Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গণপূর্তের অধিদপ্তরের ২৩ প্রকল্পের ৯ হাজার ৭০২টি বহুতল ভবনের কাজ চলছে

মন্ত্রণালয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সারাদেশে ২৩টি প্রকল্পের আওতায় ৯ হাজার ৭০২টি বহুতল ভবন নির্মানের কাজ চলছে তা দ্রুত শেষ করতে চায় গতপূর্ত অধিদপ্তর। ইতোমধ্যে আধুনিক এবং টেকশই নির্মানের মাধ্যমে ১ হাজার ১৫২ টি বহুতল ভবনে বিদ্যুত, গ্যাসসহ অন্যান সংযোগ শেষ করার পর সেগুলো সংশ্লিস্ট দপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এছাড়া রুপপুর পারমানবিক প্রকল্পের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের ৩টি ২০ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আরো ৫টি ২০ তলা ভবনের কাজ শেষ হচ্ছে। এসব ভবনের গুণগত নির্মাণে গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপর সন্তোষ প্রকাশ করেছে সরকার।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীসহ সকল কর্মকর্তা সঠিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং গনপূর্ত মন্ত্রনালয়ের দিক দির্দেশনার কারণে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে গণপূর্ত। গণপূর্ত বর্তমানে যেভাবে কাজ করছে এভাবে কাজ করতে থাকলে উন্নয়ন চিত্র আরো এগিয়ে যাবে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড দ্রুত শেষ হবে। আমরা ১ হাজার ১৫২ টি বহুতল ভবনের কাজ শেষ করেছি। এর সুফল জনগন পাবে।
গতপূর্ত অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গণপূর্ত অধিদপ্তর সারাদেশে সরকারী অফিস, কর্মকর্তা কর্মচারীদের আবাসস্থলের জন্য বহুতল ভবন নির্মানে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে। গণপূর্ত অধিদপ্তর বঙ্গবভন, জাতীয় সংসদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট, সচিবালয়সহ জেলা পর্যায়ে সরকারী ভবনের রক্ষানাবেক্ষনে সংস্কারের পাশাপাশি নতুন নতুন ভবন নির্মানে প্রকল্প গ্রহণ করে। এরই অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারের সময়ে ব্যাপক প্রকল্পের আওতায় বহুতল ভবন নির্মাণে কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমান সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে একটি রয়েছে পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ৩টি ২০ তলা ভবন নির্মানের কাজ শেষ করেছে গনপূর্ত। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আরো ৫টি ২০তলা ভবনের কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার ব্যাপারে আশাবাদি সংস্থাটি। নির্ধারিত সময়ের ১বছর পূর্বে ৩টি ২০ তলা ভবনের কাজ শেষ করে বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান্য সংযোগসহ ভবনগুলো ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরকে বুঝিয়ে দিয়েছে গনপূর্ত। এ প্রকল্পের আরো ১৯টি ভবনের নির্মান কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গতপূর্ত অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকায় সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে মাত্র ৮ শতাংশ আবাসন সুবিধা পেতেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য ৪০ শতাংশ আবাসন সুবিধা গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৪০ শতাংশ আবাসন সুবিধা বাস্তবায়নে গৃহয়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে ২৩টি প্রকল্প হাতে নেয় গণপূর্ত অধিদপ্তর। ২৩টি প্রকল্পের আওতায় ৯ হাজার ৭০২ টি বহুতল ভবন নির্মানের কার্যক্রম শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। নির্মান কাজ শুরুর পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ১ হাজার ১৫২ টি বহুতল ভবন নির্মাণ শেষ করেছে গনপূর্ত। ইতোমধ্যে আধুনিক এবং টেকশই নির্মানের মাধ্যমে বহুতল ভবনে বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান সংযোগ শেষ করার পর সেগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণপূর্ত ইতোমধ্যে যেসব ভবন নির্মান শেষ করে বুঝিয়ে দিয়েছে এর মধ্যে রয়েছে বিচারপতিদের জন্য একটি ২০ তলা ভবনের ৭৬টি ফ্লাট, জাতীয় সংসদ ভবনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য ৪৪৮টি ফ্লাট, আজিমপুর এবং মতিঝিলে ১০টি ২০ তলা ভবন। আজিমপুর ও মতিজিলে ১০টি ২০তলা ভবনে ৯৮৮টি ফ্লাট রয়েছে। ইতোমধ্যে এসব ভবনের নির্মান কাজ শেষ করার পর প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনও শেষ হয়েছে।
চলতি বছরের নভেম্বর মাসের মধ্যে গ্রেড ১ পদমর্যাদার সচিবদের জন্য ৩টি ২০ তলা ভবনের কাজ শেষ করা হবে। ওই ভবনের কাজ শেষ করার সময় ছিলো আরো ৮ মাস।কিন্তু গণপূর্তের প্রকৌশলীদের দৃড়তায় নির্ধারিত সময়ের আগেই গ্রেড ১ পদ মর্যাদার সচিবদের জন্য ৩ টি ভবনের কাজ দ্রুত শেষ করা সম্ভব হয়েছে।রাজধানীর মিরপুরে ৩ টি প্রকল্পের আওতায় ১৯৬০ টি ফ্লাট নির্মানের কাজ চলছে। চলতি অর্থ বছরে এসব কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া রাজধানীর খিলগাও, আজিমপুর, মতিঝিল, গুলশান, তেজগাও, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডিতে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ফ্লাট নির্মান করছে সরকার। এসব ফ্লাট দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করতে এবং গুণগত মানে নির্মান কাজ করতে গণপূর্তকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
গণপূর্তের কর্মকর্তারা বলেন, শুধু বহুতল ভবন/ফ্লাট নির্মানে প্রকল্পই নয় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিটোর ভবন, মহখালীতে এনআইডিডিআর ভবন, সার্কিট হাউজ রোডে তথ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য ভবনের নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক এসব ভবন উদ্বোধন করার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কমপ্লেক্স, ফরেন সার্বিস ট্রেনিং একাডেমী, শ্রম ভবনের নির্মান কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। রাজধানীতে সরকারী বহুতল ভবনের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যেসব ভবনের নির্মান কাজ গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে নেয়া হয়েছে সেগুলো শেষ করার পর্যায়ে রয়েছে।
এ বছর গণপূর্ত অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মাগরায় ২৫০ শয্যা বিষিস্ট হাসপাতাল ভবন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টার, অণকোলরি ভবন, ডাক্তার ডরমেটরি নির্মান করেছে। যা ইতোমধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে নওগা, ভোলা, মাদারীপুর, চুয়াডাঙ্গা, নালফামারী, বাগেরহাট, মুন্সীগঞ্জের ২৫০ শ,য্যা বিশিস্ট হাসপাতাল। কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালও উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব কাজও বাস্তবায়ণ করেছে গণপূর্ত্ , জেলার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্যাট আদালথ ভবন, র্শিপকলা ও পাবলিক লাইব্রেরি ভবন, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ফায়ার স্টেশন, থানা, পুলিশ ও আনসার এর বিভিন্ন অবকাঠামো, উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি ভবনসহ ৩০ টি মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বভন, বহুতল ভবনের নির্মান কাজের বাস্তবায়নে দ্রুত কাজ করে যাচ্ছে



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রকল্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ