পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ময়মনসিংহে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন ও মানুষের সেবা করার জন্য আবারো নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জনসভায় উপস্থিত লাখো মানুষকে ওয়াদাও করিয়েছেন।
ময়মনসিংহবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেছেন, আমার কোন চাওয়া-পাওয়া নেই। আপনাদের সেবা করাই আমার কাজ। সকলে সুন্দরভাবে বাঁচবেন, উন্নত জীবন পাবেন সেটা আমরা চাই। ময়মনসিংহ বিভাগের কার্যক্রম যেন সুন্দরভাবে চলতে পারে সেই সহযোগিতা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন জানিয়ে কবির ভাষায় বলেন, ‘নি:স্ব আমি, রিক্ত আমি দেবার কিছু নেই। আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’।
শুক্রবার (২ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তিনি মঞ্চের পাশে ময়মনসিংহ বিভাগের ১৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহে আলাদা শিক্ষাবোর্ড, বিভাগীয় স্টেডিয়াম ও নভোথিয়েটার করার ঘোষণাও দেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যখন শিয়রে ঠিক তখন সরকার প্রধান হিসেবে নিজের এই শেষ জনসভায় ময়মনসিংহে এই জনসভায় জনতার স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতিতে খুশি প্রধানমন্ত্রী। প্রায় ৩৯ মিনিটের দীর্ঘ ভাষণে তিনি বলেন,
বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডের পর ৬ বছর বিদেশে রিফিউজি ছিলাম। আমি আওয়ামী লীগের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই এবং ধন্যবাদ জানাই বাংলার জনগণকে। আওয়ামী লীগ আমাকে আমার অবর্তমানে ১৯৮১ সালে সভাপতি নির্বাচিত করে। দেশের মানুষ অকুন্ঠ সমর্থন দেয় আমাকে।
আমি আমার ছোট ছোট দুই সন্তানকে ফেলে মাতৃ¯েœহ বঞ্চিত করে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফিরে আসি। এই জনগণের জন্যই জাতির পিতা শেখ মুজিব সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন, কষ্ট শিকার করেছেন, জেল-জুলুম-অত্যাচার সহ্য করেছেন। আমি এসে বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য।
১৯৯৬ সাল ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এই ২১ বছর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অকথ্য অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়। আমি ক্ষমতায় এসে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পর্ণ করি। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করি, স্কুল-কলেজ রাস্তাঘাট উন্নয়ন করি।
বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের। ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারলাম না। ষড়যন্ত্র করে আমাদেরকে হারানো হলো, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতির পিতার নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৪ বছরের সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুেেদ্ধর মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধ কন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা মাত্র সাড়ে ৩ বছর সময় হাতে পেয়েছিলেন। এই সমযের মধ্যে একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এই লক্ষ্য নিয়ে একটি উন্নত জীবন দান করবেন এই চেতনা থেকে তিনি আমাদের একটি সংবিধান উপহার দেন।
জাতির পিতা শুধু স্বাধীনতাই দিয়ে যাননি। তিনি আর্থক সামাজিক উন্নয়ন কীভাবে হবে সেই কাজও শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনিদের বিচার হয়নি। একটি মানুষ তাঁর আতœীয় স্বজন মারা গেলে বিচার চাইতে পারে। আমি ও ছোট বোন রেহনার কাছ থেকে সেই অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল। আমরা বাবা-মা-ভাই-হত্যার বিচার চাইতে পারতাম না। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স দিয়ে সেই বিচার বন্ধ করে।
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের বর্ষীয়াণ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা এই জনসভায় সভাপতিত্ব করেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড.আব্দুর রাজ্জাকা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন, ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল, ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনের সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদ, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম প্রশাসক ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আমিনুল হক শামীম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো: ইকরামুল হক টিটু প্রধানমন্ত্রীকে একটি চাবি উপহার দেন। প্রধানমন্ত্রী হাসিমুখে এই উপহার গ্রহণ করেন। এই সময় টিটু’র সঙ্গে ছিলেন মহানগর আ’লীগ সভাপতি এহতেশামুল আলম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদ।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কারো ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করে না বলেও মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণ করে। বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৩, ১৪, ১৫ নারকীয় তান্ডব চালিয়েছে। বিশেষ করে ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে আগুন দিয়ে ৩ হাজার ৯’শ মানুষকে পুড়িয়েছে। তাঁরা ৫’শ মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। হাজার হাজার গাড়ি, রেললাইন, লঞ্চ পুড়িয়ে দিয়েছে। মানুষের স্বাভাবিকভাবে চলাফেরার কোন অধিকার ছিলো না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের টানা দুই মেয়াদে ১০ বছরে বাংলাদেশ দারিদ্র যেখানে ৪০ ভাগ ছিলো, সেখানে ২১ ভাগে নেমে এসেছে। আগামী দিনে নির্বাচন। পূর্বে আপনারা যেভাবে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন, আগামী দিনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে এই দারিদ্রসীমায় আমরা যেন আরো ৫ থেকে ৬ ভাগ কমাতে পারি তাঁর জন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমাদের যুব সমাজ, তরুণরাই আমাদের শক্তি। আমরা লেখাপড়ার জন্য প্রাইমারী স্কুল থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত ২ কোটি ৪ লক্ষ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি এবং উপবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি।
যাতে আমাদের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শিখতে পারে। এর মধ্যে প্রাইমারী শিক্ষার ১ কোটি ৪০ লাখ মা, ওই প্রাইমারী শিশুদের উপবৃত্তি মায়ের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরাসরি আমরা পৌছে দিচ্ছি মায়ের হাসি প্রকল্পের মাধ্যমে।
২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ময়মনসিংহ অঞ্চলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ব্যাপক নির্যাতনের কথাও তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৮ কী অবস্থা ছিলো বাংলাদেশের? এই ময়মনসিংসহ এই অঞ্চলের প্রত্যেকটি জেলায় আমাদের অগণিত নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার হয়েছে।
আমাদের ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান ও নেত্রকোণার প্রয়াত জালাল উদ্দিন তালুকদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবে অগণিত নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে অত্যাচার ও নির্যাতন করেছে। তিনি বলেন, এই ময়মনসিংহে আমরা হারিয়েছি আমাদের আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল হক, গিয়াস উদ্দিন, আব্দুল বারেক, আব্দুস সোবহান, কামাল, আলমগীর, মফিজ উদ্দিন, রফিকুল, আজাদ, আবুল হামেশমকে। তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট। স্বেচ্ছাসেবক লীগের রফিকুল ইসলাম, যুবলীগের লিয়াকতসহ অনেক নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ময়মনসিংহের চারটি সিনেমা হলে সিরিজ বোমা হামলাতেও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মামলায় নির্যাতনের কথাও পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০০২ সালের ৭ ডিসেম্বর ঈদের পর দিন ময়মনসিংহের ৪ টি সিনেমা হলে বোমা ফুটলো। নিহত ১৮ জন। প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছে।
সেই সময় আমাদের আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান ও জালাল উদ্দিনসহ অনেককে গ্রেফতার করে অত্যাচার করেছে। জোট আমলে ওই ২০০১ থেকে ২০০৬ এই এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলের নারীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, গণধর্ষণ করেছে ৭১’র পাক হানাদারদের মতো।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ‘দুর্ভেদ্য ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত গফরগাঁওয়ের দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপরও বিএনপি জোটের তান্ডবের বর্ণনা দেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আমাদের যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামানের হাতের ১০ টি আঙুল কেটে দিয়েছিলো।
বসতবাড়ি দখল করে ওই গফরগাঁওয়ে রাতারাতি পুকুর করা হয়েছিল। খুন, হত্যা, দখল, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাই সৃষ্টি আর মানি লন্ডারিং এসব ছিলো বিএনপি’র কাজ।
তিনি বলেন, ওই সময় সরকার ছিলো সেই সময় হাওয়া ভবন। ওই ’হাওয়া ভবনের খাওয়া মিটাতে গেয়ে দেশের কোন উন্নয়ন হয়নি, সব অর্থ পাচার হয়েছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়। আর সেই ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা সরকার গঠন করি।
২০০৮ থেকে আজ ২০১৮ প্রায় ১০ বছর আমরা আপনাদের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছি। আজকে আমি এই ময়মনসিংহ বিভাগ ঘোষণা দিয়েছি। এই বিভাগের সার্বিক উন্নয়নে আপনাদের জন্য আমি উপহার নিয়ে এসেছি। কিছুক্ষণ আগেই আমরা সেগুলো উদ্বোধন করেছি। এরপর প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহে উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা ১৯৫ টি প্রকল্পের নাম পড়ে শোনান।
ডিজিটাল বাংলাদেশের উদাহরণ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল। প্রতি উপজেলায় ব্রড ব্যান্ড এবং ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করেছি। আজকে আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উপৎক্ষেপণ করে মহাকাশ জয় করেছি। আমরা যে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি, আপনারা সেখানে বসে নিজেরা অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
নিজের দেশে বসে বিদেশে অর্থ উপার্জন করতে পারেন, সেই সুযোগ করে দিয়েছি। আজ সবার হাতে হাতে মোবাইল। এটি বিএনপি’র সময় ছিলো না। ৯৬’এ আ’লীগ ক্ষমতায় আসার পর সবার হাতে মোবাইল ফোন পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা নেই।
দৃঢ়তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলতে থাকেন, আমরা কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। মাল্টি মিডিয়া ক্লাস রুম করে দিচ্ছি। কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়ে জনগণের দৌরগোড়ায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনা পয়সায় মা-বোনদের হাতে তুলে ধরছি। বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ং সম্পর্ণতা অর্জন করেছে।
বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা দিচ্ছি। মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ সম্মানী ভাতা দিচ্ছি। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভাতার ব্যবস্থা করেছি। সমাজে কেউ বাদ থাকবে না সবার উন্নয়ন হবে এই চিন্তা থেকেই রাষ্ট্র পরিচালনা করি।
খুলনার মতো ময়মনসিংহকেও ভিক্ষুকমুক্ত করার ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা ভিক্ষুকমুক্ত করবো। আমি যখন সকল অফিসারদের বেতন বাড়াই। তখন আমাদের খুলনা জেলার ডিসি, এসপি, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার প্রথম নিজেদের বেতনের একদিনের বেতন দিয়ে একটি ফান্ড তৈরি করে। আজ খুলনা ভিক্ষুকমুক্ত।
ঠিক সেইভাবে ময়মনসিংহ বিভাগও ভিক্ষুকমুক্ত হবে। আমি ইতোমধ্যেই আমাদের অফিসারদের টাকার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকেও টাকা দিচ্ছি। কোন মানুষ ভিক্ষা করবে না। প্রত্যেক মানুষ কাজ করে খাবে, আর যারা কর্মক্ষম না তাদের ভাতার ব্যবস্থা এবং বিনা পয়সায় খাদ্যের ব্যবস্থা করে দিবো।
তিনি বলেন, এই বাংলাদেশ জাতির পিতার বাংলাদেশ। এখানে কেউ ভিক্ষুক থাকবে না, ক্ষুধার্ত থাকবে না, রোগে কষ্ট পাবে না, কেউ অশিক্ষিত থাকবে না। সকলের শিক্ষা, চিকিৎসা ও খাদ্যের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। এবার বৃষ্টিতে যেসব রাস্তাঘাট নষ্ট হয়েছে আমাদের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে যাতে প্রতিটি এলাকায় এলাকায় রাস্তার উন্নয়ন হয়। চলাফেরা আরো উন্নত হয়।
শেখ হাসিনা প্র্রতি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামি কালচারাল সেন্টার করে দেওয়ারও অঙ্গীকার করেন। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব উন্নয়নের রোল মডেল, এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা আমরা অর্জন করতে পেরেছি কেন জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন বলেই। এটা আমি মনে করি, এটা আমাদের কর্তব্য বাংলার মানুষ যেন ভালোভাবে বাঁচতে পারে। দুই বেলা পেটভরে খেতে পারে।
প্রতিটি মানুষের ঘর থাকবে। কোন মানুষ গৃহহারা থাকবে না। ইতোমধ্যেই ডিসিদের কাছে নির্দেশ আছে একটি মানুষও যেন গৃহহারা ও ভূমিহীন না থাকে। তাদের সকলকে আমরা বিনা পয়সায় আশ্রয়ণ প্রকল্প, আদর্শ ও গুচ্ছগ্রামের মাধ্যমে ঘর তৈরি করে দিচ্ছি।
নামকাওয়াস্তে বিভাগ নয় ময়মনসিংহ, এমন মন্তব্য করে সরকার প্রধান বলেন, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সদর দপ্তর প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলাম, এর কাজ শুরু হবে। যেখানে আমি মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছিলাম এখন সেখানে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছি।
৯৩ ভাগ মানুষ আজ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। আমরা প্রতিটি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন হবে তেমনি ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। ময়মনসিংহের ১৯৫ টি প্রকল্পের কাজ শুরু হলে বেকারত্ব দূর হবে।
ঠাঁই ছিলো না তিল ধারণের, শোডাউনের হিড়িক নেতাদের
দলে দলে মিছিল, ব্যানার, বাদ্য বাজনা আর ফেস্টুন আর দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে খরতাপ উপেক্ষা করে বাস, ট্রেন, ট্রাক, পিকআপ চেপে এসেছিলেন অগণিত মানুষ। সবার ঠিকানা ছিলো ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ ময়দান। শোডাউনে বরাবরের মতো এবারো তাক লাগিয়েছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম প্রশাসক ও পৌরসভার বিদায়ী মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু। নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের একীভূত করে তিনি শোডাউন করেন। প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণাতেও তিনি ছিলেন শীর্ষে।
এই জনসভায় রেকর্ড সৃষ্টি গড়েছেন ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেলও। তাঁর বক্তব্যের সময়েই গফরগাঁওয়ের নেতা-কর্মীদের ¯্রােত মাঠের দিকে প্রবেশ করতে থাকে। এই সময় ‘বাবেল ভাই, বাবেল ভাই’ স্লোগান উচ্চারিত হয়। অনেকেই বলছেন, প্রয়াত বাবা আলতাফ হোসেন গোলন্দাজের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই এই জনসভাতেই সবার দৃষ্টি কেড়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চের ঠিক সামনেই ব্যানার-ফেস্টুন হাতে দেখা যায় ত্রিশাল পৌরসভার জনপ্রিয় মেয়র ও উপজেলা আ’লীগের সদস্য এ.বি.এম.আনিসুজ্জামানের সমর্থক নেতা-কর্মীদের। ওই উপজেলা থেকে সর্বোচ্চ শোডাউন নিয়ে জনসভায় যোগ দেন মেয়র আনিস। স্থানীয়দের মতে, অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের থেকেও তিনি ছিলেন এগিয়ে।
এছাড়া ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগ আহবায়ক মোহাম্মদ শাহীনুর রহমান, শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন আরিফও শোডাউন করেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো: ইকরামুল হক টিটু’র পক্ষে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।