Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরবনে মৎস্যজীবী পরিবারে মানবিক বিপর্যয়

জেলেরা পাচ্ছেন না কোনো সহযোগিতা

কয়রা (খুলনা) থেকে মোস্তফা শফিক | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

কয়রা উপজেলার ৫ নম্বর কয়রা গ্রামের বাক্কার শেখ (৪৯) দুঃখের দিন যেন আর শেষ হয় না। জীবনের অধিকাংশ সময় সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে মাছ ধরে জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। সুন্দরবনের নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির সাদা ও চিংড়ি মাছ ধরেই সুখে দুখে সময় কেটে গেছে বাক্কারের। সুন্দরবনে মাছ ধরাই তার সংসার পরিচালনার একমাত্র মাধ্যম। অথচ চলতি অক্টোবর মাসের ৭ তারিখ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত মৎস্য মন্ত্রনালয়ের ঘোষিত ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের ফলে সুন্দরবনের সকল পাশপারমিট বন্ধ করে দেয়ায় তিনিসহ হাজার হাজার জেলে বেকার হয়ে পড়েছেন।

সুন্দরবনের মৎস্যজীবী আক্তারুল ঢালী বলেন, ইলিশ মাছ মারা বন্ধের পাশাপাশি তাদের অন্যান্য মাছ মারাও বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে এ সুন্দরবন এলাকাটিকে ‘ইলিশ জোন’ হিসেবে ঘোষণা না করায় কোন প্রকার সরকারি সহায়তা পাচ্ছে না মৎস্যজীবীরা। ফলে সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন উপজেলার সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার পরিবার এখন অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের পরিবারে নেমে এসেছে মানবিক বিপর্যয়। কয়রা উপজেলার মঠবাড়ি গ্রামের মৎস্যজীবী ইউনুচ গাজী বলেন, সুন্দরবনের ইলিশ মৌসুমে অন্যান্য মাছ ধরা বন্ধ করা হয়েছে। তবে মাছের সাথে কাঁকড়ার পাশ কেন বন্ধ করা হয়েছে তা আমার জানা নেই। মাছের প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়া কোন ক্ষতি হয় না। কাঁকড়া ধরতে না পেরে সে সহ তার এলাকার শত শত জেলে বেকার হয়ে পড়েছে। অনেকেই না খেয়ে জীবন যাপন করছে বলে তিনি জানান। সুন্দরবনের মৎস্য ব্যবসায়ী আবু সাঈদ বলেন, ইলিশ প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে মৎস্য মন্ত্রণালয়ের হঠাৎ সিদ্ধান্তে সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের সকল পাশ পারমিট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে সুন্দরবন ছাড়া অন্য এলাকার জেলেদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনের জেলেদের সহযোগিতা করার জন্য সরকারের ঊর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

উত্তর বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি বলেন, সুন্দরবনের ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীরা অনেক কষ্টে আছে। অন্য এলাকার পাশাপাশি সুন্দরবনের জেলেদের সহযোগিতা অবশ্যই প্রয়োজন। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের ডিএফও মো. বশিরুল-আল মামুন বলেন, ইলিশ প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনে সকল প্রকার পারমিট বন্ধ করে দেয়ায় হাজার হাজার জেলে পরিবার বেকার হয়ে পড়ে আছে। তাদের বিকল্প জীবিকায়নের পথ তৈরি করা উচিত। তাদের বিষয়টি বিবেচনায় এনে সহযোগিতা করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ