পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোন সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে রাজনীতি থেকে, আগামী নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে মিথ্যা মামলায় তাকে কারাগারে আটক করে রেখেছে। এমনকি জামিন পেলেও তাকে জামিন দেয়া হয়নি। একটার পর একটা মামলা দিয়ে তাকে আটক করে রাখা হচ্ছে। এই ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়, সরকার একদিকে সংলাপের প্রস্তাব পাঠিয়েছে আর অন্যদিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি করে সাংঘর্ষিক অবস্থান নিয়েছে। এটা গণতান্ত্রিক কোন আচরণের প্রতিফলন ঘটায় না। সংলাপের যে আন্তরিকতা সেই আন্তরিকতা প্রমাণ করে না।
গতকাল (বুধবার) দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি বেলা ১১টায় শুরু হয়। তবে সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে ও আশপাশে জড়ো হতে থাকেন। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের উপস্থিতি হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে যান বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বেলা ১১টায় বিএনপি মহাসচিব মানববন্ধনে এসে উপস্থিত হলে এসময় চারিদিকে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল বলেন, দুঃভাগ্য আমাদের আজকে বিচার ব্যবস্থা সরকারের সম্পূর্ণ করায়ত্ত¡ হয়ে গেছে। সাবেক বিচারপতি এসকে সিনহা তার বইয়ে লিখেছেন বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে সরকারের নিয়ন্ত্রণে। এখানে বিচার বিভাগের কোন স্বাধীনতা নেই। সেজন্যই তাকে দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য, গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে ফিরে পাবার জন্য, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, জনগণের অধিকার ফিরে পাবার জন্য আমরা দীর্ঘকাল ধরে আন্দোলন করছি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া তার জীবনের সায়াহ্নে এসে কারাবরণ করেছেন শুধুমাত্র একটি কারণে গণতন্ত্র ও মানেষের অধিকার ফিরিয়ে আনবার জন্য।
সরকারকে গণতন্ত্রের পথে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনুগ্রহ করে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন। আপনারা এমনটা একটা নির্বাচন দিতে চাচ্ছেন যেই নির্বাচনে আপনারা হেলিকপ্টারে করে জনগণের কাছে যাচ্ছেন, ভোট চাচ্ছেন আর আমাদের নেত্রী কারাগারে, আমরা পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমাদের কর্মীরা কোথাও দাঁড়াতে পারেনা। এই অবস্থায় কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আলোচনায় যাবো তবে আমাদের ৭ দফা দাবি পুরোটাই মেনে নিতে হবে। সবার আগে অবশ্যই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন ও ইভিএম বাতিল করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে কোন নির্বাচনই অর্থবহ হবে না।
প্রধান অথিতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাদ দিয়ে ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু বিএনপিকে ছাড়া কোনো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, হতে দেয়াও হবে না। জাতীয় ঐক্যফ্যন্টের সাত দফা দাবি মেনে নিয়ে একটি অবাধ নির্বাচনের আয়োজন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তা না হলে সৃষ্ট অরাজকতার জন্য, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জন্য সরকার দায়ী থাকবে।
সংলাপ, আন্দোলন, নির্বাচন একসাথে চলবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তিনি বলেন, এতদিন যাবত যে কৌশল নিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছি সেটি ফলপ্রসূ হয়েছে। সরকার সংলাপ করতে সম্মত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীরা সংলাপে নাকোচ থাকলেও এখন তারা দেশের মানুষের মনের কথা উপলদ্ধি করায় তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, সংলাপে ৭ দফার আলোকেই আলোচনা হবে। সংলাপ, আন্দোলন, নির্বাচন একসাথে চলবে। যতদিন পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, মেজর (অবঃ) রুহুল আলম চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, মশিউর রহমান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ, অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেন, মহানগর উত্তরের বজলুল বাসিত আঞ্জু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক খান, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস ছাত্রদলের আসাদুজ্জামান আসাদ, যুবদলের মোরতাজুলল করিম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান প্রমূখ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফরহাদ হালিম ডোনার, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, শরাফত আলী সপু, নূরে আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, নাজিমউদ্দিন আলম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শামীমুর রহমান শামীম, হারুনুর রশীদ, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, নূরুল ইসলাম খান, রাজীব আহসানসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।
গণঅনশন আজ: বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজা বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে আজ রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গণঅনশন করবেন দলটির নেতাকর্মীরা। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।