Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সরকার দ্রুত মামলা শেষ করার ষড়যন্ত্র করছে

সমাবেশে মির্জা ফখরুল

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার বিরোধীদলের শীর্ষ নেতাদের মামলা নির্বাচনের আগেই দ্রুততার সাথে শেষ করার ষড়যন্ত্র করছে। দেশে এখন কোনো আইনের শাসন নেই। ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) মামলায় দেখছেন যে, কী ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাহেব মামলাগুলোও একই ঘটনা ঘটছে। আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে আগে যেসব মামলা ছিলো সেই মামলাগুলো এখন দ্রুততার সাথে শেষ করার জন্য সাপ্তাহে তিনদিন তারিখ দিচ্ছে ।
গতকাল সুপ্রীম কোর্টের শহীদ একেএম সিদ্দিক হলে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিদের এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রতিবাদে এই পেশাজীবী সমাবেশ হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, দ্রুততার সঙ্গে নির্বাচনের পূর্বে তারা সব কিছু শেষ করতে চায়। বিএনপিকে এতো ভয় কেনো? জনগনকে এতো ভয় কেনো? কেনো একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে চান না? কারণ আপনি জেনে গেছেন যে, জনপ্রিয়তা এখন আপনার শূন্যের কোঠায় এসে গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের প্রতি ইংগিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগে এখন দেউলিয়া হয়ে গেছে। ভ্যানক্রাফট, তাদের কোনো রাজনীতি নেই। ভাবতেই অবাক লাগে আওয়ামী লীগের মতো দীর্ঘকাল রাজনৈতিক সংগ্রাম করা দল তারা আজকে সম্পূর্ণভাবে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শুধুমাত্র রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর নির্ভর করে দেশ চালাচ্ছে। আবার গর্ব করে বলেন বিশ্বনেতারা সব আমাকে চাচ্ছে, আমাদেরকে চাচ্ছে। যে দেশের জনগন চায় না, বিশ্বনেতারা চাইলে কী ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি যে কথাটা বলতে চাই, জনগনের আশ-আকাংখা বাদ দিয়ে তাকে এড়িয়ে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। এখানে অবশ্যই জনগন যা চায় সেভাবে কাজ করতে হবে। আমি বলব, অনেক হয়েছে। এনাফ ইজ এনাফ। এখন দয়া করে মাথার মধ্যে একটু শুভ বুদ্ধি নিয়ে আসুন, নিয়ে এসে একটা সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন এবং জনগনের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দিন।
মির্জা ফখরুল বলে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। উনাকে মুক্তি না দিলে আপনাদের মুক্তি নাই, আপনারাও মুক্তি পাবেন না। উনিই শেষ ভরসা যাকে মুক্তি করলে আপনারা মুক্ত থাকতে পারবেন। একথাটা আমি সিরিয়াসলি বলছি- উনিই শেষ ভরসা, উনিই গণতন্ত্রের প্রতীক। তিনিই পারবেন একটা গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে। তাকে বের করে নিয়ে আসুন। অন্যথা এই দেশে যে সংকট তৈরি হবে সেই সংকট মোকাবিলা করতে আপনারা ব্যর্থ হবেন।
জাতীয় ঐক্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই ঐক্যের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটানো যাবে। তিনি বলেন, আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি এই অবস্থার অবসান করতে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলে গেছেন যে, আমাদেরকে একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে, জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে এই যে ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট এক নায়কতান্ত্রিক একটা দল, যে দল একদলীয় শাসন নিয়ে আসতে চায় তাদেরকে সরাতে হবে। তাদেরকে না সরাতে পারলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যেটা পর্যন্ত বিপন্ন হয়ে যাবে। সেই লক্ষ্যে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই পেশাজীবী বলুন, রাজনীতিবিদ বলুন সবাই আসুন নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমরা আন্দোলন শুরু করি।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ২১ আগস্টের মামলা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে, আবদুস সালাম পিন্টুকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আমাদের নেতাদেরকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। দেখেন এসব করে কী করা হয়েছে ? মামলার সুষ্ঠু তদন্তটা করা হয়নি। মূল যে বিষয়টা- অপরাধীদের খুঁজে বের করা সেটা তারা বের করেনি। তারা কিন্তু গোপনে আড়ালে থেকেই গেছে।
সংগঠনের সহসভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট জয়নুল আবেদিন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক আবদুল মান্নান মিয়া, অধ্যাপক মোস্তাক রহিম স্বপন, অধ্যাপক এসএম রফিকুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এগ্রিকালরিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান, ছড়াকার আবু ছালেহ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ