দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
প্রশ্ন: নামাজে একাগ্রতায় প্রভূর সাক্ষাৎ মিলে কী?
উত্তর: নামাজ মানুষকে সকল প্রকার মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে,‘নিঃসন্দেহে সালাত অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সূরা আনকাবূত: ৪৫)। নামাজ বান্দাকে শুধু মন্দ কাজ থেকে বিরতই রাখে না, এ সময় বান্দা সহজে আল্লাহ তায়ালার কাছাকাছি পৌছায়। নামাজে বান্দার সাথে প্রভ‚র কথাবার্তা বিনিময় হয়। নামাজের মাধ্যমে বান্দা প্রভ‚র সাথে মেরাজ লাভের সুযোগ পেয়ে থাকে। যা অন্য কোনো আমলের দ্বারা সম্ভব হয় না। নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে একাগ্রতা থাকলে মনের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি বা প্রশান্তি আসে। তাই কোরআনেও নামাজ আদায়ের জন্যে বেশি বেশি তাগিদ দেয়া হয়েছে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই ঐ সকল ঈমানদারগণ সফলকাম হয়েছে, যারা তাদের নামাজে খুশু-খুযুর সাথে আদায় করে।’ (সূরা মুমিনূন:১-২)। অন্যত্র এরশাদ হয়েছে,‘তোমরা সালাতের প্রতি যত্মবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী সালাতের প্রতি এবং বিনীতভাবে দাঁড়াও আল্লাহর উদ্দেশ্যে।’ (সূরা বাকারা: ২৩৮)। ‘যারা নিজেদের সালাতের হেফাজত করে, এরাই আল্লাহর জান্নাতে মর্যাদা সহকারে প্রবেশ করবে।’ (সূরা মা’আরিজ :৩৪-৩৫)। ‘যারা তাদের সালাত সমূহের হিফাজতকারী, মূলত: এরাই হবে জান্নাতুল ফেরদাউসের উত্তরাধিকারী এবং সেখানে তারা স্থায়ী ভাবে থাকবে ।’ (সূরা মুমিনুন: ৯-১১)। ‘তিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি (সালাতের জন্যে) দন্ডায়মান হও । আর (তিনি দেখেন) সেজদাকারী তোমার সঙ্গে উঠাবসা করে।’ (সূরা শুয়ারা: ১১৮-১১৯)।
নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে উদাসীনতা পরিহার করা খুবই জরুরী। নামাজের সময় হলে দুনিয়ার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে একাগ্রতার সাথে মসজিদে যেতে হবে। দুনিয়ার আসক্তি দূরে ঠেলে প্রভ‚র অভিমূখী হবে। তা না হলে নামাজে প্রশান্তি আসবে না। নামাজের গুরুত্ব অনুধাবন করে, নামাজ আদায় করতে হবে। নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে গাফিলতি হলে কিংবা লোক দেখানো হলে সাওয়াবের পরিবর্তে, উল্টো শাস্তি ভোগ করতে হবে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করে, তিনি তাদের ধোকায় ফেলে শাস্তি দেন এবং তারা যখন সালাতে দাঁড়ায়, তখন আলস্য ভাবে দাড়াঁয়, লোক দেখানোর জন্য, তারা আল্লাহকে অল্পই শ্মরন করে।’ (সূরা নিসা: ১৪২)। অন্যত্র এরশাদ হয়েছে,‘অতত্রব দুর্ভোগ সেইসব সালাত আদায়কারীর যারা নিজেদের সালাত আদায়ে অমনোযোগী।’ (সুরা মাউনের ৪-৫)। ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা কখনো নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের কাছে যেওনা, যতক্ষণ পর্যন্ত না বুঝতে সক্ষম হও ( সালাতে দন্ডায়মান অবস্থায়) যা কিছু তোমরা বলছ।’ (সূরা নিসা: ৪৩)।
নামাজ আদায়কালীন সময়ে কোনো প্রকার তাড়াহুড়া করা যাবে না। সালাত আদায়ের পর কিছুটা সময় বসে তাসবিহ তাহলিল পাঠ করতে হবে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে,‘যখন তোমরা নামাজ শেষ করবে তখন দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে আল্লাহকে শ্মরন করিবে।’ (সূরা নিসা: ১০৩ )। নামাজ শেষে সম্ভব হলে কিছুটা সময় আল্লাহকে তাঁর সুন্দর সুন্দর নাম সমূহ ধরে ডাকতে হবে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে,‘আর আল্লাহর জন্যে রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।’ (সূরা আরাফ:১৮০)।
যে প্রার্থণার প্রতি কোনো প্রকার আন্তরিকতা বা দরদ থাকে না। ঐ আমল ও ইবাদত আল্লাহর নিকট গৃহীত হয় না। নামাজ সর্বশ্রেষ্ট ইবাদত। তাই নামাজ মহব্বতের সাথে আদায় করতে হবে। তা না হলে প্রভ‚র সাক্ষাৎ থেকে বঞ্চিত হতে হবে। নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে আরো মনোযোগী হতে হবে। একাগ্রতার সাথে নামাজ আদায়ের জন্যে আল্লাহ সকলকে তৌফিক দান করুক। আমীন। উত্তর দিচ্ছেন: ফিরোজ আহমদ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।