পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরা পড়ছে। বছরের মূল প্রজনন মৌসুমকে সামনে রেখে কিছুটা আগেই ইলিশ সাগর থেকে উপক‚লীয় নদ-নদীতে প্রচুর পরিমাণে উঠে আসছে। আগামী ৭ অক্টোবর থেকে মূল প্রজনন মৌসুম শুরু হচ্ছে। উপক‚লের প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে ইলিশের ডিম ছাড়া হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কায় ওয়াকিবহাল মহল।
মৎস্য অধিদপ্তরসহ গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা পুরো বিষয়টি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এবার ভরা বর্ষায় ইলিশ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে আসেনি। চলতি মাসের ২০ তারিখের পর থেকে সাগর মোহনা হয়ে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও নোয়াখালী-লক্ষীপুরের নদ-নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের অধিক্যে জেলে ও মোকামের মহাজনদের মুখে হাসি ফুটলেও হঠাৎ সাগর থেকে নদ-নদী মোহনাসহ অভ্যন্তরীণ খালে ডিমওয়ালা মা ইলিশ উঠে আসায় উদ্বেগ সৃষ্টি হতে পারে।
গত এক সপ্তাহে ব্যাপকভাবে ইলিশ ধরা পড়ায় মোকামে দর পতনও ঘটেছে। যার প্রভাব খোলা বাজারে ইলিশসহ সব মাছের ওপরই পড়েছে। ইতোমধ্যে এক কেজি ওজনের ইলিশের দর মণপ্রতি ৬০ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজারে নেমেছে। আর ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের মণ এখন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। খোলা বাজারেও হাজার টাকায় এক কেজি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় মিলছে ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ।
পটুয়াখালীর গলাচিপা, আলীপুর-মহীপুর, কলাপাড়া, চর মোন্তাজ, ভোলার চর ফ্যাশন, বরগুনার পাথরঘাটা, পিরোজপুরের পাড়ের হাট ও বরিশালের হিজলা, মেহেদিগঞ্জসহ বরিশাল মহানগরীর পোর্ট রোড মোকামে প্রতিদিনই শত শত ট্রলার বিপুল পরিমাণ ইলিশ নিয়ে নোঙর ফেলছে। এসব মোকাম থেকে ট্রাক বোঝাই করে ইলিশ যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বাজারে। দীর্ঘদিন পরে ইলিশ ধরা পড়ায় দক্ষিণাঞ্চলের মোকামগুলো কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে।
ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত অস্বাভাবিক কম হওয়ায় সাগর থেকে ইলিশ অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে আসেনি। ফলে ইলিশ খরায় অনেকটাই বেকার ছিলেন জেলেসহ মৎস্যজীবীরা। মৎস্য অধিদপ্তরের মতে, দেশের ৪০টি জেলার ১৪৫টি উপজেলার দেড় হাজার ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ জেলে পরিবার ইলিশ আহরণে সম্পৃক্ত। এদের মধ্যে ৩২ ভাগ সার্বক্ষণিক আর ৬৮ ভাগ খন্ডকালীন।
ইলিশ বিপণন, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, জাল, নৌকা ও বরফ তৈরি এবং মেরামত কাজে আরো ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। দেশের ৬টি বিভাগের মধ্যে শুধুমাত্র বরিশাল বিভাগেই প্রায় সোয়া ৩ লাখ জেলে এ পেশায় জড়িত। মৎস্য অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, এদের ৬৫ ভাগ সার্বক্ষণিক ইলিশ আহরণে জড়িত।
আগামী ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশের প্রজনন মৌসুম। উপকূলীয় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার মূল প্রজনন এলাকায় সব ধরনের মাছসহ সারা দেশের নদ-নদীতে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ থাকছে। এ সময় সাগর থেকে মা ইলিশের দল ঝাঁকে-ঝাঁকে ছুটে এসে ভাটি মেঘনার ভোলা ও লক্ষীপুর জেলার মধ্যবর্তী ঢালচর, মনপুরা, মৌলভীর চর, কালির চর ও পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক নদী এলাকার প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ডিম ছাড়ে। ডিম ছাড়ার এলাকা চিহ্নিত করেছেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা। ফলে ওই ৭ হাজার বর্গকিলোমাটার এলাকায় সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের মতে, গত অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৪ লাখ ৯৬ হাজার টন। চলতি অর্থ বছরে পাঁচ লাখ টন অতিক্রম করবে বলে মৎস্য অধিদপ্তরসহ মন্ত্রণালয়ও আশা করছে। কিন্তু সাগর থেকে ঝাঁকে-ঝাঁকে ইলিশ উপকূলীয় নদ-নদী মোহনাসহ অভ্যন্তরীন জলাশয়ে আসায় অবাধে ধরা পড়ছে। এতে করে উপক‚লীয় এলাকায় এবার ইলিশের প্রজননসহ উৎপাদনও ব্যাহত হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।