Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মুহিতের ‘কার্বন ট্যাক্স’

বছরে চার কোটি ২০ লাখ ডলার বোনাস আসে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বাংলাদেশে কার্বন ট্যাক্স আরোপের চিন্তা করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের ওয়েস্টিন হোটেলে বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফের সম্মেলনের চতুর্থ দিন গত শনিবার ‘ক্লাইমেট ফাইন্যান্স’ বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেন মন্ত্রী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুহিত বলেন, বৈঠকে কার্বন ট্যাক্স নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ এখনও কার্বন ট্যাক্স আরোপ করেনি। তবে কার্বন বোনাস পায় বাংলাদেশ। বছরে প্রায় চার কোটি ২০ লাখ ডলার বোনাস হিসেবে আসে। পরিবেশবান্ধব শিল্প-প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এই বোনাস পায় বলে জানান তিনি। কার্বন কর বা কার্বন ট্যাক্স হল জ্বালানি ব্যবহারের ফলে নির্গত কার্বনের উপর ধার্যকৃত কর বা ট্যাক্স। কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদনের জন্য তথা পরিবেশ দূষিত করার জন্য জ্বালানি ব্যবহারকারীকে যে ট্যাক্স দিতে হয় প্রথাগতভাবে তাই কার্বন ট্যাক্স হিসেবে গণ্য কর হয়। পেট্রোল, ডিজেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাসসহ প্রায় সকল জীবাশ্ম জ্বালানিতেই কার্বন বিদ্যমান এবং তা পুড়িয়ে শক্তি উৎপাদন করলে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়।
কার্বনডাই অক্সাইড এবং কার্বন মনো অক্সাইড নির্গত হয়ে পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়লে তা পৃথিবীর তাপকে ধরে রাখে যার ফলে পৃথিবীত তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে পৃথিবীর নিম্নাংশ প্লাবিত করে দিতে পারে। একে গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া বলে।
যেহেতু কার্বনের নিঃসরণই এই প্রতিক্রিয়ার প্রধান কারণ, তাই কার্বনসম্পন্ন জ্বালানি ব্যবহারের উপর অনেক উন্নত দেশে কর আরোপ করা হয়। বালিতে আসার আগে কার্বন ট্যাক্স কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে দেশের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাছে পরামর্শ চেয়েছেন জানিয়ে মুহিত বলেন, প্রস্তাব পেলে পর্যালোচনা করে দেখা হবে। দেশে ফিরে এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করবো।
আর বাংলাদেশ থেকে ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন (সিএফসি) দূর হয়েছে। আমাদের দেশে রেফ্রিজারেটর কিংবা অন্যান্য পণ্যে এখন আর সিএফসি থাকে না। সম্মেলন উপলক্ষে বিভিন্ন দেশ থেকে অসা অর্থমন্ত্রীরা বৈঠকে অংশ নেন। তবে সেখানে কয়েকবার চেষ্টা করেও নিজের বক্তব্য রাখার সুযোগ পাননি তিনি।
পরে ক্ষুব্ধ মুহিত সাংবাদিকদের বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিশ্বনেতা। অন্য কোন উন্নয়নশীল বা উন্নত দেশের এই অভিজ্ঞতা নেই। বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলা করে যাচ্ছে। অথচ আমাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হলো না। এখানে মূলত দাতারা যেসব দেশে কাজ করছে সেসব দেশকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
এছাড়া আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ঋণ ঝুঁকি নিয়ে এক সেমিনারে যোগ দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মুহিত বলেন, অতিরিক্ত ঋণের কারণে ৩০টি দেশ ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের অবস্থা খুবই ভালো। আমাদের ঋণ জিডিপির অনুপাত মাত্র ৩০ শতাংশ। বাংলাদেশ বিদেশ থেকে সহজ শর্তে ঋণ নেয়। কঠিন শর্তের ঋণ যা নেওয়া হয়, তা দেশের ভেতর থেকেই নেওয়া হয়। পরে জাপান ব্যংক ফর ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশনের (জেবি আইসি) ডেপুটি গভর্নর নোবুমিটসু হেয়াসির সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ব্যাংকটি আমাদের পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার উন্নয়নে ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। এছাড়া সরকরি-বেসরকারি অংশিদারিত্ব (পিপিপি) প্রকল্পে বিনিয়োগের ব্যাপারেও আগ্রহ দেখিয়েছে। এছাড়া আইএমএফের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন ‘সুযোগ’ বয়ে নিয়ে আসতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল এ দুই সংস্থার সম্মেলন রোববার শেষ হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কার্বন ট্যাক্স
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ