পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে- ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত রাজনীতির নতুন মেরুকরণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপির সমর্থন নিয়ে গঠিত এই নতুন রাজনৈতিক জোট ইতোমধ্যেই দেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াতেও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রচারণা ও গুরুত্ব পাচ্ছে এই ঐক্যফ্রন্টের কার্যক্রম। মূলত জনগণের আগ্রহের কারণেই মিডিয়াও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজনৈতিক কর্মসূচি ও ফ্রন্টের নেতাদের বক্তব্য-বিবৃতি গুরুত্বসহকারে প্রচার করতে উৎসাহিত হচ্ছে।
টিভি টকশোগুলোতেও দর্শকরা এখন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতাদের চেয়েও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বক্তব্য শুনতেই বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। যে কারণে এখন টিভি টকশোগুলোতেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের কদর ও গুরুত্ব বেড়েছে বহুলাংশে। ড. কামাল হোসেন, ডাঃ জাফর উল্লাহ , আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীদের বক্তব্য শোনার আগ্রহ ক্রমান্বয়েই বাড়ছে জনগণের কাছে। আর এ ক্ষেত্রে নাটকীয়ভাবে ঐক্যফ্রন্টকে প্রচার-প্রচারণায় আরও অনেক দূর বেশি এগিয়ে দিয়েছে এবং ক্রমান্বয়েই দিয়ে চলেছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ যেটাও এই মুহূর্তে দেশের রাজনীতির অন্যতম আলোচিত বিষয়।
বেশ কয়েকদিন ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সরকারি দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা থেকে শুরু করে তাদের জোটের নেতারাও তাদের দলীয় রাজনীতির কথা বাদ দিয়ে প্রতিটি সভা-সেমিনারে সারাক্ষণ শুধু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আর ড. কামাল হোসেনকে নিয়েই বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন। টেলিভিশন খুললেই আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীদের মুখে শুধু বারবার শোনা যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আর ড. কামাল হোসেনের নাম। এতে করে সারা দেশের মানুষের কাছে খুব দ্রুত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও নেতা হিসেবে ড. কামাল হোসেনের পরিচিতি ও গুরুত্ব বাড়ছে। মূলত আওয়ামী লীগ বিষয়টিকে প্রচন্ড নেগেটিভভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলেও প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে জনগণের দৃষ্টিকোণ থেকে সেটা উল্টো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষেই যাচ্ছে এবং সরকারি দলের এই অতিমাত্রায় প্রচারণায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টই। সারাদেশে বিদ্যুৎ ব্যাবস্থার ব্যাপক উন্নতির ফলে গ্রামে গঞ্জে সব বাড়িতেই এখন টেলিভিশন আর ডিশ সংযোগ রয়েছে। গ্রামের সাধারণ মানুষরাও এখন রাত জেগে খবর ও টক শো দেখে। মিডিয়ার কল্যাণে রাজনীতির খবরের প্রতিও গ্রামের সাধারণ মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। গত কয়েকদিনে টেলিভিশনে আওয়ামীলীগের নেতাদের মুখে মুখে সারাক্ষণ শুধু ড. কামাল হোসেন আর ঐক্য ফ্রন্টের নাম শুনতে শুনতে গ্রামের সাধারণ মানুষ যারা বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও নেতাদের নামও জানে না তাদের কাছেও ডঃ কামাল হোসেনের নামটি ব্যাপকভাবে পরিচিতি পেয়েছে।
বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে সরকারি দল আওয়ামী লীগের নেতারা একচেটিয়া তাদের বক্তব্য-বিবৃতিতে শুধু বিএনপি, বেগম জিয়া আর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের অবস্থান দ্রুত বদল করে প্রচারণায় একমাত্র টার্গেট করেছেন ড. কামাল হোসেন এর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে। বিএনপি, বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের নাম এখন আর তাদের আলোচনায়ই নেই। টিভির টকশোগুলোতেও এখন আওয়ামী লীগের নেতারা শুধু আলোচনা আর সমালোচনামুখর ড. কামাল হোসেন আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে যে বিএনপির শক্তির ওপর নির্ভর করে বিএনপিকে সাথে নিয়ে এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে, সেই বিএনপির নেতারাও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নাম ও ড. কামাল হোসেনের নাম তত বেশি নিচ্ছেন না, যত না বেশি বেশি নিচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। যদিও ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর শুরুতেই সরকারি দলের নেতারা এটাকে গুরুত্বহীন হিসেবে অভিহিত করে এই ঐক্য রাজনীতিতে কোনো প্রভাবই ফেলতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বভাবতই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এখন প্রশ্ন রাখছেন, যদি কোনো গুরুত্বই না থাকে তাহলে ড. কামাল হোসেন ও তার নেতৃত্বে গঠিত এই ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে সরকারি দলের এত মাথাব্যথা কেন? সরকারি দলের নেতারাই বা কেন প্রতিনিয়তই শুধু ড. কামালের বিরুদ্ধাচরণে ব্যস্ত? শুধু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাই নন, এই প্রশ্নগুলো এখন গুরুত্বের সাথে ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের জনগণের কাছেও।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সরকারের কাছে যে ৭ দফা দাবি পেশ করেছে, সেই ৭ দফাকেও বারবার আলোচনায় এনে এটার গুরুত্ব জনসমক্ষে বাড়িয়ে দিচ্ছেন সরকারি দলের নেতারা। আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রীরা প্রতিদিন যেভাবে ৭ দফার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন এবং কোনোভাবেই এই ৭ দফা মানা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন; ততই জনগণের কাছে এই ৭ দফায় কী আছে সেটা জানার আগ্রহ বাড়ছে। মূলত বিগত কয়েক দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রচার-প্রচারণা, জনসভা আর ঘরোয়া মিটিং করেও ড. কামাল হোসেন এবং ঐক্যফ্রন্ট যতটা না আলোচনায় এসেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি প্রচার-প্রচারণা পেয়েছে শাসক দল আওয়ামী লীগের কাছ থেকে।
এ বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে দেশের খ্যাতিমান রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, “এ বিষয়টি নিয়ে আমি ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি টকশোতে আলোচনা করেছি এবং আমি দেখছি জনগণ সকাল-সন্ধ্যা শুধু সরকারি দলের নেতা ও মন্ত্রীদের মুখে ড. কামাল হোসেন আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নাম শুনতে শুনতে এখন ক্রমান্বয়েই তাদের ব্যাপারে আগ্রহ বাড়ছে। আমি মনে করি, আওয়ামী লীগের নেতাদের এই নেগেটিভ প্রচারণায় সবচেয়ে বেশি লাভ হচ্ছে ড. কামাল হোসেন এবং বিএনপির। সরকারি দলের সার্বক্ষণিক নেগেটিভ প্রচারণার ফলে ড. কামাল হোসেন এখন পাবলিকলি একজন আইকনিক ফিগার হয়ে গেছেন। ড. কামাল হোসেন একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকারি দল আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কারণে যতই তার সমালোচনা করুক না কেন, জনগণ কিন্তু বিষয়টাকে সেভাবে দেখছে না বলেই আমার মনে হয়। আমি মনে করি, এই ঐক্যফ্রন্ট করে লাভ হয়েছে ড. কামাল হোসেন এবং বিএনপি উভয়েরই। ড. কামাল হোসেনেরও বিএনপির মতো একটা বড় দলের সাথে সম্পৃক্ততা দরকার ছিল, আবার ঠিক তেমনি বিএনপিরও বর্তমান নেতৃত্বের অবস্থায় ড. কামাল হোসেনের মতো একজন গ্রহণযোগ্য, অভিজ্ঞ নেতা ও অভিভাবকের প্রয়োজন ছিল। এটা হওয়াতে বিষয়টি ম্যাচ করে গেছে।”
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।