Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষার্থীরাই যেখানে কৃষক

মোস্তফা মাজেদ, ঝিনাইদহ থেকে | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

বিস্তৃর্ন মাঠ। খন্ড খন্ড জমিতে ফসলের সমারোহ। কোনটায় লাল গোলাপ, আবার কোনটাই ধান ও শীতকালীন সবজি। এতো কিছু আয়োজন কেবলই পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে। কোমল হাতে কোদাল আর কাস্তে নিয়ে ক্ষেতে কাজ করছেন তরুন তরুণীরা। অনাবাদী জমি আবাদযোগ্য করে নিজেরাই এখন কৃষক সেজে কাজ করছেন ঝিনাইদহ কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পড়ালেখার পাশাপাশি ফসল উৎপাদন করে অনন্য নজীর সৃষ্টি করেছেন তারা।
জানা গেছে, ২০১৩ সালে ঝিনাইদহ কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে শুরু করেন। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি কীটনাশকমুক্ত ফসল উৎপাদন করে একদিকে যেমন হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, তেমনি ফসল ফলিয়ে যুক্ত হচ্ছেন অনন্য সফলতায়। ২০০৬ সালে ঝিনাইদহে ২১ দশমিক ৩৮ একর জমির ওপর এ কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়। এ প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্যাম্পাসের পরিত্যক্ত জমিতে ফসল উৎপাদনের উদ্যোগ নেন। শিক্ষার্থীরা যাতে কৃষিকাজের বাস্তব জ্ঞানসহ উৎপাদিত ফসল ভোগ করতে পারেন। ইনস্টিটিউটের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আব্দুল কাদের স্যারের সার্বিক নির্দেশনায় তারা এই কাজে উদ্বুদ্ধ হন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল কাদেরের পরিকল্পনায় বর্তমানে আবাদী জমির পরিমান দাঁড়িয়েছে ১৬ একরে। চাষ করা হচ্ছে ৬০ প্রকার ফসল। এখানে উৎপাদন করা হচ্ছে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মুলা, গাজর, লালশাক, পালংশাক, ব্রকলি, ড্রনফুট্রস, পুদিনা, ধনেপাতা, চায়না কেটেজ, শালগম, ওলকপি, মটরসুটি, গম, সয়াবিন, ভুট্টা, রসুনসহ ৬০ প্রকার সবজি। এছাড়াও পালন করা হচ্ছে হাস, টার্কি মুরগি, মাছ, গরু ও কবুতর। উৎপাদিত ফসল বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। ওই টাকায় কৃষির নানা উপকরণ কেনা হচ্ছে। মুশফিকুর রহমান নামে একজন জানান, তারা ঝিনাইদহ কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে উৎপাদিত সবজি কিনে বাজারে বিক্রি করেন। তারা বাজারমূল্য থেকে কম দামে সবজি কিনতে পারেন। এ কর্মসূচির উদ্যোক্তা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের গতকাল বুধবার জানান, সাধারণত দেশের কৃষি প্রতিষ্ঠানগুলোয় অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে কৃষিকাজ দেখানোর জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। পোকা দমন ও চাষপদ্ধতি দেখানো হয়। শিক্ষার্থীরা যাতে পড়ালেখার পাশাপাশি সারা বছরই উৎপাদনে অংশ নিতে পারেন, এ ভাবনা থেকে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ইনস্টিটিউটের পুকুরে মাছ চাষ করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস পরিছন্নতা, উন্নয়ন ও বৃক্ষরোপণ করেছেন। তিনি আরো বলেন, শিখি-করি-খাই এ কর্মসূচি এখন কৃষি বিভাগের কাছে একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। ঝিনাইদহ কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষক নাজিম উদ্দিন বলেন, মাঠে কাজ করার মাধ্যমে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা কৃষিক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ