের ডায়ালিসিসের ক্ষেত্রেও আলাদা কমিশন নির্ধারণ করা আছে। এমনকি ওষুধ লেখার জন্য আগে থেকেই ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে কমিশনের নামে নানা রকম সুযোগ-সুবিধা নেন চিকিৎসক। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, নামমাত্র বøাড ল্যাব, প্যাথলজি ল্যাব, মানসম্পন্ন ওটি রুম না থাকা, পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকা, লোকবল না থাকা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকা, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের ব্যবহারসহ রোগীদের সু-চিকিৎসার নামে এক ধরনের প্রতারণা করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।