Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মির্জা ফখরুলসহ ৫৫জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:২৬ এএম

পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা ও নাশকতার অভিযোগ এনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৫৫জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত রোববার ও গতকাল বিকালে হাতিরঝিল থানায় পুলিশ বাদি হয়ে এ মামলা দুটি করে। মামলা নং ৫০ ও ৩। এ মামলায় গ্রেফতারকৃত সাত আসামিকে এক দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। 

হাতিরঝিল থানার ডিউটি অফিসার মিজানুর রহমান জানান, মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণ সভাপতি হাবিবুন নবী খান সোহেল, যুবদলের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ আরো ৫৫ নেতাকর্মী রয়েছেন।
হাতিরঝিল থানার ওসি আবু মোহাম্মদ ফজলুর রহমান জানান, গত রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা শেষ করে ফেরার পথে বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল। এ সময় সাতজনকে আটক করা হয়। পরে তাদেরসহ আরো ৪০ জনকে আসামি করে পুলিশের কাজে বাধা দেয়া এবং নাশকতার অভিযোগে দুটি মামলা করা হয়েছে।
গত ১ সেপ্টেম্বরও রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশের পর নাশকতার একাধিক মামলা হয়েছে বিভিন্ন থানায়। ঢাকার পাশাপাশি সারাদেশেই কয়েক হাজার মামলার তথ্য দিয়েছে বিএনপি যাতে আসামি করা হয়েছে সাড়ে তিন লাখের বেশি। গত রোববার সমাবেশে বিএনপি যেসব দাবি করেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো নতুন করে মামলা না দেয়া এবং আগের মামলাগুলো স্থগিত রাখা। এর মধ্যে নতুন মামলার খবরে সমালোচনা করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
তিনি বলেন, গত রোববার সমাবেশে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। শতভাগ শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হয়েছে। এখানে মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে যদি এভাবে মামলা হয়, তাহলে সেটা ঘৃণ্য পথ, অপরাজনীতি। সরকার এ থেকে বের হতে না পারলে গণতন্ত্রের ভবিষ্যত অন্ধকার। এভাবে চলতে থাকলে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখা কঠিন হবে।
মামলায় পুলিশ উল্লেখ করেছে, বিএনপি কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে গত রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে। সেখানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সরকারবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।
মামলায় বলা হয়, বিএনপির নেতার এমন বক্তব্যের পর গত রোববার রাত ৮টার দিকে হাতিরঝিল থানার মগবাজার রেলগেট এলাকায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং জামায়াতের ছাত্রশিবিরের ৭০ থেকে ৮০ জন নেতাকর্মী জড়ো হন। তারা রাস্তায় যান চলাচলে বাধা দেন। পুলিশ জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের সড়ক অবরোধ না করতে অনুরোধ করে। কিন্তু পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে তারা পুলিশকেই হত্যার উদ্দ্যেশ্যে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। সেখানে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং একটি বাস ভাঙচুর করেন। প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তারা লাঠি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মারধর শুরু করেন, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। ভাঙচুর করা গাড়িগুলো আত্মরক্ষার্থে দ্রুত চলে যাওয়ায় গাড়ির নম্বর সংগ্রহ করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের সাত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন কুমিল্লা জেলা বিএনপির সহসভাপতি মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া (৪৮), বাড্ডা যুবদলের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন (৪০), গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার শফিউদ্দিন (৪৩), গুলশান ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশেদ বিন সোলায়মান (৪৪), ভালুকা থানা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন (৫৩), বাড্ডার ৪১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি সামছুল হক (৪০) ও লাঙ্গলকোট থানা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব খন্দকার (৩৫)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে গ্রেফতারকৃত সাতজনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) হাজির করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। পরে তাদের সাত দিন রিমান্ড চাওয়া হলে শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ১ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। নাশকতাকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে হাতিরঝিল থানার এএসআই তিন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ