পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারা দেশে ইলিশের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও আগামী বৃহস্পতিবার থেকে চালু হচ্ছে জাটকা আহরণ, পরিবহন ও বিপণননিষেধাজ্ঞা। আট মাস ব্যাপী এ নিষেধাজ্ঞা চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত । জানা গেছে, গত রোববার মধ্যরাত দক্ষিণাঞ্চলসহ উপক‚লভাগ জুড়ে হাজার হাজার জেলে নদীতে নৌকা ও ট্রলার ভাসিয়েছে। গত সোমবার সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক ট্রলার বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের মোকামগুলোতে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। দামও ছিল সাধারণের আয়ত্তে। গতকাল বরিশালের বাজারে ৫শ’ গ্রাম থেকে ৮শ’ গ্রামের ইলিশ ৬শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তবে মৎস্য দপ্তরের মতে, এবার সাগর থেকে প্রচুর ইলিশ দেশের অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে উঠে আসায় বাজারে আরো কিছুদিন সরবরাহ ভাল থাকবে। কিন্তু কোন অবস্থাতেই জাটকা আহরণ ও বিপণন প্রশ্রয় দেয়া হবে না। মহলটির মতে, জাটকা আহরণ গ্রহণযোগ্য মাত্রায় প্রতিরোধ করতে পারলে চলতি অর্থ বছরে দেশের ইলিশের উৎপাদন সোয়া ৫ লাখ টন অতিক্রম করবে। গত অর্থবছরে যা ছিল ৫ লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন।
দেশের অর্থনীতিতে ইলিশের একক অবদান ১ শতাংশেরও বেশি। মৎস্য সম্পদে ইলিশের অবদান প্রায় ১২-১৩ শতাংশ। মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, সারা বিশ্বে যেখানে ইলিশের উৎপাদন কিছুটা হ্রাস পাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে প্রতি বছর তা গড়ে ৫-১০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দেড় দশকে দেশে ইলিশের উৎপাদন প্রায় তিনগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে আহরিত ইলিশের ৫০-৬০ শতাংশ এখন বাংলাদেশে উৎপাদিত হচ্ছে।
চলতি বছর ইলিশ আহরণ ও বিপণনে অনেক বেশী অভিযান ছাড়াও জেল-জরিমানা করা হলেও দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গোপনে ইলিশের পরিবহন ও বিপণন ছিল উদ্বেগজনক। মৎস্য অধিদপ্তর ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় এবার ইলিশ আহরণ ও বিপণনবিরোধী অভিযোনের সংখ্যাও ছিল বেশি। মৎস অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, এবার দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের উপক‚লীয় এলাকায় ১৪ হাজার ৬১৪টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় ২ হাজার ৭১০টি। জেলেদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মামলা দয়ের ছাড়াও ৬০ লাখ টাকার মত জরিমানা আদায় করা হয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ডাদেশ প্রদান করা হয়েছ ৪ হাজার ১২৭ জন জেলেকে। ৭২ টনের মত বিভিন্ন ধরনের ইলিশ আটক করে তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এ সময়কালে। এছাড়াও প্রায় ৪ কোটি ৩৮ লাখ রানিং মিটার বিভিন্ন ধরনের জাল আটক করে বাজেয়াপ্ত করেছে প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এবারের নিষিদ্ধকালীন সময় দক্ষিণাঞ্চলসহ উপক‚লের ১২৭টি উপজেলার ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৭০৯টি বেকার জেলে পরিবারকে ২০ কেজি করে মোট ৭ হাজার ৯১৪ দশমিক ১৮ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেছে। এমনকি এবারের চাল নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বিতরণ সম্ভব হয়েছে বলে দাবি মৎস্য অধিদফতরের।
মৎস্য বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১৫ দিনের স্থলে ২০১৭ সালে ২২ দিনে উন্নীত করায় ইলিশের নিষিক্ত ডিমের পরিমান ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬৫ কেজি থেকে ৩৭ শতাংশ বেশি অর্থাৎ ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৫ কেজিতে উন্নীত হয়। যা চলতি বছর আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি ইলিশ পোনা জাটকার উৎপাদনও ২০১৫ সালে ৩৯ হাজার ২৬৮ কোটি থেকে ২০১৭ সালে ৪২ হাজার ২৭৪ কোটিতে উন্নীত হয়েছে।
মৎস্য অধিদফতরের সুপারিশের আলোকে অন্যান্য বছরের মত এবারও নিম্ন মেঘনা নদী, শাহবাজপুর চ্যানেল ও তেতুলিয়া নদীতে মার্চ ও এপ্রিল মাসে এবং পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক নদীতে নভেম্বর-জানুয়ারি মাসের সময়কালকে অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময়কালে ওইসব এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ রাখা হবে। এছাড়াও শরিয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা এবং দক্ষিণে চাঁদপুরের মতলব ও শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পদ্মার ২০ কিলোমিটার এলাকায় মার্চ-এপ্রিল মাসে দেশের ৫ম অভয়াশ্রমে ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকবে। এছাড়াও বরিশালের হিজলা উপজেলার নাছকাটি পয়েন্ট, হরিনাথপুর পয়েন্ট, ধুলখোলা পয়েন্ট এবং মেহেদিগঞ্জ উপজেলার ভাষানচর পয়েন্ট এলাকার মেঘনার শাখা নদী, হিজলা উপজেলার ধর্মগঞ্জ ও নয়া ভাঙনী নদী এবং মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার লতা নদীর ৬০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশ ও জাটকার ষষ্ঠ অভয়াশ্রম হিসেব ঘোষণার সুপারিশ করা হয়েছে মৎস্য বিজ্ঞানীদের তরফ থেকে। মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জাটকা আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ে এর আহরণ ও বিপণনবন্ধে সব আইনী পদক্ষেপ গ্রহনের কথাও বলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।