পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মানুষের শরীরের খন্ডিত অংশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও তদন্তে তা আলোর মুখ দেখছে না। খুনের তথ্য গোপন করতে ঘাতকরা নিজেদের আড়াল করতে নতুন এই কৌশল অবলম্বন করছে। লাশের পরিচয় যাতে জানা না যায় সেজন্য খুনিরা লাশের দেহ কয়েক টুকরো করে পৃথক পৃথক স্থানে ফেলে রাখছে ও মাথা গায়েব করে দিচ্ছে। রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকায় একটি ট্্রলি ব্যাগের ভেতর থেকে মানবদেহের খন্ডিত অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে কদমতলী পাটেরবাগ একে স্কুলের গলির ময়লার স্তুপ থেকে ট্্রলি ব্যাগটি উদ্ধার করা হয়। পরে ব্যাগের ভেতরে কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত মানবদেহের দু’টি অংশ পাওয়া যায়।
আইন-শৃংখলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, এর আগে রাজধানীর রমনা, সবুজবাগ, যাত্রাবাড়ি ও সূত্রাপুর থানায় বেশ কয়েকটি লাশের খন্ডিত অংশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটলেও নিহত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এমনকি এ ধরনের নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে পারছে না তদন্তের সাথে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তারা। দীর্ঘ তদন্তে এসব মামলা থেকে যাচ্ছে ক্লুলেস।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঘাতকরা নিজেদের আড়াল করতেই হত্যার পর লাশ খন্ডিত করে একাধিক জায়গায় ফেলে রাখছে। এ ক্ষেত্রে খুনীদের গ্রেফতার ও নিহতের পরিচয় শনাক্ত করতে অধিক সময় ব্যয় করতে হয় তদন্তের সাথে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেসব হত্যাকান্ড অধিক জটিল তা তদন্তের জন্য সিআইডি বা অন্য কোন তদন্তকারী সংস্থার কাছে পাঠানো হয়। পুলিশ প্রতিটি হত্যাকান্ডই গুরুত্বের সাথে তদন্ত এবং জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা করে বলে ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন মন্তব্য করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানউল্লাহ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বিভিন্ন কারনে আইন ও বিচারহীনতার সাংস্কৃতির জন্য আমাদের দেশে এ ধরনের নির্মম হত্যাকান্ড সংঘটিত হচ্ছে। সমাজে সামাজিক অনাচার রেড়ে গেছে ও সঠিক বিচার কার্যের অভাব রয়েছে। এক শ্রেনীর মানুষ অন্যায় করে পাড় পেয়ে যাচ্ছে। আইনের সঠিক প্রয়োগ ও দ্রুত সময়ের সধ্যে অপরাধীর বিচার হলে এ ধরনের ঘটনা কমে আসবে বলে অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানউল্লাহ মন্তব্য করেন।
কদমতলী থানার এসআই মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কদমতলী থানার একে স্কুলের গলি থেকে খন্ডিত অংশ ভর্তি ট্্রলি ব্যাগটি উদ্ধার করা হয়। কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত দুটি অংশ একটি ট্্রলি ব্যাগের ভেতরে ছিল। ব্যাগটি কে বা কারা ওই গলির মুখে ফেলে রেখে গেছে জচানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত নিহতের পরিচয় বা শরীরের বাকী অংশের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ব্যপারে মামলা করা হয়েছে পুলিশ বাদি হয়ে। উদ্ধারকৃত খন্ডিত অংশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ ডিসেম্বরে কল্যাণপুরের প্রধান সড়কের ওপর পড়ে থাকা কালো সুটকেস থেকে একটি হাত পা ও মাথাবিহীন ধর উদ্ধার করে দারুসসালাম থানা পুলিশ। এর পরদিন সূত্রাপুরের লালকুঠি সাইকেল মাঠ সংলগ্ন রাস্তার পাশ থেকে দুই পাসহ দেহের নিচের অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। পৃথক জায়গায় উদ্ধার হওয়া শরীরের খন্ডিত অংশগুলো একই ব্যক্তির বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ। দীর্ঘদিন তদন্তে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় মামলাটি স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে। গোয়েন্দা পুলিশ এখন মামলাটি তদন্ত করছে।
গত ২৭ মে রোববার গভীর রাতে রাজধানীর মগবাজারে ফ্লাইওভারের ওপরে পাওয়া একটি চটের বস্তা থেকে খন্ডিত দুইটি হাত ও দুইটি পা উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন সকালে আগারগাঁওয়ে একটি রাস্তার পাশে থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি লাগেজ পাওয়া যায় এবং এর ভেতরে একটি নারী দেহের মস্তকবিহীন ধর পাওয়া যায়। ধরের খন্ডিত অংশের সঙ্গে মগবাজার থেকে উদ্ধার করা দুই পা ও হাত মিলে যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ কর্মকর্তারা জানতে পারেন যে, লাশের এই ৫ টুকরা একই দেহের। তবে মাথা এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধার করা খন্ডিত দুই হাতে সোনালী রঙের ধাতব চুড়ি ছিল। এ নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত খুনীরা এখনও ধরা পড়েনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ মে সোমবার সকালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে লাল রংঙের একটি লাকেজ দেখতে পায় স্থানীয়রা। এসময় তারা লাকেজের ভেতর মাথাবিহীন এক অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়ে। নিহতের পরনে একটি ছেড়া লঙ্গি ছিল। পুলিশের ধারনা যুবকের বয়স আনুমানিক (৩৫) হবে। গতকাল পর্যন্ত পুলিশ নিহতের পরিচয় উদ্ধার বা জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে পারেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।