পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১০ বছরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সারাদেশে ৯০ হাজারের বেশি মামলা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার গত ১০ বছরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৯০ হাজার ৩৪০ টি মামলা দিয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৭ জনকে। উদ্দেশ্য একটাই বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রেখে আবারও ৫ জানুয়ারির মত একটি ভোটারবিহীন, বিরোধীদল বিহীন নির্বাচন করা। গতকাল (শনিবার) বেলা ১১ টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলার পাহাড় গড়ে তুলছে। এসব গায়েবি মামলা জনগণের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করছে, আশঙ্কা সৃষ্টি করছে এই অবৈধ সরকার আবারও ৫ জানুয়ারির মতো একটি ভোটারবিহীন, বিরোধী দলবিহীন নির্বাচনের কূটকৌশল অবলম্বন করছে।
গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার তথ্য তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পর থেকে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৪ হাজার ১৩৮টি মামলা দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৮৬ হাজার ৬৯২ জনের, অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫৭ জনকে। আর গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ হাজার ৬৮৪ জনকে। গত দশ বছরে মামলার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৯০ হাজার ৩৪০ টি মামলা দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৭ জনকে। আর এই সময়ে জেলে নেয়া হয়েছে ৭৫ হাজার ৯২৫ জনকে। এই সরকারের দুই মেয়াদে নিহত হয়েছেন ১৫শ ১২ জন নেতাকর্মীকে। যার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা ৭৮২ জন। গুম করা হয়েছে ১২শ ৪ জনকে। এদের মধ্যে ৭৮১ জনকে পরবর্তীতে গ্রেফতার দেখানো হয়। কিন্তু ৪২৩ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার প্রধানসহ সরকারের মন্ত্রীরা দেশে-বিদেশে বক্তব্য দেয়ার সময় বলেন দেশে গণতন্ত্র রয়েছে, নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে, সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে। কিন্তু বিরোধী দলের বিরুদ্ধে হাজার হাজার গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে। এসব মামলার তথ্যে প্রমাণিত হয় সরকার সম্ভাব্য সব রকম প্রচেষ্টা করছে যেন বিএনপি আগামী নির্বাচনে না আসে, বিএনপি যেন নির্বাচনে অংশ না নেয়। এজন্য তারা বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী করেছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা এবং সিনিয়র নেতাদের মামলাগুলো দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে তাদেরকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার একটা প্রক্রিয়া তারা (সরকার) বের করতে পারে। এরকম পরিস্থিতি নির্বাচনের জন্য ‘অনুকূল নয়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনে যেন বিরোধী দল অংশগ্রহণ করতে না পারে, তার জন্য সবরকম অবস্থা তারা তৈরি করে রাখছে।
তিনি বলেন, জনগণ নির্বাচন চায়, তারা পরিবর্তন চায়, ভোট দিতে চায়। কিন্তু নির্বাচনে যাতে বিরোধী দল অংশ নিতে না পারে সরকার সে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি সরকারকে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে, বিএনপির ৭ দফা দাবি মেনে নিতে হবে।
চলমান রাজনৈতিক সংকট আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার, মৌলিক অধিকার হরণ করে কখনোই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। এজন্য আমরা বারবারই বলছি আসুন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করি। কিন্তু এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় নি বলেই তারা জনগণকে কিছু মনে করে না, জনগণকে তাদের প্রয়োজন নেই, জনগণের কথা চিন্তা করে না। শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়
মিরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আবার আগের নাটক শুরু হয়ে গেছে। মিরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানা। এই আলামত কিসের? কোন দিকে কোন উদ্দেশ্যে জাতিকে নিয়ে যেতে চায়, এটা আমাদের কাছে বড় আশঙ্কা ও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নির্বাচন থেকে বিএনপিকে দ‚রে রাখার জন্য এইভাবে গায়েবি মামলা দিচ্ছে। উদ্দেশ্যে আবার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একটা একতরফা নির্বাচন করা।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, এভাবে কোনো ভিত্তি ছাড়া মামলা দায়ের করে সরকার দেশে ন্যায়বিচার ও সুবিচার বলতে যা বোঝায়, তা একেবারেই নিঃশেষ করে দিয়েছে। সরকারের উদ্দেশ্য হলো নির্বাচনের আগে ওয়ার্ড লেভেল পর্যন্ত যারা আমাদের নির্বাচন করবে, তাদের সকলকে কারাগারে বন্দি করে রাখা। তারা চাচ্ছেন ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।