পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে পেঁয়াজের মোট চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ করতে হয় আমদানির মাধ্যমে। ওই আমদানির প্রায় ৮০ শতাংশই আসে ভারত থেকে। আমদানি করা বাকি পেঁয়াজের সরবরাহ মূলত আসে চীন থেকে। এছাড়া, খুব সামান্য পরিমাণ পেঁয়াজ অস্ট্রেলিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিংগাপুর ও অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হয়। তাই ভারতে উৎপাদন কম হওয়া, শুল্ক বাড়ানো কিংবা আমদানির সময় বন্দরে কোনো জটিলতা হলে দ্রুতই বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। ফলে দেশে উৎপাদন যথেষ্ট হলেও বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেকাংশেই নির্ভর করে ভারতের ওপর।
গতকাল রোববার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) দুই দিনব্যাপী বার্ষিক গবেষণা সম্মেলন-২০১৮-এর উদ্বোধনী দিনে ‘অ্যাসেজিং কম্পিটিশন ইন অনিয়ন মার্কেট অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে আরও বলা হয়, দেশি পেঁয়াজের একটি বড় অংশের জোগান আসে পাবনা, ফরিদপুর ও রাজবাড়ি জেলা থেকে।
রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। বিআইডিএস মহাপরিচালক কে এ এস মুর্শিদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বেগম কাজল ইসলাম।
বিআইডিএস সম্মেলনে তুলে ধরা পেঁয়াজ নিয়ে গবেষণাটি করেছেন নাজনীন আহমেদ ও মাইনুল হক। তারা বলছেন, দেশের মোট সরবরাহের ৭২ দশমিক ৬৯ শতাংশ আসে দেশীয় উৎপাদন থেকে। এর মধ্যে পাবনায় উৎপাদন হয় ২৩ দশমিক নয় শতাংশ, ফরিদপুরে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং রাজবাড়িতে উৎপাদন হয় ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। এছাড়া, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, মানিকগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলাতেও কিছু পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেঁয়াজ বিক্রির অর্থের ৪৩ দশমিক ৯ শতাংশ পান উৎপাদক; কমিশন এজেন্ট ও আড়তদাররা পান ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ব্যাপারি ও ফরিয়ারা পান ৭ দশমিক ১ শতাংশ, পাইকাররা পান ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং খুচরা বিক্রেতারা পান ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, দেশে কোনো উৎসব হলেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। তাছাড়া বন্দরগুলোতে যখন কোনো জটিলতা দেখা দেয়, তখন পেঁয়াজের ওজন কমে যায়। ফলে আমদানীকারকরা দাম বাড়িয়ে এই ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা করেন।
বিআইডিএস সম্মেলনে ‘দ্য রাইজ অব ল্যান্ডলেস টেন্যানসি ইন রুরাল বাংলাদেশ : অ্যানালাইসিস অব দ্য রিসেন্ট ইভিডেন্স’ শীর্ষক আরেকটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। এই প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃষিতে বর্গা চাষিদের অবদান বাড়ছে। অন্যদিকে বর্গা চাষে অবদান বাড়ছে ভূমিহীন মানুষের।
গবেষণাটি উপস্থাপন করেন বি আইডিএসের গবেষণা পরিচালাক বিনায়ক সেন। তিনি বলেন, ১৯৮৮ সালে মোট চাষযোগ্য জমির ২৩ দশমিক চার শতাংশ বর্গচাষ হতো। ২০০০ সালে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৮ শতাংশে। ২০০৮ সালে সেটি আরও বেড়ে হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালে দাঁড়িয়েছে ৪৭ দশমিক ৫ শতাংশে।
অন্যদিকে মোট যে পরিমাণ মানুষ বর্গা চাষ করত, তার মধ্যে ১৯৮৮ সালে গ্রামীণ ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। সেটি বেড়ে ২০০০ সালে হয়েছে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনীতির মতে বর্গা চাষের কারণে কৃষি অদক্ষ হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা হয়নি। এ দেশে বর্গা চাষিরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গেই কৃষিকাজ পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ বর্গা চাষিই টাকার বিনিময়ে জমি ভাড়া নিয়ে থাকেন। ফলে তরা তাদের সর্বোচ্চ মুনাফা করেই জমির মালিককে টাকা পরিশোধ করছেন। এর পেছনে ক্ষুদ্র ঋণের সহজলভ্যতা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, কৃষি উপকরণের সহজলভ্যতা বর্গা চাষিদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। তবে বিকাশ কিংবা এজেন্ট ব্যাংকিং সুবিধা কতটুকু দক্ষতা বাড়িয়েছে, তা গবেষণার দাবি রাখে।
একই সম্মেলনে ‘হোয়াই ডু বাংলাদেশি ক্যাটল ইয়েল্ড হাই পজেটিভ রিটান’ শীর্ষক আরও একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন কাজী আলী তৌফিক, কাজী ইকবাল ও ওয়াহিদ ফেরদৌস ইবন।
এই গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মহিষের তুলনায় গরু উৎপাদন লাভজনক। কেননা গরুর উৎপাদনের পর তা থেকে ৪৬ শতাংশ রিটার্ন পাওয়া যায়। আর মহিষ উৎপাদন করে তা থেকে মাত্র ১৫ শতাংশ রিটার্ন আসে। মহিষের তুলনায় গরুতে আয় করা সহজ হয়। তবে উল্টো চিত্র ভারতে। সেখানে আবার গরুর তুলনায় মহিষে রিটার্ন বেশি আসে।
বাংলাদেশে গরীব মানুষরা বেশি গরু পালন করেন। তারা এর মধ্য দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা চালান। ফলে দারিদ্র নিরসনে বিশেষ ভূমিকা রাখছে গরু পালন। এক্ষেত্রে যারা গরু পালন করেন, তাদের মধ্যে অর্থপ্রবাহ বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে লাইভস্টক সংক্রান্ত সব সুবিধা সহজলভ্য করতে হবে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।