পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে চারদিন ধরে প্রায় সাড়ে চার হাজার প্রার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিএনপি। এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান। মনোনয়ন প্রার্থীদের কাছে কি জানতে চেয়েছেন তিনি?
সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া অংশ নেয়া নেতারা বলছেন: তারেক রহমান প্রধানত একটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন - যেহেতু মনোনয়ন প্রার্থী অনেক, কিন্তু পাবেন মাত্র একজন, তাই বাকিরা ভোটের সময় সব ভুলে গিয়ে তার পক্ষে কাজ করবেন কিনা।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে চারদিন ধরে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয় দলের মনোনয়ন বোর্ড এবং লন্ডন থেকে স্কাইপে তাতে যোগ দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও।
হাতে সময় কম থাকাসহ নানা রাজনৈতিক বাস্তবতায় এবার প্রার্থীদের আলাদাভাবে না ডেকে আসনওয়ারী সব প্রার্থীকে একযোগে ডাকা হয়েছিলো মনোনয়ন বোর্ডের সামনে।
প্রার্থীদের সাথে এ সময় আলাদাভাবে কিংবা একসাথেই কথা বলেছেন তারেক রহমান।
সাক্ষাৎকার পর্বে প্রার্থীদের কাছে আসলে কি জানতে চেয়েছেন মিস্টার রহমান? এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাদের সাথে আলাদা করে কিছু বলেননি।
"তবে সবার উদ্দেশ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন, যাতে আমরা একযোগে দলের স্বার্থে কাজ করি" - জানান তিনি।
বরিশালের একটি আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছেন কুদ্দুসুর রহমান।
তবে দক্ষিণাঞ্চলেরই অপর একটি আসনের একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী বলেন তারা একযোগে কয়েকজন সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
ওই সাক্ষাৎকারের সময় তারেক রহমান তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, "এক এলাকায় আপনারা অনেকে আছেন। সবাইকে তো মনোনয়ন দেয়া যাবে না। আমরা যাকে দেবো সেটা মেনে আপনারা দলের এ দুঃসময়ে ধানের শীষের জন্য একযোগে কাজ করবেন কি-না"?
জবাবে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা একযোগে বলেন 'হ্যাঁ, তারা মনোনয়ন না পেলেও দলের জন্য কাজ করবেন।'
এটা শুনে তারেক রহমান বলেন, আপনারা কি আমাকে ওয়াদা দিচ্ছেন?
মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলেন, "হ্যাঁ ওয়াদা দিচ্ছি"।
এর আগে সংসদ সদস্য ছিলেন নীলুফার চৌধুরী মনি। এবার মনোনয়ন চাইছেন। সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। তিনি বলছেন, "এবার পরিস্থিতি ভিন্ন বিএনপির জন্য। দল কঠিন সময় পার করছে। আমরা একযোগেই গিয়েছিলাম সাক্ষাৎকার পর্বে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কথা দিয়েছি মনোনয়ন যাকেই দেয়া হোক - আমরা একযোগেই কাজ করবো"।
বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার আশায় এবার যারা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাদের অনেকেই বলছেন সাধারণত এসময় প্রতিটি প্রার্থী আলাদা ভাবে মনোনয়ন বোর্ডের সামনে উপস্থিত হন।
কিন্তু এবারের দৃশ্যপট ছিলো ভিন্ন। সেজন্য গত ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া সাক্ষাৎকার পর্বে একটি আসনের বিপরীতে যত প্রার্থী আছেন - সবাইকে একসাথেই ডাকা হয়েছে।
দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, সাক্ষাৎকারের প্রথম দিন অনেক প্রার্থীর কাছে সরাসরি অনেক কিছু জানতে চেয়েছিলেন তারেক রহমান। সেদিন তিনি অনেককে এলাকায় তার কিংবা দলের অবস্থা, আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা সহ নানা প্রশ্ন করেছিলেন।
কিন্তু এরপর থেকে মূলত তিনি নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেয়ার পাশাপাশি সবার কাছ থেকে দলীয় প্রার্থীর জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি আদায় করেন।
লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে সাক্ষাৎকারে যোগ দিয়ে তারেক রহমান এ ছাড়াও মনোনয়নপ্রার্থীদের কাছে দলের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন।
চেয়ারপারসন জেলে, তিনি নিজে দেশের বাইরে, সরকারের অধীনে নির্বাচন -এমন সব পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে তারেক রহমান সবার কাছেই একটি প্রশ্ন করেছেন - "দল থেকে একজনকে মনোনয়ন দেয়া হলে তা মেনে নিয়ে সবাই কাজ করবেন কি-না", এবং এ ব্যাপারে সবার কাছ থেকে ওয়াদা আদায় করেছেন।
যারা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তারা প্রায় সবাই আবেগাপ্লুত ছিলেন তাকে দেখে ও তার কথা শুনে।
"ওনার কথার পর আসলে ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার আর কোনো প্রশ্ন আসেনি কারো মধ্যে", বলছিলেন বৃহত্তর ঢাকা জেলার একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি নেতা।
সাক্ষৎকারের শেষ দিনে আজ যেসব আসনের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয় তার মধ্যে নেত্রকোণার প্রার্থীরাও ছিলো।
নেত্রকোণার একটি আসন থেকে মনোনয়ন প্রার্থী আরিফা জেসমিন বলছেন, তারা একযোগেই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ও নির্বাচনে দলের জয় নিশ্চিত করতে তারেক রহমানের কাছে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন"।
তবে সাক্ষাৎকার দাতাদের একজন জানিয়েছেন, শুরুতেই তাদের তারেক রহমান জিজ্ঞেস করেন- 'আপনারা কেমন আছেন'।
জবাবে মনোনয়ন প্রত্যাশী একজন বলেন-'আমরা ভালো নেই'। এরপর মিস্টার রহমান জানতে চান- কেন ভালো নেই।
উত্তরে মনোনয়ন প্রত্যাশী একজন বলেন, "দেশে গণতন্ত্র নেই, মাদার অব ডেমোক্রেসি (খালেদা জিয়া) জেলে। এসব কারণেই আমরা ভালো নেই"।
তখন তারেক রহমান বলেন - আপনারা কি পারবেন না এ অবস্থার পরিবর্তন করতে? আপনারা কি মায়ের জন্য পারবেন না? নিজের মায়ের জন্য হলে কি করতেন? সেটি কি করবেন আপনারা? জবাবে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলেন, তারা পারবেন।
এরপর তারেক রহমান বলেন, এটি পারতে হলে কি করতে হবে? এটি কি কারো একার দ্বারা সম্ভব? আপনারা সবাই নমিনেশন চান কিন্তু আমরা তো একজনকে দিতে পারবো। সেটি কি আপনারা মেনে দলকে বিজয়ী করতে একযোগে কাজ করবেন?
উত্তরে সবাই তাকে নিশ্চয়তা দেন যে তারা একযোগে কাজ করবেন।
প্রসঙ্গত এবার বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহীদের মাঝে চার হাজার ৫৮০টি দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে দলটি। আগামী ৩০ ডিসেম্বর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র: বিবিসি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।