পুনরায় যমুনা ব্যাংকের এমডি হলেন মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ
যমুনা ব্যাংক লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে আরও ৫ বছরের জন্য পুনরায় নিয়োগ পেয়েছেন মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে পুনঃনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে।
কর্পোরেট ডেস্ক : ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০১৩’ অনুযায়ী শিল্প স্থাপন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০১৪ সালের জন্য পাঁচটি বিভাগে ১২টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেছে। বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য সম্প্রতি ওসমানী মিলনায়তনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘রাষ্ট্রপতি শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০১৪’ তুলে দেন বিজয়ীদের হাতে। এ বছর বৃহৎ শিল্প বিভাগ ও হাইটেক বিভাগে এ পুরস্কার অর্জন করে আব্দুল মোনেম লিমিটেড। বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, পণ্য উৎপাদন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জাতীয় আয় বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতস্বরূপ আব্দুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মোনেম এবং উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম মহিউদ্দীন মোনেমের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি।
‘টাচিং লাইভ্স, বিল্ডিং ক্যাপাবিলিটিস’ ¯েøাগান নিয়ে দেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম সফলভাবে চালিয়ে যাচ্ছে আব্দুল মোনেম লিমিটেড। মূল্যবান সম্পদকে কাজে লাগিয়ে উন্নত পণ্য ও সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি, যা দেশের অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবেশের ওপর ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আব্দুল মোনেম লিঃ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মোনেম তার সুযোগ্য পুত্রদ্বয় মাইনুদ্দিন মোনেম এবং মহিউদ্দিন মোনেমকে সঙ্গে নিয়ে সফলভাবে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। মাইনুদ্দিন মোনেম এবং মহিউদ্দিন মোনেম উভয়ই প্রতিষ্ঠানটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
দেশজুড়ে অত্যন্ত সফলভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে আব্দুল মোনেম লিমিটেড। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে নেতৃত্ব দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৫৭ সালে এএমএল কন্সট্রাকশন দিয়ে যাত্রা শুরু করে আব্দুল মোনেম লিমিটেড। এরপর একে একে ১৯৮২ সালে আইসক্রিম ইউনিট, ১৯৮২ সালে বেভারেজ ইউনিট, ২০০০ সালে ম্যাংগো পাল্প প্রেসেসিং, ২০০৪ সালে ইগলু ফুডস, ড্যানিস বাংলা ইমালসন, সিকিউরিটি ও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, ইগলু ডেইরি প্রোডাক্টস লিমিটেড, ২০০৭ সালে সুগার রিফাইনারি লিমিটেড ও এম এনার্জি লিমিটেড, ২০০৮ সালে নোভাস ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ২০১০ সালে এএম আসফাল্ট অ্যান্ড রেডিমিক্স লিমিটেড, ২০১২ সালে এএম অটো ব্রিকস লিমিটেড, ২০১৪ সালে এএম ব্র্যান অয়েল কোম্পানি এবং ২০১৫ সালে আব্দুল মোনেম ইকোনমিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রæপে পরিণত হয়েছে আব্দুল মোনেম লিমিটেড। এর পাশাপাশি আব্দুল মোনেম লিমিটেড অর্থনৈতিক সেবা, প্রযুক্তি খাতে আউটসোর্সিং, কর্মশক্তি সরকরাহকারী হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রাখছে। গ্রাহকদের জন্য উন্নত পণ্য তৈরিতে ও তাদের সেবাদানে বর্তমানে এএমএল-এ ১০ হাজার দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরলসভাবে কাজ করছে।
দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে নেতৃত্ব দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে এএমএল কন্সট্রাকশন লিমিটেড। এএমএল কন্সট্রাকশন বর্তমানে আব্দুল মোনেম গ্রæপের সবচেয়ে বড় অঙ্গ সংস্থা। শুরু থেকেই সঠিক সময়সীমার মধ্যে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রকল্প হস্তান্তরের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন শিল্পে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্মাণসংক্রান্ত সব যন্ত্রপাতি রয়েছে এএমএল কন্সট্রাকশনের। এএমএল কন্সট্রাকশন গত ৫৬ বছরে বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সঙ্গে মিলে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প সম্পন্ন করেছে।
ইগলু আইসক্রিম ইউনিট প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই সারাদেশের মানুষের মন জয় করে নেয়। ‘এ ওয়ার্ল্ড অব গ্রেট টেস্ট’ ¯েøাগান নিয়ে এখনো ইগলু দেশের সেরা আইসক্রিম ব্র্যান্ড। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ইগলু টানা তৃতীয়বার বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী হয়েছে। গ্রাহকদের চাহিদার ভিত্তিতে ইগলুর রয়েছে একশরও বেশি স্বাদের আইসক্রিম। এএম বেভারেজ ইউনিটের অধীনে এএমএল কোকাকোলা ব্র্যান্ডের কোকাকোলা, ফ্যান্টা ও স্প্রাইট বোতলজাত করে আসছে।
আইসক্রিমের পাশাপাশি দুগ্ধজাত ও খাদ্যপণ্যে বাজারের চাহিদা পূরণে যাত্রা শুরু করে ইগলু ডেইরি ও ইগলু ফুডস লিমিটেড। দৈনিক ৫ হাজার লিটার থেকে শুরু করে বর্তমানে ইগলু ডেইরি লিমিটেড প্রতিদিন ১৪ হাজার লিটার দুগ্ধজাত পণ্য তৈরি করছে। দুগ্ধজাত পণ্যের মধ্যে রয়েছে গুঁড়া দুধ, ইউএইচটি, এফসিএমপি, ঘি ও বাটার। শ্যামপুর ও নারায়ণগঞ্জে প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা ছাড়াও বাঘাবাড়ী ও সিরাজগঞ্জে রয়েছে মিল্ক কালেকশন সেন্টার।
এএমএলের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ইগলু ফুডস লিমিটেড হিমায়িত খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিতরণ করে আসছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাবার ও ¯œ্যাক্সও তৈরি করে এএমএল।
ড্যানিশ বাংলা ইমালশন লিমিটেড (ডিবিইএল) আব্দুল মোনেম লিমিটেড ও ডেনমার্কের ইএনএইচ ইঞ্জিনিয়ারিং এ/এস-এর একটি যৌথ উদ্যোগ। সড়ক ও বিমান ঘাঁটি পথ নির্মাণে স্বয়ংক্রিয় ও অত্যাধুনিক উপায়ে বিটুমিন ইমালসন উৎপাদন করে ডিবিইএল। ডিবিইএল প্রতিবছর ২ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা যোগ করছে দেশের অর্থনীতিতে।
প্রতিবছর দেশে প্রায় ১.২ মিলিয়ন মেট্রিক টন চিনির প্রয়োজন। এ চিনির বেশির ভাগই পরিশোধ করছে আব্দুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেড (এএমএসআরএল)। এএমএসআরএল দেশের একমাত্র সুগার রিফাইনারি যা আইএসও ২২০০০-২০০৫ সনদ পেয়েছে।
মেঘনা নদীর তীরে ১.৭৩ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এএম এনার্জি লিমিটেড। শক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে সক্ষমতা ৬এমডবিøউ। উৎপাদিত ৩.৫ এমডবিøউর মধ্যে ২.৫ এমডবিøউ পাঠানো হয় এএম সুগার রিফাইনারিতে। আর বাকি ১এমডবিøউ শক্তি পাঠানো হয় রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন বোর্ডে। আব্দুল মোনেম লিমিটেডের আরেকটি ব্যবসায়িক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নোভাস ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে পরিবেশবান্ধব ইট তৈরি করতে এএমএলের রয়েছে এএম অটো ব্রিকস লিমিটেড। মেঘনা ঘাট, ছোটো রায়পাড়া, গজারিয়া ও মুন্সীগঞ্জে এএম অটো ব্রিকসের প্ল্যান্ট অবস্থিত।
অতি সম্প্রতি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার চরবাউশিয়ায় ‘আব্দুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল’র উন্নয়ন কাজের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আব্দুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চলটি ২১৬ একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে।
পারিবারিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক ব্যবসায়িক গ্রæপে পরিণত হয়েছে এএমএল। ব্যবসায়িক অংশীদার এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় দেশে শক্ত সমর্থ এবং গতিশীল প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে এএমএল। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে দেশ ও সমাজের জন্য বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।