Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ছোট হচ্ছে মন্ত্রিসভা!

ইয়াছিন রানা | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছোট হচ্ছে মন্ত্রিসভা। জাতীয় ঐক্যফন্টের সঙ্গে সংলাপে সমঝোতা হলে তফসিলের পরপরই ছোট আকারে গঠন করা হতে পারে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা। সরকারের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান না ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর মত এবারও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কথা উঠুক। তাই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য যেমন সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে, ঠিক তেমনি একই কারণে মন্ত্রিসভার আকারও ছোট করা হবে।
সূত্র বলছে, বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট এ সরকারের অধিনে সংবিধান অনুযায়ী বিনা শর্তে নির্বাচনে আসলে মন্ত্রিসভা ছোট হবে। যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে ছোট করা হবে না। আর মন্ত্রিসভা ছোট করা হলে ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজন নেতাকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে। তবে বিষয়টি এখন পর্যন্ত সংলাপের সমঝোতার উপর নির্ভর করছে।
সংলাপের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেন, সংবিধানের আলোকে সংলাপ হবে। সংবিধানের বাইরে কিছু হবে না। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দেশ সাংবিধানিকভাবে চলছে। সংবিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বর্তমান সরকার কোনো কিছু করেনি। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার জন্য ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক সিদ্ধান্তে বিদেশি কোনো চাপ ছিল না।
আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী সূত্র বলছে, সংবিধান অনুযায়ী আলাপ বা সংলাপ হলে তা অবশ্যই সফল হবে। সংবিধানের বাইরে কোন দাবি করলে সংলাপের বিষয় সফল না-ও হকে পারে। তবে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের নেতৃত্ব দেবেন তিনি সর্বোচ্চ ছাড় দেবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষমতাসীন একজন প্রভাবশালী নেতা জানান, ঐক্যফ্রন্টের দুই একটি দাবি সংবিধান সম্মত রয়েছে যা মানা সম্ভব। কিন্তু ঐক্যফ্রন্টকেও ছাড় দিতে হবে। তারা ছাড় দিলে সম্মিলিতভাবে একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করে সুন্দর একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার সদস্য ত্রিশজন হলে তিন জন টেকনোক্র্যাট থাকতে পারবেন। যা আওয়ামী লীগের জন্যও কোন সমস্যার হবে না। তবে পুরো প্রক্রিয়াটি খুব জটিল এবং নির্বাচনের আগ পর্যন্ত খুব শক্তহাতে তা সামলাতে হবে বলে মন্তব্য এই নেতার।
এর আগে ২২ অক্টোবর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার আকার ছোট হচ্ছে না ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের প্রয়োজন আছে কিনা? মন্ত্রিসভা ছোট হলে উন্নয়ন কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তবে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে আলাপ করবেন তিনি। যদি বিরোধী দল চায় তাহলে নির্বাচনকালীন সরকারের আকার পরিবর্তন হবে। এরপর দিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, মন্ত্রিসভা বড় থাকলেও দুই একজন নতুন যুক্ত হতে পারে।
আওয়ামী লীগের সূত্র বলছে, মন্ত্রিসভা ছোট না বড় হবে তা নির্ধারণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য যা দরকার তিনি তা করবেন। তবে যেহেতু নির্বাচন প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ হচ্ছে সেজন্য নির্বাচনী কাজ গতিশীল করার জন্য মন্ত্রিসভা ছোট করা প্রয়োজন। আর মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য নিজ এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন বিতর্কিত করতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান না গতবারের মত এবারও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কথা উঠুক।
এদিকে সরকারের মন্ত্রিসভার আকার ছোট না হলে দল বা বিরোধীদল কাউকে নির্বাচনমুখি করা যাবে না। দলের প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের মধ্যে দাম্ভিকতা কাজ করবে যে আমরা ক্ষমতায় থাকবোই, নির্বাচন যেমনই হোক না কেন। এছাড়া দলের মধ্যে বিভিন্ন আসনে যে কোন্দল রয়েছে, বিদ্রোহী প্রার্থীর যে সম্ভাবনা রয়েছে তা যদি দলের নীতি-নির্ধারকরা সমাধান করতে চেষ্টা না করেন তাহলে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। তাই নির্বাচনের সময়ে সরকারের চাইতে দলের বিষয়ে বেশি মনোযোগী হতে হবে কেন্দ্রীয় সংগঠনকে। এছাড়া কেন্দ্রীয় নেতারাও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে মনোনয়ন দ্ব›েদ্ব জড়িত।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মন্ত্রিসভা

১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ