দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
উত্তর: পরিবার আনন্দ উল্লাস ও সূখ-দু:খ ভাগাভাগির স্থান। পরিবার একজন ব্যক্তিকে তার নিজস্ব সমাজ ব্যবস্থার আচার-আচরণ ও মূল্যবোধের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। আমাদের ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে পরিবারের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এজন্যে পরিবারের শান্তি, স্বচ্ছলতা, রহমত, বরকত ও কল্যাণের বিষয়টি সর্বাগ্রে বিবেচনায় রাখতে হয়। নামাজ এমনই একটি আমল ও ইবাদত যার মাধ্যমে পরিবারে কল্যাণ ও বরকত আসে। যে সকল পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত নামাজ আদায় করে। আল্লাহর রহমত তাদের মূখোমুখী থাকে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই ঐ সকল ঈমানদারগণ সফলকাম হয়েছে, যারা তাদের নামাজ খুশু-খুযুর সাথে আদায় করে।’ (সূরা মুমিনূন:১-২)। যে সকল গৃহে সালাত আদায় করা হয় না, ওই গৃহ গুলোকে হাদিসের পরিভাষায় কবরের সাথে তুলনা করা হয়েছে। হযরত ইবনে উমর (রা:) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূল (সা:) এরশাদ করেছেন, তোমাদের ঘরেও সালাত আদায় কর এবং ঘরকে কবরে পরিণত কর না। (বোখারি: ৪২০)। হযরত জাবির (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, হযরত রাসূল (সা:) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে (ফরজ) নামাজ আদায় করে, তখন তার উচিত নিজের ঘরের জন্য (সুন্নত ও নফল) নামাজের কিছু অংশ নির্দিষ্ট করা। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তার নামাজের কারণে তার ঘরে বরকত দান করবেন। (মুসলিম পৃ.২৬৫ ১ম খন্ড)। হযরত আবু মুসা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা:) এরশাদ করেছেন, যে ঘরে আল্লাহর আলোচনা হয় আর যে ঘরে হয় না তাদের উপমা যথাক্রমে জীবিত ও মৃত সদৃশ। (মুসলিম পৃ.২৬৫ ১ম খন্ড)।
সমাজের বহু পরিবারে ঝগড়া, বিবাদ, মারামারি ও কলহ লেগেই আছে। পরিবারিক কলহকে কেন্দ্র করে হত্যা ও আত্মহত্যার ঘটনাও অহরহ ঘটে। পারিবারিক কলহ কিংবা যৌত‚ককে কেন্দ্র করে তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা এখন নিত্য-নৈমিত্তিক বিষয়। যার ফলে পারিবারিক বন্ধন নষ্ট হচ্ছে। সমাজের মূল্যবোধ নষ্ট হচ্ছে। পিতামাতার বিবাহ বিচ্ছেদের বিরূপ প্রভাব সন্তানের উপর গিয়ে পড়ছে। যে সকল সন্তানের পিতামাতার মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে, সে সকল সন্তানের বেড়ে উঠা কিংবা সুনাগরিক হয়ে উঠা অনেক দুরূহ ব্যাপার। পারিবারিক কলহ ঝগড়াঝাটি বা মারামরি করা মন্দ কাজ। কোরআনে এরশাদ হয়েছে,‘নিঃসন্দেহে সালাত অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সূরা আনকাবূত: ৪৫)। তাই, পরিবারে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে উদাসীনতা পরিহার করা খুবই জরুরী।
বহু পরিবার অভাব অনটন ও ঋণের বোঝায় জর্জরিত। অনেকের ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দাভাব রয়েছে। নামাজ আদায়কারী ব্যক্তির উপর আল্লাহর রহমত নিকটবর্তী থাকে। তাই নামাজি ব্যক্তির ব্যবসায়িক মন্দাভাব সহজে দূর হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা নামাজি ব্যক্তিকে সকল প্রকার আজাব-গজবের হাত থেকে রক্ষা করেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে, সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে দান করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সূরা ফাতির:২৯)। আল্লাহ তায়ালা সকলকে ফরজ নামাজ ব্যতিত সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরের আদায় করার তৌফিক দান করুক। আমীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।