Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে অচলাবস্থা পরিবহন ধর্মঘটে বন্দরে পণ্য পরিবহন বন্ধ

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে অচল দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম। বাস-মিনিবাসসহ গণপরিবহন এবং পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রফতানিমুখী পণ্য পরিবহন। প্রায় ফাঁকা ছিল অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। জনজীবনের পাশাপাশি স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। শ্রমিকের উপস্থিতি কম হওয়ায় ইপিজেডসহ শিল্পাঞ্চলগুলোতে কল-কারখানায় উৎপাদনও ব্যাহত হয়েছে।
গতকাল (রোববার) সকাল থেকে মহানগরী ও জেলার সর্বত্রই দৃশ্যত হরতাল পরিস্থিতি বিরাজ করে। বিভিন্ন স্থানে কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিকশা, হিউম্যান হলার, টেম্পু চোখে পড়লেও বাস কিংবা পণ্যবাহী কোন গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়নি। এতে করে সকাল থেকেই দুর্ভোগে পড়েন লোকজন। বিশেষ করে কর্মজীবী নারী এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। গণপরিবহন না থাকায় রিক্সা, অটোরিকশার ভাড়াও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কেউ হেঁটে, আবার কেউ ভ্যানগাড়িতে চড়ে কর্মস্থলে ছোটেন।
নগরীর প্রতিটি মোড়ে মানুষের জটলা দেখা যায়। কাটগড়, সিমেন্ট ক্রসিং, ইপিজেড, বারিক বিল্ডিং, আগ্রাবাদ, দেওয়ান হাট, টাইগারপাস, নিউমার্কেট মোড়, কর্ণফুলী সেতু, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, জিইসি, ইস্পাহানি, অলংকার মোড় ও কদমতলী এলাকায় ছিল গাড়ির অপেক্ষায় থাকা মানুষের লম্বা লাইন। গণপরিবহনের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন অনেকে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও গাড়ির দেখা না পেয়ে ফিরে গেছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার পায়ে হেঁটেই রওনা হয়েছেন গন্তব্যের দিকে। হঠাৎ করে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার ঘটনায় অনেককে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ঘর থেকে বের হয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয় কর্মজীবী মানুষদের। মহানগরী থেকে বিভিন্ন উপজেলার প্রায় সব রুটে পরিবহন সঙ্কট ছিল। ফলে অনেকেই কর্মস্থলে পৌঁছতে পারেননি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। চট্টগ্রাম থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যায়নি। বাস টার্মিনাল গুলোতে যাত্রীদের অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। রেলস্টেশনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। টিকিট না পেয়ে অনেকে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন। যাত্রীর চাপ সামাল দিতে প্রায় প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর এলাকার সড়কগুলো ছিল প্রায় ফাঁকা। পণ্য পরিবহনের জন্য বন্দর এলাকায় ভারী যানবাহনের কোন ভিড় দেখা যায়নি। প্রতিদিন অন্তত ২ থেকে আড়াই হাজার ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান বন্দর জেটিতে আমদানি-রফতানি পণ্য নিয়ে আসা-যাওয়া করে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে পণ্য পরিবহনও বন্ধ হয়ে গেছে। পতেঙ্গা এলাকার বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনালগুলো থেকেও পণ্য পরিবহন হয়নি। দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আসাদগঞ্জে হরতাল পরিস্থিতি বিরাজ করে। অন্যসময় এসব এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাকের তীব্র যানজট থাকলেও গতকাল ছিল ভিন্নচিত্র। চট্টগ্রাম ইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেডসহ শিল্প কারখানাগুলোতে শ্রমিকের উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় কম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্দর

১৩ জানুয়ারি, ২০২৩
২৪ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ