Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবার তথ্য চুরি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির রেশ না কাটতে আবারও ব্যাংকটির তথ্য চুরির ঘটনা ঘটেছে। এবার ভুয়া আবেদনে সাড়া দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে দিয়েছেন প্রতারক চক্রের হাতে। প্রতারক চক্রটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পেতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। বিষয়টি ধরা পড়তেই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
গত ৯ অক্টোবর পররাষ্ট্র সচিবের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য চুরির বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অবশ্য ফজলে কবির দেশের বাইরে থাকায় চিঠি পাওয়ার দিনই (১০ অক্টোবর) দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনার একটি বিষয় আমি শুনেছি।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী ব্যবস্থা নিয়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে দুই/এক দিনের মধ্যে জানাতে পারবো।’
জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (ইউএন বা জাতিসংঘ অনুবিভাগ) পরিচয় দিয়ে জনৈক নাসির আহমেদ দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) তালিকা চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি পাঠায়। ওই চিঠি পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা নাসির আহমেদকে তফসিলি ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের তালিকা দিয়ে দেন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নাসির আহমেদকে তালিকা দেওয়ার পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়। এরপরই এই জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। কারণ, নাসির আহমেদ নামে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোনও পরিচালকই নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর পাঠানো পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘গত ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে আমরা একটি পত্র পাই। যার মাধ্যমে তথাকথিত নাসির আহমেদ, পরিচালক (ইউএন) এর দৃষ্টি আকর্ষণ করত, দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের তালিকা দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নাসির আহমেদ নামে কোনও পরিচালক কর্মরত নেই। জাতিসংঘ অনুবিভাগেও (ইউএন) এই নামে কোনও কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্মরত নেই। এ কারণেই পত্র পাওয়া মাত্র আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করি। জানতে পারি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক পরিচালক (ইউএন) পরিচয় দিয়ে জনৈক নাসির আহমেদ সব তফসিলি ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের তালিকা চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের কাছে জাল চিঠি পাঠিয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ব্যক্তিকে তালিকা পাঠানো হয়েছে। আমরা ওই বিভাগ থেকে আরও জানতে পেরেছি, ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জালিয়াতকারী নাসির আহমেদকে ওই তালিকার সফট কপি ই-মেইলের মাধ্যমেও পাঠানো হয়েছে।’ চিঠিতে পররাষ্ট্র সচিব উল্লেখ করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (ফেড) রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। পাঁচটি সুইফট বার্তার মাধ্যমে চুরি হওয়া এই অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া দুই কোটি ডলার ফেরত আসে। তবে ফিলিপাইনে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার বেশ কয়েকটি জুয়ার টেবিল ঘুরে হাতবদল হয়। এর মধ্যে দেড় কোটি ডলার ফেরত এলেও বাকি অর্থ উদ্ধারে এখনও তেমন কোনও অগ্রগতি নেই।



 

Show all comments
  • মো:হাসিন সরকার বাবু ১৭ অক্টোবর, ২০১৮, ৯:২১ এএম says : 0
    আপনাদের লেখাগুলো আমার ভালো লাগে ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ ব্যাংক

২৫ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ