পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহিন্দা রাজাপাক্সের নিয়োগে টনক নড়েছে ভারতের। নয়াদিল্লী তড়িঘড়ি করে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু করেছে এ শক্তমানবের সাথে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ মাহিন্দা রাজাপাক্সেই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট থাকাকালে চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারত মহাসাগরের এ দ্বীপ রাষ্ট্রটি ভারত ও চীনের মধ্যে দ্ব›েদ্বর ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। চীন এশিয়াব্যাপী তার বাণিজ্য ও পরিবহন সংযোগ মহাপরিকল্পনা বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অঙ্ক হিসেবে শ্রীলঙ্কায় বন্দর, বিদ্যুত কেন্দ্র ও মহাসড়ক নির্মাণ করেছে। রাজাপাক্সে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে শ্রীলঙ্কার প্রধান বন্দর চীনা সাবমেরিনের জন্য উন্মুক্ত করে দেন যা ভারতকে ক্ষিপ্ত করে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা কর্তৃক আকস্মিক ভাবে তার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন নয়াদিল্লীতে এ উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে যে চীন জাহাজ চলাচলের ব্যস্ততম পথের পাশে অবস্থিত এ দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে তার নিয়ন্ত্রণ আরো দৃঢ় করবে।
নয়াদিল্লীর জওয়াহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারত-চীন সম্পর্ক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও এশিয়ার দুই শক্তিমান দেশের আঞ্চলিক প্রতিদ্ব›িদ্বতার বিষয়ে নজর রাখা বিশেষজ্ঞ শ্রীকান্থ কোনদাপ্পালি বলেন, এ মুহূর্তে চীন সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। তিনি বলেন, চীন রাজাপাক্সে এবং দক্ষিণ শ্রীলঙ্কায় তার রাজনৈতিক সংসদীয় আসন হাম্বানটোটায় বিনিয়োগ করেছে। তারা ১৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে সেখানে একটি গভীর পানির বন্দর ও একটি বিমান বন্দর নির্মাণ করেছে এবং একটি শিল্প এলাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে।
রাজাপাক্সে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর তার সাথে প্রথম সাক্ষাতকারী ক‚টনীতিকদের মধ্যে ছিলেন শ্রীলঙ্কায় চীনা রাষ্ট্রদূত চেং জুয়েউয়ান। তিনি তাকে চীনা প্রধানমন্ত্রী লে কেকিয়াং-এর পাঠানো অভিনন্দন বার্তা প্রদান করেন। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা জোট সরকার ভেঙে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রেমাসিঙ্গেকে বরখাস্ত ও মাহিন্দা রাজাপাক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের কথা ঘোষণা করলে শ্রীলঙ্কা এক রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হয়।
ভারতপন্থী হিসেবে যাকে দেখা হয় সেই বিক্রেমাসিঙ্গে বলেন, তার বরখাস্ত অবৈধ। তিনি এখনো প্রধানমন্ত্রী এবং পার্লামেন্টে তার প্রতি গরিষ্ঠসংখ্যকদের সমর্থন আছে। শ্রীলঙ্কা হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে নেপাল হয়ে মালদ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত সেই দেশগুচ্ছের একটি যেখানে চীন-ভারতের প্রতিদ্ব›িদ্বতা ক্রিয়াশীল। মালদ্বীপে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিস্ময়কর ফলাফলে চীনপন্থী প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন পরাজিত হয়েছেন। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মালদ্বীপের এ নির্বাচনী ফলকে স্বাগত জানিয়েছে। নয়াদিল্লীতে কর্মকর্তারা বলেন, ভারতীয় ক‚টনীতিকরা রাজাপাক্সের শিবিরের সাথে যোগাযোগ রেখেছেন। তার নিয়োগ যতক্ষণ সংবিধানানুগ থাকবে ততক্ষণ তারা নয়া নেতার সাথে কাজকর্ম চালিয়ে যেতে প্রস্তুত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, ভারত শ্রীলঙ্কার জনগণের জন্য উন্নয়ন সাহায্য প্রদান অব্যাহত রাখবে। পৃথকভাবে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী জোটের আদর্শিক জনক সংগঠন রাষ্ট্রীয় সমাজ সেবক সংঘ (আরএসএস) সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য রাজাপাক্সের সাথে সাক্ষাত করেছে বলে দলীয় সূত্র জানায়। ট্র্যাক ২ ক‚টনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট আরএসএস নেতা শেষাদ্রি চারি বলেন, তিনি আস্থাশীল যে শ্রীলঙ্কার নয়া নেতার নেতৃত্বে নয়াদিল্লী ও কলম্বো সম্পর্ক উন্নত করার জন্য কাজ করবে।
তিনি বলেন, পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় আমাদেরকে আমাদের জাতীয় স্ব-স্বার্থ রক্ষায় বাস্তব ও ব্যবহারিক হতে হবে ও ভালোভাবে কাজ করতে হবে। মোদি সরকারের উপর আরএসএসের প্রভাব রয়েছে এবং তারা কিছু প্রতিবেশির সাথে বেসরকারি ভাবে মধ্যস্থ হিসেবে কাজ করে থাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলেূাতে চীন সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে যে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও অন্যান্য দেশে তার অনেক বিনিয়োগই গরিব দেশলোকে ঋণের ফাঁদে ফেলার ও পরিণতিতে সে দেশের সম্ভাব্য সার্বভৌমত্ব ব্যাহত করার ঝুঁকির সম্মুখীন করছে।
ভারত সরকারের একটি সূত্র জানায় যে আমরা চীনের গ্রাসমূলক আচরণের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুশব্যাক দেখতে পাচ্ছি। এটা আরো জোরদার হতে পারে এবং এ প্রেক্ষাপটে শ্রীলঙ্কার জন্য এমনকি রাজাপাক্সের অধীনেও অধিকতর প্রকল্প গ্রহণ করতে দেখা কঠিন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু কাং বলেন, বেইজিং বিশ্বাস করে যে শ্রীলঙ্কার জনগণ ও সরকারের যথাযথভাবে এ পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রজ্ঞা আছে। চীন আশা করে যে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সকল পক্ষ সংলাপের মাধ্যমে তাদের মতপার্থক্য নিরসন করবে।
কলম্বোর থিঙ্কট্যাঙ্ক বন্দরনায়েক সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাপিজের পরিচালক হরিন্দা ভিদনেজ বলেন, মালদ্বীপে চীনপন্থী আবদুল্লাহ ইয়ামিনের নির্বাচনী পরাজয়ের পর শ্রীলঙ্কার ঘটনা চীনের জন্য এক বিশাল কৌশলগত পুরস্কার। ভারত মহাসাগরে পা রাখার প্রচেষ্টায় শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ উভয়েই চীনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে চীনপন্থী রাজাপাক্সে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভারত শ্রীলঙ্কায় হারানো ভূমি ফিরে পেতে উঠে পড়ে লেগেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।