পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
দেশের কোথায় কী উন্নয়ন হয়েছে তা জানা যাচ্ছে এক জায়গায় বসেই। আর এই সুযোগ কাজে লাগাতে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে, জাতীয় উন্নয়ন মেলার শেষ দিনে ঢল নামে দর্শনার্থীর। এছাড়া, জরুরি পাসপোর্ট নবায়নসহ নানা সেবাও নিয়েছেন তারা।
জাতীয় উন্নয়ন মেলার শেষ দিনে দেখা মেলে, দর্শণার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। বিগত বছরে দেশে যে উন্নয়ন ও সেবার মান বেড়েছে, সে সম্পর্কে নানা তথ্যসমৃদ্ধ স্টলগুলো ঘুরে দেখেন তারা। সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল, পাসপোর্ট ও জনশক্তি রপ্তানি অধিদপ্তরে। বড়দের পাশাপাশি স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীরাও হাজির হন এই আয়োজনে। উন্নয়ন মেলা প্রাঙ্গণে দেশকে এগিয়ে নিতে তরুণ প্রজন্মের কাছে তথ্যপ্রযুক্তির নতুন নতুন দিকগুলোও তুলে ধরছে সরকার।
গতকাল শনিবার তিনদিন ব্যাপী এ মেলার শেষ দিন ঘুরে দেখা যায়, সরকারি বিভিন্ন দফতর তাদের সেবা দিচ্ছে। বিআরটিএ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন প্রদান, ড্রাইভিং লাইলসেন্স নবায়ন সেবা, পাসপোর্ট অধিদফতর স্টলে পাসপোর্ট সংক্রান্ত সেবা। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন ব্যুরো স্টলে বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে একদিনেই ফিঙ্গার প্রিন্ট। জেলা নির্বাচন কমিশন অফিস স্টলে ভোটার আইডির নম্বরসহ নানাবিধ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিমান বাহিনীর স্টলে দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষার সুযোগ।
যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা মনিররুজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, মেলায় এসে ভালো লাগছে। এখানে সব ধরণের সেবা পাওয়া যাচ্ছে। নতুন বাইক ক্রয়ের ইচ্ছা আছে তাই বিআরটির স্টল থেকে লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স সম্পর্কে জেনে নিয়েছে। এছাড়া কিভাবে স্মার্ট কার্ড পাবো সেই তথ্যও জেনে নিয়েছি। মহাখালীর বাসিন্দা মাছুম কবিরাজ বলেন, গত কয়েক বছরের উন্নয়ন সম্পর্কেও নতুন অনেক তথ্য জানতে পেরেছি।
এদিকে মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ডিজিটাল শব্দটাই দেশের মানুষ জানতো না। ডিজিটালের কথা মানুষ জেনেছে শেখ হাসিনার উন্নয়ন দর্শনের কারনে। অথচ ১০ বছরের ব্যবধানে এখন ইউনিয়ন পরিষদে ডিজিটাল সেবা পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন দর্শনের কারণে ৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ গড়ার দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
মেলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, জনগণকে অভিহিত করা কী কী উন্নয়ন হয়েছে। এ উন্নয়নকে কীভাবে এগিয়ে নেয়া যায়। জনগণকে সম্পৃক্ত করা যায়। এ মেলা বৈষম্য কমিয়ে উন্নত দেশ গড়ায় সোনার বাংলা গড়তে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। মতিয়া চৌধুরী বলেন, স্থায়ী দারিদ্র্য মুক্তির দর্শন নিয়ে এসেছে এ সরকার। নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি, অনলাইন সেবা কার্যক্রম দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে।
মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বলেন, মেলা থেকে বোঝা যায়-উন্নয়ন নিয়ে মানুষের কত আগ্রহ। সবাই এসে উন্নয়ন দেখছে। আরও স্বপ্ন দেখছে। মেলায় তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর চেষ্টা ছিল। সেটা সফল হয়েছে বলে জানান তিনি। সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকারের উন্নয়নের চিত্র এখানে তুলে ধরা হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, দুটি স্টলে ব্যাপক ভিড় দেখলাম। একটি পাসপোর্ট, অন্যটি বিআরটিএ। তার মানে এখানে যেভাবে সেবা দেয়া হচ্ছে অফিসগুলোতে সে সেবা দেয়া হয় না। দিলে এত ভিড় হত না। তিনি বলেন, মেলায় যেভাবে সেবা দিচ্ছি বাস্তবে অফিসগুলোতে সেবা দিতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কে এম আলী আজমের সভাপতিত্বে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম।
এবার সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রদর্শন করতে মেলায় মোট ৩৩০টি স্টল অংশ নেয়। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০টি, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ১৯টি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৬টি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১৬টি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১০টি এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ৯টি স্টল রয়েছে।
উল্লেখ্য, জাতীয় উন্নয়ন মেলার এবারের আয়োজন চতুর্থ। দেশের ৫শ’ স্থানে আয়োজন করা হয় এই মেলার। শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় শেষ হয় এবারের আয়োজন। এবার মেলার স্লোগান ছিল ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় অদম্য বাংলাদেশ’। এর আগে গত বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশে উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।