পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দু’জন প্রধানমন্ত্রী ও দুটি সরকারের কোনটি বৈধ সেই বিতর্কে তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় চরম অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিরাজ করছে। এরই মাঝে প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা যখন তার নিয়োগ করা সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীকেই বহাল রাখার প্রশ্নে অনড় তখন চূড়ান্ত ফয়সালার জন্য সৃষ্টিকর্তা ও বিচারবিভাগের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া বিমূঢ় লঙ্কাবাসীর যেন করার কিছুই নেই।
পর্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে ৫ জানুয়ারি নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে প্রেসিডেন্টের জারি করা গেজেট ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে শ্রীলঙ্কার এই রাজনৈতিক দুর্যোগকালে সর্বোচ্চ আদালতের স্বাধীনতা অনেকের মনে আশার আলো জাগিয়ে রেখেছে।
আদালত এখন পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখছে। ৪, ৫ ও ৬ ডিসেম্বর আদালতে প্রেসিডেন্টের আদেশের পক্ষে-বিপক্ষে শুনানি হবে। ৭ ডিসেম্বর রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংসদ ভেঙে দেয়ার পক্ষে আদালত রায় দিলে নতুন নির্বাচন হবে। প্রেসিডেন্টের ঘোষণা অনুযায়ী নতুন পার্লামেন্ট বসবে আগামী বছরের ১৭ জানুয়ারি।
কিন্তু পর্লামেন্ট ভেঙে দেয়াকে অবৈধ ঘোষণা করা হলে পার্লামেন্টের বর্তমান প্রতিকূল বিন্যাস নিয়েই প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত চলতে হবে। ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টে বর্তমানে ইউএনপি ও এর মিত্র দলগুলো সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট বলে আসছেন যে, তিনি প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিঙ্গের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন না এবং কোন অবস্থাতেই তাকে ফের নিয়োগ দেবেন না। বিকল্প প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্টের হাতে রয়েছেন ইউএনপি’র উপনেতা সজিত প্রেমাদাসা। গত শনিবার ইউএনপি সূত্রগুলো জানায় যে, প্রেমাদাসা তার দলের প্রধান বিক্রমাসিঙ্গের অবাধ্য হতে রাজি নন। প্রেমাদাসা জানিয়েছেন, কেবল ইউএনপি’র পুরো সমর্থন পেলেই তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে রাজি। বর্তমান সঙ্কটকে আরো তীব্র বা নতুন কোন সঙ্কট তৈরি করবে এমন অবস্থায় তিনি কোন পদ গ্রহণ করবেন না।
প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসার বিরুদ্ধে ১৪ ও ১৬ নভেম্বর দুটি অনাস্থা ভোট স্বীকার করে নিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন সিরিসেনা। তিনি অভিযোগ করেন যে, স্পিকার কারু জয়সুরিয়া নিজ দল ইউএনপি’র প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেছেন। অনাস্থা ভোট সমর্থন করে ইউএনপি, মার্কসিস্ট জেভিপি, তামিল পার্টি, টিএনএ, দুটি ছোট মুসলিম দল এসএলএমসি ও এসিএমসি। তারা দাবি করে যে, পার্লামেন্টের সকল রীতিনীতি মেনেই এই অনাস্থা ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু সিরিসেনা-রাজাপাকসা শিবির এ কথা মানতে নারাজ। অনাস্থা প্রস্তাব আনার বিধিতে বলা হয়েছে: অন্তত ২০ জন এমপি স্পিকারের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করবেন। স্পিকার পরে পার্লামেন্টের সেক্রেটারি জেনারেলকে নিয়ে অনাস্থা প্রস্তাবের বৈধতা যাচাই করবেন। যাচাইয়ের পর সেক্রেটারি জেনারেলের সম্মতির ভিত্তিতে স্পিকার প্রস্তাবটি অর্ডার বুকে রেকর্ড করবেন। সংশ্লিষ্ট রেকর্ড বুকটি ছাপানোর পর কোন এক শুক্রবার সকল এমপি’র মধ্যে তা বিতরণ করা হবে।
অর্ডার বুকের বিষয়টি পার্লামেন্টের বিজনেস কমিটিতে উপস্থাপন করা হবে। এরপর অন্তত পাঁচ কার্যদিবস পর অনাস্থা প্রস্তাবটি বিতর্কের জন্য পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হবে। পার্লামেন্টের নেতা সবচেয়ে কাছের তারিখটি নির্ধারণ করবেন। সংবিধান, স্ট্যান্ডিং অর্ডার এবং পার্লামেন্টের রীতি ও পদ্ধতি মেনে উপরের প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করার দায়িত্ব পার্লামেন্টের।
কিন্তু গত সপ্তাহে যে দুটি অনাস্থা প্রস্তাব পাস করা হয় তার কোনটিতেই উপরের প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করা হয়নি। শুক্রবারের অধিবেশনে স্পিকার স্ট্যান্ডিং অর্ডার স্থগিত করেন। তিনি বলতে পারেন যে, বিশেষ পরিস্থিতির কারণে তিনি এটা করতে বাধ্য হয়েছেন। সেদিন পার্লামেন্টে রাজাপাকসার অনুসারিরা মারমুখো আচরণ করে।
পার্লামেন্টে স্ট্যান্ডিং অর্ডার অনুযায়ী কোন বিশেষ পরিস্থিতিতে কোন প্রস্তাবের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সদস্যের নেটিশে এক বা একাধিক স্ট্যান্ডিং অর্ডার স্থগিত করা যায়। রাজাপাকসার বিরোধীরা এই রীতি অনুসরণের দাবি করছেন।
কিন্তু স্ট্যান্ডিং অর্ডার স্থগিত করার পরপরই জেভিপি’র উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাবটি ভোটের জন্য পেশ করা হয়। এই প্রক্রিয়াকে ত্রুটিপূর্ণ বলছেন রাজাপাকসা-সিরিসেনা শিবির। তারা স্বাভাবিক পরিস্থিতির মতো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি বলে দাবি করছেন।
স্পিকার কণ্ঠভোটে যেভাবে প্রস্তাব পাস করেন তাকে ইউএনপি’কে বাঁচানোর চেষ্টা বলেও অভিযোগ করেছে রাজাপাকসা-সিরিসেনা।
এদিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসা গত সপ্তাহে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমানোর মতো জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বরখাস্তকৃত ইউএনপি সরকারের আমলে জ্বালানি তেলের দাম হুহু করে বাড়ছিলো। সকল আর্থিক বিষয় ছিলো ইউএনপি’র হাতে।
২০১৯ সালের বাজেট পেশ করার জন্য ইউএনপি গত তিন মাস ধরে প্রস্তুতি নিলেও গত তিন সপ্তাহে তা রাজাপাকসার সংরক্ষণবাদি/লোকরঞ্জক আর্থিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বদলে গেছে। প্রধানমন্ত্রী কাম অর্থমন্ত্রী রাজাপাকসা এখনো কোন ভোট অন একাউন্ট পার্লামেন্টে উত্থাপন করেনি। সরকারের দৈনন্দিন ব্যয় মেটানোর জন্য ৫ জানুয়ারির মধ্যে মধ্যে এটি পাস করাতে হবে।
এটা স্পষ্ট যে, রাজাপাকসার সামনে একটি বড় চিত্র রয়েছে এবং তিনি সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা তাকে পুরো ক্ষমতা সুসংহত করতে সাহায্য করবে। তাই তার আর্থিক পরিকল্পনায় এমন বিষয়গুলো থাকবে যা তাকে গ্রামীণ জনগণের ভোট পেতে সাহায্য করবে।
কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, ২৩ দিন ধরে চলতে থাকা ঘটনাবলী আসলে ইউএনপি’কেই রক্ষা করেছে, দলটির প্রতি জনপ্রিয়তা ঊর্ধ্বমুখি করেছে। দলটি এখন জনগণের চোখে গণতন্ত্রের বলি হিসেবে বিবেচিত হবে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনে বিক্রমাসিঙ্গের ইউএনপি ও প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার এসএলএফপি বেশ খারাপ করে। ওই নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয় পায় মাহিন্দা রাজাপাসকার নতুন দল এসএলপিপি। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।