পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেসরকারি মাদরাসার জনবল ও এমপিও নীতিমালার পর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার বেতন কাঠামো সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ১৮ নভেম্বর স্বাক্ষরিত নীতিমালাটি গতকাল (মঙ্গলবার) প্রকাশ করেছে কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ।
এর আগে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা স্থাপন, স্বীকৃতি, পরিচালনা, জনবল কাঠামো এবং বেতন ভাতাদি/অনুদান সংক্রান্ত নীতিমালা-২০১৮ এর অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১৩ সেপ্টেম্বর নীতিমালার সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর এ নীতিমালার অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর বিষয়টির ওপর মতামত নিতে অর্থ মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় মতামত দিয়ে পাঠানোর পর চূড়ান্ত করে নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার জনবল কাঠামো ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিটি প্রথম করেছিল এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে একমাত্র সংগঠন হিসেবে উত্থাপন করেছিল। তাদের দাবির সমর্থনেই প্রধানমন্ত্রী এই নীতিমালা অনুমোদন করেছেন। নীতিমালাটি চূড়ান্ত হওয়ায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকদের বেতন সংযুক্ত মাদরাসার শিক্ষকদের সমান হয়ে যাচ্ছে।
মাদরাসা শিক্ষাধারার প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ইবতেদায়ী স্তর হিসেবে পরিচিত। যেসব মাদরাসায় দাখিল, আলিম, ফাজিল ইত্যাদি স্তরের সাথে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সংযুক্ত স্তরকে সংযুক্ত ইবতেদায়ী মাদরাসা আর যেসব মাদরাসায় শুধু প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়, সেগুলোকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা বলা হয়।
নীতিমালায় জনবল কাঠামো ও শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় প্রধানসহ চারজন শিক্ষক থাকবেন। এদের মধ্যে একজন এতবেদায়ি প্রধান, দুইজন এবতেদায়ি সহকারী শিক্ষক এবং এবতেদায়ি ক্বারী শিক্ষক একজন। এবতেদায়ি প্রধান ১১তম গ্রেডে বেতন পাবেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) ১১তম গ্রেডে বেতন পান। সেই হিসেবে ইবতেদায়ি শিক্ষকরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমান মর্যাদা পাচ্ছেন। তবে সমমান বা মর্যাদার কথা বলা হলেও বেতন কাঠামোতে প্রাথমিক শিক্ষকদের সমান বেতন বিবেচনা করা হয়নি ইবতেদায়ি শিক্ষকদের জন্য করা নীতিমালায়। নতুন এই নীতিমালা অনুযায়ী, ইবতেদায়ির সহকারী এবং ক্বারী শিক্ষকরা বেতন পাবেন ১৬তম গ্রেডে।
এমপিওভুক্ত সংযুক্ত মাদরাসার শিক্ষকরা নির্ধারিত হারে বেতন-ভাতা পেয়ে থাকে। এসব মাদরাসায় প্রধান শিক্ষকরা প্রতিমাসে ১০ হাজার ৩৮৮ টাকা এবং সহকারী শিক্ষকরা ৯ হাজার ৯৮৮ টাকা হারে বেতন পেয়ে থাকেন। অন্যদিকে ২০১৭ সাল থেকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসায় প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে মাত্র ৪ হাজার ৫২৯ জনের বেতন এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে আড়াই হাজার এবং সহকারী শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়। বর্তমানে দেশে ৩ হাজার ৪৩৩টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ১৫ হাজার ২৪৩ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন।
নীতিমালা অনুযায়ী, এবতেদায়ি শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। উপজেলা এবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষা কমিটির মাধ্যমে শিক্ষকরা নিয়োগ পাবেন। প্রধান শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে ফাজিল পাস বা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমমান ডিগ্রি। সহকারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে আলিম পাস। সহকারী ক্বারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে আলিম (বিজ্ঞান) অথবা এইচএসসি (বিজ্ঞান)। শিক্ষক নিয়োগে প্রবেশ বয়স হতে হবে ৩৫ বছর। তবে ইনডেক্সধারী হলে বয়স শিথিলযোগ্য।
ইবতেদায়ি মাদরাসা ব্যবস্থাপনায় থাকবে ম্যানেজিং কমিটি বা অর্গানাইজিং কমিটি। স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদরাসার অনুমোদন নিতে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড পাঠদানের অনুমতি ও একাডেমিক স্বীকৃতি দেবে। শর্তপূণ করে দুই বছর শেষে আবেদন করা যাবে। পাঠদানের অনুমতি পাওয়ার চার বছরের মধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতি না পেলে পাঠদানের অনুমোদন বাতিল হয়ে যাবে। একাডেমিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর শিক্ষকরা বেতন-ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।