Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলৎশক্তিহীনদের চোখের ইশারায় চলাচলযোগ্য হুইলচেয়ার

মুস্তাকের অনন্য আবিষ্কার

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

পক্ষাঘাতগ্রস্থ বা চলৎশক্তিহীন মানুষের চোখের ইশারায় চলাচলযোগ্য হুইল চেয়ার উদ্ভাবন করেছে বরিশাল নগরীর সন্তান নাজমুস সাকিব-মুস্তাক। দু-পায়ে চলতশক্তিহীন বা শরীরকে বয়ে নিয়ে চলাচলে সম্পূর্ণ অক্ষমদের জন্য ‘ইলেকট্রো কোকুলোগ্রাফী-ইওজি’ টেকনোলজির মাধ্যমে এই হুইল চেয়ার ব্যবহারযোগ্য করে তৈরি করেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর ছাত্র মুস্তাক। বরিশালের মুন্সি গ্যারেজ এলাকার ধুলিয়া লজ এর বাসিন্দা এস এম ফারুক ও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা লুৎফন নাহার-বিলি’র সন্তান মুস্তাক। এ হুইল চেয়ার দেশের প্রায় ১৫ লাখ চলাচল অক্ষম মানুষ ও ৫ লাখের বেশি সম্পূর্ণভাবে অক্ষমসহ বিশ্বের লাখ লাখ পক্ষাঘাতগ্রস্থ রোগীদের জন্য নতুন আশার আলো সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে পরনির্ভরশীল ঐসব রোগীরা বাঁচার নতুন আশার আলো দেখতে পাবে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞমহল।

মুস্তাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক ড. খসরু মো. সেলিম এবং ড. কাফিউল ইসলাম ও সিনিয়র ছাত্র ফাহিম ভুইয়া, মো. আহসান উল কবির শাওনকে নিয়ে মাত্র চার মাসেই তৈরী করেছে এ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির চেয়ার। ঢাকার ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর ইলেকট্রিক্যাল এ্যান্ড ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর শেষ বর্ষের পড়–য়া ছাত্র মুস্তাক মাত্র ২০ হাজার টাকায় অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত এই হুইল চেয়ার তৈরি করেছে। ইতিমধ্যেই তাদের তৈরি করা ‘ইওজি কন্ট্রোল ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার’ এমআইএসটি, ঢাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মানব কল্যানে বিজ্ঞান’ আইইউবি মেকার্সমেনিয়া এবং ইউথ জেস্ট প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করেছে।

এ বিষয়ে আলাপকালে নাজমুস সাকিব জানান, চোখের ইশারা ছাড়া কোন ধরনের অঙ্গ ব্যবহার এর ক্ষমতা নেই, এমন রোগীদের কথা চিন্তা করেই ইওজি কন্ট্রোল ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার তৈরির কাজ শুরু করা হয়। ইলেকট্রনিক হুইল চেয়ারের সাথে ইওজি প্রযুক্তি সংযুক্ত করে এই হুইল চেয়ারটি তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র চোখের ইশারায় পক্ষাঘাতগ্রস্থ বা চলতমক্তিহীন মানুষ হুইল চেয়ারটি নিয়ে ডানে বামে বা সামনে পিছনে সহজেই চলাফেরা করতে পারবেন। এতে তাদের পরনির্ভশীলতা হ্রাস করবে।

তাদের এই উদ্ভাবন কিভাবে কাজ করে সে বিষয়ে মুস্তাক বলেন, ইওজি একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে চোখের ইশারায় যে কোন ডিভাইসের মুভমেন্ট কন্ট্রোল করা সম্ভব। বাংলাদেশে এমন উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার নেই। থাকলেও তা অনেক ব্যয় সাপেক্ষ। চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর ব্যবহারের মাধ্যমে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা সম্ভব হতে পারে বলেও মনে করে এই তরুণ উদ্ভাবক। ইওজি তারসহ বা তার ছাড়া দুইভাবেই কাজ করে। ইলেকট্রনিক হুইল চেয়ার এর সাথে এই ডিভাইসটি সংযুক্ত করার পর তা ব্যহারকারীর চোখের দুই পার্শ্বে সংযুক্ত থাকে। যখন ডানে যেতে হবে তখন যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহারকারী তাকাবে, প্রযুক্তি হুইল চেয়ারটির সার্কিটে সেন্সরের মাধ্যমে সেই নির্দেশনা পৌছে দেবে। একইভাবে অবশ্যই ইচ্ছাকৃত চাহনি ও চোখের পলকের মাধ্যমে এর বামে যাওয়া, সামনে পিছনে যাওয়া আসা, চলা ও থামা কন্ট্রোল করবে বলে জানান তিনি।

হুইল চেয়ারটি তৈরিতে তাদের মাত্র ১৮ হাজার টাকা খরচ হলেও বানিজ্যিকভাবে তা তৈরি করেতে গেলে সকল মডিফিকেশন হ ২০ হাজার টাকার মধ্যেই সম্ভব বলে জানিয়ছে মুস্তাক। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এমন জটিল সেবা এত কম খরচে আশা করা যায় না বলে জানিয়ে মোস্তাক বলেন, ইওজি কন্ট্রোল ইলেকট্রিক হুইল চেয়ারটি ব্যয় সাশ্রয়ী।



 

Show all comments
  • ash ২৮ অক্টোবর, ২০১৮, ৫:৪১ এএম says : 0
    WOW NICE !! WE CAN DO LOT MORE !! INSHALLAH
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ