পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি, কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য অপরিহার্য হচ্ছে বিনিয়োগ-শিল্পায়ন ও সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা, গতিশীলতা বৃদ্ধি করা। চট্টগ্রাম বন্দরের অবকাঠামো সুবিধা বাড়াতে হলে অবিলম্বে বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রয়োজন। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রফতানি নিশ্চিতের জন্য লিড টাইম হ্রাস জরুরি। গতকাল (সোমবার) চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বিশিষ্ট আলোচকগণ উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা উপকমিটি কর্তৃক আয়োজিত ভিশন-২০২১ ও ভিশন ২০৪১ এর আলোকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়ন সম্ভাবনা এবং চাহিদার বিষয়ক ‘উন্নয়ন রোডম্যাপ-চট্টগ্রাম বিভাগ’ শীর্ষক উক্ত সেমিনার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপকমিটির চেয়ারম্যান ড. মসিউর রহমান। সেমিনার সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক, অর্থ ও পরিকল্পনা উপকমিটির সদস্য সচিব টিপু মুনশি এমপি। সমুদ্রবন্দর, ব্ল ইকোনমি, বিগ-বি ইনিশিয়েটিভ ও ডেল্টা প্ল্যানকে গুরুত্ব দিয়ে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ সেলিম উদ্দিন এফসিএ। চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সহযোগিতায় এ সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন শামসুল হক চৌধুরী এমপি, চেম্বার সভাপতি মাহবুুবুল আলম। প্রতিনিধিত্বশীল অনেক ব্যবসায়ী নেতা ও শিল্পোদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এতে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান ব্যবসায়ীমহলের চট্টগ্রাম বিভাগের উন্নয়ন ভাবনা, অনুভূতি, চাহিদা জাতীয় পর্যায়ের চিন্তা-চেতনায় প্রভাব রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, উন্নয়ন শুধু প্রবৃদ্ধিই বৃদ্ধি করে না, পরিবর্তনও সাধন করে থাকে। আজ বাংলাদেশের সর্বস্তরে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। ড. মসিউর রহমান কৃষির উন্নয়নের পাশাপাশি শিল্প গড়ে না উঠলে দেশের কাক্সিক্ষত সমৃদ্ধি সম্ভব নয়। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ মংলা ও পায়রা বন্দরকে অধিকতর কার্যকর ও গতিশীল করা এবং শিক্ষা, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান প্রসার, ব্যাংক ঋণের সুদের হার হ্রাস নিশ্চিতকরণ, কানেক্টিভিটি, শেয়ার বাজার, কাস্টমসের সক্ষমতা ও রাজস্ব কর ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক টিপু মুনশি এমপি বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে বন্দর, পর্যটন এবং মৎস্য খাতের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্র থেকে মাত্র ৩০ শতাংশ মৎস্য আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে। শিপব্রেকিং এবং তৈরিপোশাক শিল্প খাতেও এ অঞ্চলে সম্ভাবনা প্রচুর। বর্তমানে চীন থেকে অনেক কার্যাদেশ বাংলাদেশে আসছে। তিনি মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সেল গঠন এবং আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে লিড টাইম হ্রাস করার ওপর তাগিদ দেন।
চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম মিরসরাই ও আনোয়ারায় ইকোনমিক জোনের কাজ দ্রুত শেষ করে দেশী-বিদেশী প্রকৃত বিনিয়োগকারীদের শিল্প স্থাপনে সহায়তার আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে প্রায় দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি আগামী ৫০ বছরের চাহিদা পূরণে বে-টার্মিনাল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন, বন্দরের জন্য প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্টস সংগ্রহ এবং বন্দরে প্রবেশ ও বহির্গমনে অন্তত ৫টি করে গেইট চালুর তাগিদ দেন। এছাড়া আইসিডি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৮ লেন, এক্সপ্রেস ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, বুলেট ট্রেন চালু করা, তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু রেলসহ নির্মাণ, নিরবচ্ছিন্ন ও গুণগত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং চট্টগ্রামকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানান। চেম্বার সভাপতি চট্টগ্রামে ৫টি ব্যাংকের হেডঅফিস স্থাপন, বিএসটিআইর সক্ষমতা ও জনবল বৃদ্ধি, বন্দরে প্রয়োজনীয় স্ক্যানার স্থাপন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে বিমান যোগাযোগ বৃদ্ধি, কোলকাতা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বিমান যোগাযোগ স্থাপন, চট্টগ্রাম-পার্বত্য চট্টগ্রাম মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ, কর্ণফুলী নদীতে ড্রেজিং এবং হালদাকে অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় ‘জাতীয় নদী’ ঘোষণার আহ্বান জানান।
সেমিনারে আলোচকগণ প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামের জন্য নতুন নতুন টার্মিনাল নির্মাণ, জেটি-বার্থ, ইয়ার্ড স্থাপন, ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জামসহ আধুনিক যুগোপযোগী অবকাঠামো সুবিধা প্রসার, বন্দরনগরী ও দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) এবং দেশী বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের পরিবেশ, অবকাঠামো নিশ্চিত করা ইত্যাদি বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন চিটাগাং চেম্বারের সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, পরিচালক এ কে এম আকতার হোসেন ও ছৈয়দ ছগীর আহমদ, চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ ছালাম, সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, এস এম আবু তৈয়ব ও ডা. মঈনুল ইসলাম মাহমুদ, বিকেএমইএর সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান, উইম্যান চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, রিহ্যাব নেতা আব্দুল কৈয়ূম চৌধুরী, রাঙ্গামাটি চেম্বারের সভাপতি মোঃ বেলায়েত হোসেন ভূঁইয়া, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুর রহমান, কক্সবাজার চেম্বারের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী, ড. কানিজ আকলিমা সুলতানা, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, মোহাম্মদ নাসির, শামীমা লুবনা হারুন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্টির সহ- সভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী, ওসমান গণি চৌধুরী, মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
শামসুল হক চৌধুরী এমপি তিনি কর্ণফুলী নদীর দু’পাশে শিল্প কারখানা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ কালুরঘাট ব্রিজ যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে অবিলম্বে যুগোপযোগী সংস্কার এবং আনোয়ারায় অবস্থিত কোরিয়ান ইপিজেডে এলএনজি সংযোগ প্রদানের আহ্বান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।