Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গুলগুলাতে ঘুরল ভাগ্যের চাকা

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) থেকে মহসিন আলী মঞ্জু | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৫ এএম

দু’টি বেঞ্চ, একটি টেবিল, কিছু আসবাবপত্র নিয়ে গুলগুলা বিক্রির ছোট্ট একটি দোকান। এতেই ভাগ্যের চাকা বদলে গেল কুড়িগ্রাম জেলার সীমান্ত ঘেষা উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের জিয়াউর রহমানের। সে উপজেলার বড়ভিটা গ্রামের খরেজ্জামানের ছেলে। এক ভাই ও এক বোনের সংসার, অভাবের কারণে লেখাপড়া করতে পারেনি। একসময় কাজের সন্ধানে বিভন্ন জেলায় এমনকি ভারতের দিল্লিতে ইটভাটায়ও কাটিয়েছেন কয়েক বছর। তবুও অভাব পিছু ছাড়েনি তার। বাবা-মা, বোনকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে তাদের জীবন চলছিল। উপায় না পেয়ে ছোটবেলায় বাবার কাছ থেকে শেখা গুলগুলা তৈরির ব্যবসা শুরু করেন। তার বাবা এ ব্যবসায় সফলতা না পেলেও স্বল্প পুঁজির ব্যবসায় ভাগ্য খুলে যায় জিয়াউর রহমানের। আশপাশের চার-পাঁচ গ্রামের মানুষসহ দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে তার দোকানের তৈরি স্বাদের গুলগুলা খেতে। স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় পথচারীরাও তার ক্রেতা। প্রতিদিন বিকালে দোকান খুলে রাত ৯টার মধ্যে তৈরি সব গুলগুলা বিক্রি হয়ে যায়। নিত্য দিন আট-দশ কেজি ময়দা, তিন-চার কেজি চিনি দিয়ে তৈরি গুলগুলা তিন থেকে চার হাজার টাকা বিক্রি করেন। এতে লাভ হয় সাত-আটশ’ টাকা। বিশেষ কোনো দিনে নিত্যদিনের চেয়ে গুলগুলার বিক্রি বেশি হয়। গ্রামে এখন জিয়াউর রহমানের পরিবার হচ্ছে একটি স্বচ্ছল পরিবার। নিজে জমি কিনে বাড়ি করেছেন। কিছু আবাদি জমিও বন্ধক নিয়েছেন। ছেলে মেয়েদেরকে লোখাপড়া করাচ্ছেন। নিজে লেখাপড়া না শিখলেও ছেলেমেয়ের লেখাপড়া শিখিয়ে প্রতিষ্ঠিত করাই তার একমাত্র লক্ষ্য ।
জিয়াউর রহমান বলেন, গুলগুলা ময়দা, চিনি, লবণ, মসল্লা ও পানি দিয়ে প্রথমে মিশ্রণ তৈরি করা হয়। তারপর এটি ডুবা তেলে ভাজলে গোল, গোল লালচে রঙের হয়। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় ক্রেতারা সহজেই আকৃষ্ট হয়ে তা কিনে নেন। গুলগুলা বিক্রি করে সংসারে সফলতা এসেছে বলে সবাই তাকে গুলগুলা জিয়া বলে। বড়ভিটা গ্রামের মাঝিপাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নিজ চেষ্টা ও সততা দিয়ে স্বল্প পুঁজিতেও যে স্বাবলম্বী হওয়া যায় তার প্রমাণ জিয়াউর রহমান। তার পথ ধরে অনেকেই স্বাবলম্বী হতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ