পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
পুরনো ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই ও পুনর্ভবা নদীর নাব্য উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য ব্যয় হবে চার হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে এই টাকা যোগান দেওয়া হবে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন।
পরিকল্পনা কমিশনের দেওয়া তথ্য মতে, অভ্যন্তরীণ নৌ পথে চারটি নদীতে সারা বছর পণ্য ও যাত্রীবাহি নৌযান নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে চলাচলের জন্য নাব্য উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় বেসরকারি ড্রেজারের মাধ্যমে চারটি নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হবে দশ কোটি ঘনমিটার। সংরক্ষণ ড্রেজিং করা হবে আট কোটি ঘনমিটার। মাটির ডাইক নির্মাণ করা হবে ৬০ লাখ ঘনমিটার।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদীটি বাহাদুরবাদের দক্ষিণে ব্রহ্মপুত্র হতে উৎপন্ন হয়ে জামালপুর এবং ময়মনসিংহ জেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরব বাজারে মেঘনা নদীতে শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নদীটির ২২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে ১০০ মিটার প্রস্থব্যাপী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ৩ মিটার গভীর করে নৌপথটি ক্লাস- দুই নেভিগেশনাল রুটে উন্নীত করা হবে। অন্যদিকে ধরলা একটি সীমান্ত নদী যা ব্রহ্মপুত্রের উপ-নদী। নদীটি হিমালয়ের দক্ষিণ সিকিম থেকে উৎপত্তি হয়ে লালমনিরহাট জেলা দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে। নদীটি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদীতে গিয়ে পড়েছে। প্রকল্পটির আওতায় ধরলা নদীর সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্যইে ৬০ কিলোমিটারে ৩৮ মিটার প্রস্থব্যাপী ড্রেজিং করা হবে। আরেক নদী দিনাজপুর সেতাবগঞ্জের একটি বিল হতে উৎপন্ন তুলাই নদীটি ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরের বিভিন্ন অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে টাঙ্গন নদীর ভারতীয় অংশে মিলিত হয়েছে। এ নদীর ৭০ কিলোমিটারে ৩৮ মিটার প্রস্থব্যাপী ড্রেজিং এর মাধ্যমে ১ দশমিক ৫ মিটার গভীর করে নৌপথটি ক্লাস-৪ নেভিগেশনাল রুটে উন্নীত করা হবে। আর সীমান্ত নদী পুনর্ভবা দিনাজপুর জেলার বিরগগঞ্জ উপজেলার শীবরামপুর ইউনিয়নে উৎপন্ন হয়ে বিরল উপজেলা দিয়ে ভারতে ঢুকে পুনায় নওগা জেলা দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। এই নদীর ৮০ কিলোমিটারে ৩৮ মিটার প্রস্থব্যাপী ড্রেজিং এর মাধ্যমে দুই মিটার গভীর করে নৌ পথটি ক্লাস তিন নেভিগেশনাল রুটে উন্নীত করা হবে।
এছাড়া একনেক সভায় ৩২২ কোটি টাকা ব্যয়ে তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) জন্য একটি কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে টেকসই বন ও জীবিকা সুফল নামে আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সভায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে এক হাজার ৫০২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ঋণ দেবে এক হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। বাকি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে যোগান দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের আওতায় নতুন বনায়ন করা হবে। বন নির্ভর জনগোষ্ঠীকে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করা হবে। দেশের আটটি বিভাগের ২৮টি জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
একনেক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, একনেক সভায় ১৫ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হবে ১৩ হাজার ২১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৮ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৪৪৮ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৪ হাজার ২৯১ কোটি টাকা খরচ করা হবে।
একনেক সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- দুই হাজার ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার বিমান বন্দর উন্নয়ন (১ম পর্যায়) (তৃতীয় সংশোধিত), ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাটহাজারী-ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি-মাটিরাঙ্গা-খাগড়াছড়ি সড়ক উন্নয়ন (চট্টগ্রাম অংশ), ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ভ‚রুঙ্গামারি-সোনাহাট স্থলবন্দর-ভিতরবন্দ-নাগেশ্বরী মহাসড়কের দুধকুমর নদীর উপর সোনাহাট সেনাহাট সেতু নির্মাণ, ১০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ, ২৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প, ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন, ৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচের উন্নয়ন প্রকল্প।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।