Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শীতের আগাম সবজি

ঢাকা-চট্টগ্রাম কাঁচাবাজারের চালচিত্র

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : রাজধানীর বাজারগুলোতে আসতে শুরু করেছে শীতের আগাম সবজি। তবে এসব সবজির দাম বেশি। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে চড়া পেঁয়াজ ও কয়েক ধরনের চালের দামও কমতির দিকে। গতকাল শুক্রবার সপ্তাহের ব্যবধানে সব থেকে বেশি বেড়েছে শিমের দাম। গত সপ্তাহে ৬০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিমের দাম বেড়ে ১০০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে সপ্তাহের ব্যবধানে শিমের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অবশ্য গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে শিমের কেজি এক শ’ টাকার উপরে ছিল। শিমের পাশাপাশি নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে টমোটো, ফুলকপি, শসা ও গাজর। বাজার ভেদে পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে পাকা টমেটোর দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকার মতো। টমেটোর মতো গাজরের দামও কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। বাজার ও মানভেদে গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি।
একমাসের বেশি সময় ধরে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে শীতের আগাম সবজি ফুলকপি। তবে এ সবজিটির দাম এবার শুরু থেকেই অনেকটাই নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। এ পরিস্থিতে সবজিটির দাম আরও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৫০-৬০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপির দাম বেড়ে ৬০-৭০ টাকা হয়েছে।
বাজারে নতুন আসা শীতের আগাম আরেক সবজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৪০ টাকা। শসার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। দীর্ঘদিন স্থিতিশীল থাকা বেগুন, উস্তা, বরবটি, কাঁকরোল, করলা, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, ঢেঁড়স, লাউও দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
বাজার ভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া উস্তার দাম বেড়ে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বরবটির দাম বেড়ে ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে এ সবজিটির কেজি ছিল ৫০-৬০ টাকা। কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, পটল, ঢেঁড়স, ধুনদল ও ঝিঙার দাম গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৪০ টাকা কেজি। তবে এখন সব সবজির কেজি ৫০ টাকা ছাড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউর দাম বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০ টাকা। তবে কিছুটা কমেছে পেঁপের দাম। আগের সপ্তাহে ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া এই সবজিটির দাম কমে ১৫-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শান্তিনগরের ব্যবসায়ী মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত সপ্তাহে এক কেজি শিম বিক্রি করেছি ৮০ টাকা। এখন সেই শিম ১২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। শুধু শিম নয় বাজারে এখন সব সবজির দাম বেড়েছে। শীতের সবজি বাজারে পুরোপুরি না আসা পর্যন্ত দাম কমার খুব একটা সম্ভাবনা নেই।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী শাহজাহান বলেন, শীতের আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, মুলা বাজারে পাওয়া গেলেও এখনও সেভাবে আসেনি। এ কারণে দাম চড়া। আর টমেটো ও গাজর যা পাওয়া যাচ্ছে তা আমদানি করা। দেশি টমেটো ও গাজর এখনও বাজারে আসেনি, ফলে দামও কমছে না।
এ ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে ৪-৫টা সবজির দাম চড়া থাকলে স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব অন্য সবজিতেও পড়বে। এ কারণেই এখন সব সবজির দাম চড়া। তবে বাজারে সবজির আমদানি (সরবরাহ বাড়া) হলে দাম এমনিই কমে যাবে।
অন্যদিকে কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা রবিউল হক বলেন, ক্রস পেঁয়াজের পাল্লা (পাঁচ কেজি) ১৭০ টাকা, দেশী ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে ক্রস পেঁয়াজ কেজিতে পাঁচ টাকা এবং দেশী পেঁয়াজ ৩ টাকা কমেছে বলে জানান তিনি।
মুদি দোকানি আবদুল জব্বার জানান, দেশী পেঁয়াজ কেজিতে তিন টাকা কমে ৪২ টাকায় নেমেছে। তারা বিক্রি করছেন ৪৮ টাকায়। ক্রস পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ২৮ টাকা।
বাজারে চালের দাম কমার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, গত ১৫ দিনে মিনিকেট চালের দাম বস্তায় (৫০ কেজি) অন্তত দেড়শ টাকা করে কমেছে। অন্যান্য চালের দামও কিছুটা কমেছে। ভালো মানের মিনিকেটের বস্তা ২৪৫০ টাকা, পাজাম ১৯৫০ টাকা, বি আর আটাশ ১৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নিউ বিল্লাল রাইস এজেন্সির স্বত্ত্বাধিকারী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে সব ধরনের চালের দাম কমতে শুরু করেছে, যা অনেক আগেই কমা উচিত ছিল। সরকার ভারত থেকে চাল আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত রেখেছে। একারণেই দেশী সিন্ডিকেটরা দাম কমাতে বাধ্য হয়েছে। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ কিংবা নভেম্বরের শুরুতে আমন মওসুমের নতুন ধান বাজারে আসবে। তখন চালের দাম আরেক ধাপ পড়ে যেতে পারে বলে মনে করেন ওয়াহিদুজ্জামান।
তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে ভালো মানের মিনিকেট চালের বস্তা ছিল ২৬০০ টাকা, বর্তমানে এই চাল বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকায়। একইভাবে বি আর আটাশ চাল বস্তা প্রতি দুই হাজার টাকা থেকে কমে ১৮৫০, গুটি ও পাইরির দাম বস্তায় ৫০ টাকা কমে ১৭২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহেই চালের দাম কমেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সবজি

৪ এপ্রিল, ২০২২
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২৯ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ